নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য জরুরিভিত্তিতে হজ ফ্লাইটের সময়সূচি চূড়ান্ত করতে হজযাত্রী পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত তিনটি এয়ারলাইন্স সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবারের (১৩ এপ্রিল) মধ্যে তাদের হজযাত্রী বহনের ফ্লাইট শিডিউল জানতে চাওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান ও জিএসএ ফ্লাইনাসের কাছে এই শিডিউল চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন হিজরি ১৪৪৪ সালের পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ১১ এপ্রিল শেষ হয়েছে। তাই মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য জরুরিভিত্তিতে ফ্লাইট শিডিউল জানা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় জরুরিভিত্তিতে ফ্লাইট শিডিউল আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১৩ এপ্রিল) মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখায় পাঠানোর নির্দেশনক্রমে অনুরোধ করেছেন।
এর আগেও (২৬ মার্চ) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তিনটি এয়ারলাইন্সকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সূচি জানাতে।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে হজ পালন করতে পারবেন।
এবার মূলত ৫০ : ৫০ অনুপাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদিয়া বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী বহন করবে। তবে সৌদিয়া নিজেদের কোটার কিছু হজযাত্রী বহনের জন্য ফ্লাই নাসের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজযাত্রীদের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করবে। আগামী ২১ মে থেকে শুরু হবে চলতি হজ মৌসুমের হজ ফ্লাইট।
জানা গেছে, চলতি বছর হজযাত্রী পরিবহনে বিমানের নিজস্ব চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ এবং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ব্যবহৃত হবে। প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ১১৬টি, ঢাকা-মদিনা রুটে ২০টি, চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে ১৪টি, চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে ৬টি, সিলেট-জেদ্দা ও সিলেট-মদিনা রুটে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
ইতোমধ্যে হজের নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, মোট এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ১০ হাজার ৩৫ এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৯ হাজার ৬৬০ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনও কোটা পূরণে ৭ হাজার ৫০৩ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, হজ ২০২৩ এর নিবন্ধন কার্যক্রম ১১ এপ্রিল শেষ এবং নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ রয়েছে। সেসব হজ এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ৯৭-এর নিচে তারা আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে অবশ্যই লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে সমন্বয় করবে। সমন্বয়ের পরে হজ এজেন্সির বিপরীতে প্রযোজ্য গাইড ও মোনাজ্জেম সংখ্যা যোগ করে চূড়ান্ত কোটা সৌদি আরবে ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রির জন্য প্রেরণ করা হবে। হজ এজেন্সির চূড়ান্ত কোটা সৌদি আরবে পাঠানোর পর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের পিলগ্রিম আইডি (পিআইডি) দেওয়ার জন্য সিস্টেমে উন্মুক্ত করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। এজন্য নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে ২৭ মার্চ এবং ৩০ মার্চ দু’দফা সময় বাড়ে। ওই সময়ের মধ্যে কোটা পূরণ না হলে নিবন্ধনের সময় ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। শেষে আরও এক দফা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।