Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বৈরাচার হাসিনা সরকার এত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি : মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার এত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। বিএনপি গত ১৬ বছর ধরে রাজপথে আন্দোলন করেছে। বহু মানুষ গুম হয়েছে, অনেকের রক্তে রাজপথ লাল হয়েছে। আওয়ামী লীগ মানবাধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছিল বলেই আল্লাহর গজব তাদের ওপর নাজিল করেছে, ছাত্র-জনতাকে নির্দেশ দিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছে। শেখ হাসিনাসহ তাদের নেতাকর্মীরা কত বড় বড় কথা বলেছেন আর এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত ‘দলের আহ্বায়ক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহাতাব-এর স্মরণসভা’য় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সীমালঙ্ঘন করায় আল্লাহ শাস্তি দিয়েছে। দেশ থেকে পালায় না খালেদা জিয়া, বাকিরা পালায়। প্রতিবেশী দেশের মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো। জনতা জেগেছে, বিচারপতিরা পালিয়েছে। ওরা বিচারপতি নয়, দুর্বৃত্ত। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বলা হলেও তারা মূলত বিপ্লবী সরকার। ভারত সরকারকে আহ্বান জানাই খুনি সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাকে যেন দেশে ফেরত পাঠায়। স্বৈরশাসককে বিদায় করায় সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা সচিবালয়ে হামলা করেছে, তারা কেউ আনসার নয়। আওয়ামী লীগ সরকার এদের ট্রেনিং দিয়ে আনসারে নিয়োগ হয়েছে। আনসারের পোশাকে আড়ালে এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যান্ডার। অনেকে দাবিদাওয়া দিয়ে এই সরকারকে অতিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে। তাই প্রতিবিপ্লব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

তিনি বলেন, যেসব অস্ত্র সেনাবাহিনীর কাছে থাকার কথা সেসব অস্ত্র শেখ হাসিনা মানুষকে দমন করার জন্য পুলিশকে দিয়েছে। মিয়ানমারের বাহিনীরা সীমান্তে এসে মানুষ মেরে চলে যায়। কিন্তু আমাদের বিমানবাহিনীরা কোনো জবাব দেয় না। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ছাত্র জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সিটিজেন আর্মি গড়ে তোলা হবে। যাতে কোনো দেশী আগ্রাসন বা বিপ্লব নস্যাৎ করতে না পারে। আমাদের আগ্রাসী কোনো পরিকল্পনা নাই। দেশের মানুষ বিএনপিকে দায়িত্ব দিলে সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করবে।

ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে মেজর হাফিজ বলেন, বলেন, যদি বন্ধুত্ব চান তাহলে স্বৈরাচার খুনি শেখ হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠান। প্রতিবেশী দেশের মদদে তারা এতদিন ক্ষমতায় ছিল, বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।

ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ পালিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেনানিবাসে পাঁচজন বিচারপতিসহ ৬২২ জন কারা আশ্রয় নিয়েছেন। কারা কারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের নাম তালিকা প্রকাশ করুন। অন্যায় করেছে বলেই তারা পালিয়েছে। কারণ সেনানিবাসে কোনো দুর্বৃত্তরা জায়গা হতে পারে না। স্বৈরাচার সরকার উৎখাতে সেনাবাহিনীর সহায়তা ও ভূমিকার জন্য তাদের আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী সরকার বলে জানিয়ে মেজর হাফিজ বলেন, উপদেষ্টাদের অনেকের মধ্যে সেই বিপ্লবী মনোভাব দেখা যায় না। এদের কেউ কেউ শেখ হাসিনা সরকারকে অতীতে সর্মথন দিয়েছেন। কিন্তু এখন আর কোনো তিক্ততা দেখতে চাই না। অন্তর্র্বতী সরকারে তরুণ সমাজ ও আন্দোলন সংগঠিত করতে পেছনে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেয়া হবে জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে অবশ্যই নির্বাচন দিতে হবে। এই সরকারকে সময় দিতে চাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সময় লাগবে। দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্রুত সংলাপে বসুন। গণতন্ত্র উত্তরণে তাদের কাছ থেকে উত্তরণ পরামর্শ নিন। দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। জনগণের প্রতিনিধিদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করার সুযোগ করে দিন।

আয়োজক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিঞা সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ারী প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

স্বৈরাচার হাসিনা সরকার এত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি : মেজর হাফিজ

প্রকাশের সময় : ০৩:৪১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার এত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। বিএনপি গত ১৬ বছর ধরে রাজপথে আন্দোলন করেছে। বহু মানুষ গুম হয়েছে, অনেকের রক্তে রাজপথ লাল হয়েছে। আওয়ামী লীগ মানবাধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছিল বলেই আল্লাহর গজব তাদের ওপর নাজিল করেছে, ছাত্র-জনতাকে নির্দেশ দিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছে। শেখ হাসিনাসহ তাদের নেতাকর্মীরা কত বড় বড় কথা বলেছেন আর এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত ‘দলের আহ্বায়ক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহাতাব-এর স্মরণসভা’য় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সীমালঙ্ঘন করায় আল্লাহ শাস্তি দিয়েছে। দেশ থেকে পালায় না খালেদা জিয়া, বাকিরা পালায়। প্রতিবেশী দেশের মদদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো। জনতা জেগেছে, বিচারপতিরা পালিয়েছে। ওরা বিচারপতি নয়, দুর্বৃত্ত। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বলা হলেও তারা মূলত বিপ্লবী সরকার। ভারত সরকারকে আহ্বান জানাই খুনি সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাকে যেন দেশে ফেরত পাঠায়। স্বৈরশাসককে বিদায় করায় সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা সচিবালয়ে হামলা করেছে, তারা কেউ আনসার নয়। আওয়ামী লীগ সরকার এদের ট্রেনিং দিয়ে আনসারে নিয়োগ হয়েছে। আনসারের পোশাকে আড়ালে এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যান্ডার। অনেকে দাবিদাওয়া দিয়ে এই সরকারকে অতিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে। তাই প্রতিবিপ্লব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

তিনি বলেন, যেসব অস্ত্র সেনাবাহিনীর কাছে থাকার কথা সেসব অস্ত্র শেখ হাসিনা মানুষকে দমন করার জন্য পুলিশকে দিয়েছে। মিয়ানমারের বাহিনীরা সীমান্তে এসে মানুষ মেরে চলে যায়। কিন্তু আমাদের বিমানবাহিনীরা কোনো জবাব দেয় না। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ছাত্র জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সিটিজেন আর্মি গড়ে তোলা হবে। যাতে কোনো দেশী আগ্রাসন বা বিপ্লব নস্যাৎ করতে না পারে। আমাদের আগ্রাসী কোনো পরিকল্পনা নাই। দেশের মানুষ বিএনপিকে দায়িত্ব দিলে সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করবে।

ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে মেজর হাফিজ বলেন, বলেন, যদি বন্ধুত্ব চান তাহলে স্বৈরাচার খুনি শেখ হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠান। প্রতিবেশী দেশের মদদে তারা এতদিন ক্ষমতায় ছিল, বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।

ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ পালিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেনানিবাসে পাঁচজন বিচারপতিসহ ৬২২ জন কারা আশ্রয় নিয়েছেন। কারা কারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের নাম তালিকা প্রকাশ করুন। অন্যায় করেছে বলেই তারা পালিয়েছে। কারণ সেনানিবাসে কোনো দুর্বৃত্তরা জায়গা হতে পারে না। স্বৈরাচার সরকার উৎখাতে সেনাবাহিনীর সহায়তা ও ভূমিকার জন্য তাদের আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ছাত্র-জনতার বিপ্লবী সরকার বলে জানিয়ে মেজর হাফিজ বলেন, উপদেষ্টাদের অনেকের মধ্যে সেই বিপ্লবী মনোভাব দেখা যায় না। এদের কেউ কেউ শেখ হাসিনা সরকারকে অতীতে সর্মথন দিয়েছেন। কিন্তু এখন আর কোনো তিক্ততা দেখতে চাই না। অন্তর্র্বতী সরকারে তরুণ সমাজ ও আন্দোলন সংগঠিত করতে পেছনে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেয়া হবে জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে অবশ্যই নির্বাচন দিতে হবে। এই সরকারকে সময় দিতে চাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সময় লাগবে। দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্রুত সংলাপে বসুন। গণতন্ত্র উত্তরণে তাদের কাছ থেকে উত্তরণ পরামর্শ নিন। দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। জনগণের প্রতিনিধিদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করার সুযোগ করে দিন।

আয়োজক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিঞা সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ারী প্রমুখ।