নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গেছে কিন্তু তাদের লেজ রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা: ৩১ দফা বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কর্মশালায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গিয়েছে কিন্তু তাদের লেজ রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের ভেতরেও এজেন্ট ঢুকে গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের সোচ্চার হতে হবে। কেউ যদি ভাবে প্রতিপক্ষ পালিয়েছে, নির্বাচন সহজ হবে, তা না। নির্বাচন অনেক অনেক কঠিন হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা এ নির্বাচন পার করতে চাই।
তিনি বলেন, আগামীর যে নির্বাচন হবে, আপনাদের আমি ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, কেউ যদি মনে মনে ভেবে থাকেন, এখানে তো প্রধান প্রতিপক্ষ নাই, দুর্বল হয়ে গেছে, নির্বাচন খুব সহজ হবে, নো, নো, নো, নো অ্যান্ড নো। সুতরাং সহকর্মীবৃন্দ নিজেদেরকে সেভাবে প্রস্তুত করুন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থাকে আঘাত করে, বিশ্বাস নষ্ট করে আমার অনুরোধ থাকবে, নেতা হিসেবে প্রত্যেকের প্রতি নির্দেশনা থাকবে শক্ত হাতে সেই লোকগুলোকে দমন করতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে।
এখানে প্রত্যেকেই নেতা হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন, আপনার অধিনস্ত অনেক নেতাকর্মী আছে, প্রত্যেককে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ যেন দলের সুনাম নষ্ট করতে না পারে সে নির্দেশনাও দেন তিনি।
আমরা যদি ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে হবে জনগণের সমর্থনে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তাহলে আমাদের সরকার গঠন করতে হবে জনগণের সমর্থন নিয়ে। আমরা যদি সেটা করতে না পারি আমাদের এতদিনের আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের এইযে সারাদিনের কর্মশালা ব্যর্থ হয়ে যাবে। সেজন্য আমাদের জনগণের সমর্থনের প্রয়োজন, জনগণের আস্থার মধ্যে থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে যেটি সঠিক সেটি করতে হবে। যেটি অনৈতিক তাকে ত্যাগ করতে হবে, শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের মিছিল সমাবেশ ছোট আমাদের আনন্দ দিচ্ছে কিন্তু কোনভাবেই যেন আমাদের টা ছোট না হয় কারণ…অনেকেই বলেছেন বিএনপি এই মুহূর্তে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সমর্থন ইঞ্জয় করছে। অনেক রাজনৈতিক দল, কাজেই এটা অনেকের হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে এমন সতর্ক বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা সেই ৮০ সাল থেকে দেখেছি, কিভাবে দেশের ভেতরে এবং বাহিরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে থাকে নাই। এই দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যখন হবে ধরে নিতে হবে আপনাকে সেই ষড়যন্ত্র শুধু এই দলের বিরুদ্ধে না, সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে আছে আরেকটি ষড়যন্ত্র যেটি হচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অব্যাহত রয়েছে, থেমে যায়নি। স্বৈরাচার, স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গেছে, কিছু ছোট ছোট মাথাও পালিয়ে গেছে কিন্তু লেজ ও শরীরের ছোট ছোট অংশ রয়েই গিয়েছে। তারা কিন্তু ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের ভেতরেও অনেক এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়েছে, এসব বিষয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।