Dhaka সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্য বাজেট আরও একটু বাড়ালে ভালো হতো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত বছরের তুলনায় টাকার অংকে বাজেট কিছুটা বেড়েছে। তবে স্বাস্থ্যসেবার পরিধি অনুযায়ী স্বাস্থ্য বাজেট আরও একটু বাড়ালে ভালো হতো।

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নবনির্মিত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) উদ্বোধন ও হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ায়— এই খাতে বাজেট আরেকটু বেশি হলে উপকার হতো।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, নতুন বাজেটে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবার যে পরিধি বেড়েছে সে অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল।

এবারের বাজেটকে জনবান্ধব বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। দরিদ্র মানুষ কষ্ট পাবে এমন কোনো কিছুর ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। বিভিন্ন ভাতা বাড়ানো হয়েছে। ওষুধের কাঁচামালে ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হয়েছে, ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, চিনির ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হলেও মিষ্টির দাম কমানো হয়েছে। মিষ্টিতে ভ্যাট দেওয়া হয়নি বলে বেশি করে মিষ্টি খেয়ে ডায়াবেটিস বানানো (আক্রান্ত হওয়া) যাবে না। অপরদিকে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে, যাতে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

জাহিদ মালেক আরো বলেন, আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো এতো উন্নত হোক, বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেসব দেখে শিক্ষা নিক। আমরা চাই না কোনো রোগী বিদেশ যাক।

মন্ত্রী বলেন, সাধারণত বেসরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে অনেক উন্নত। আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কারের দিক দিয়েও আরও উন্নত হোক। আমাদের অনেক ভালো হাসপাতাল রয়েছে।

নিটোরে ২০টি আইসিইউ বেড উদ্বোধনের মাধ্যমে হাসপাতালটির সেবার মান আরও উন্নত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এখানে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার রোগী আসে। সারাদেশে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, গত পাঁচ মাসে ৩২ হাজার রোগীকে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। গত বছর তিন লাখ ৬০ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অপারেশন করা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার।

সব ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি দরকার এখানে রয়েছে। তবে এখানে ভালো আইসিইউ ছিল না, এখন হলো। যার মাধ্যমে চিকিৎসার মান আরও বৃদ্ধি পেল।

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ২০০ এ রকম আইসিইউ ছিল। কোভিডের সময় থেকে গত তিন বছরে সারাদেশে এখন এক হাজার ৫০০টি আইসিইউ রয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। করোনার সময় দেখলাম, কোনো হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। এখন ১১০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে।

তিনি বলেন, নিটোরে প্রায় ৩৬০ জন ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার ১০০ জন কর্মরত রয়েছেন। তবে কিছু পদ ফাঁকা আছে। সেই পদগুলো পূরণ করার জন্য সব ধরনের সাহায্য আমরা করে দিব। আমি চাই হাসপাতালটি মডেল হিসেবে কাজ করুক। লোক বেশি হলেই কাজ ভালো হবে তা না, ডেডিকেটেড-কমিটেড লোক থাকতে হবে। যে বিভাগে চিকিৎসক নাই, সেই বিভাগেও চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গনি মোল্লাসহ হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

স্বাস্থ্য বাজেট আরও একটু বাড়ালে ভালো হতো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত বছরের তুলনায় টাকার অংকে বাজেট কিছুটা বেড়েছে। তবে স্বাস্থ্যসেবার পরিধি অনুযায়ী স্বাস্থ্য বাজেট আরও একটু বাড়ালে ভালো হতো।

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নবনির্মিত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) উদ্বোধন ও হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ায়— এই খাতে বাজেট আরেকটু বেশি হলে উপকার হতো।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, নতুন বাজেটে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবার যে পরিধি বেড়েছে সে অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল।

এবারের বাজেটকে জনবান্ধব বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। দরিদ্র মানুষ কষ্ট পাবে এমন কোনো কিছুর ওপর ট্যাক্স বসানো হয়নি। বিভিন্ন ভাতা বাড়ানো হয়েছে। ওষুধের কাঁচামালে ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হয়েছে, ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, চিনির ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হলেও মিষ্টির দাম কমানো হয়েছে। মিষ্টিতে ভ্যাট দেওয়া হয়নি বলে বেশি করে মিষ্টি খেয়ে ডায়াবেটিস বানানো (আক্রান্ত হওয়া) যাবে না। অপরদিকে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে, যাতে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

জাহিদ মালেক আরো বলেন, আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো এতো উন্নত হোক, বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেসব দেখে শিক্ষা নিক। আমরা চাই না কোনো রোগী বিদেশ যাক।

মন্ত্রী বলেন, সাধারণত বেসরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে অনেক উন্নত। আমরা চাই সরকারি হাসপাতালগুলো পরিষ্কারের দিক দিয়েও আরও উন্নত হোক। আমাদের অনেক ভালো হাসপাতাল রয়েছে।

নিটোরে ২০টি আইসিইউ বেড উদ্বোধনের মাধ্যমে হাসপাতালটির সেবার মান আরও উন্নত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এখানে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার রোগী আসে। সারাদেশে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, গত পাঁচ মাসে ৩২ হাজার রোগীকে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। গত বছর তিন লাখ ৬০ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অপারেশন করা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার।

সব ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি দরকার এখানে রয়েছে। তবে এখানে ভালো আইসিইউ ছিল না, এখন হলো। যার মাধ্যমে চিকিৎসার মান আরও বৃদ্ধি পেল।

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ২০০ এ রকম আইসিইউ ছিল। কোভিডের সময় থেকে গত তিন বছরে সারাদেশে এখন এক হাজার ৫০০টি আইসিইউ রয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। করোনার সময় দেখলাম, কোনো হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। এখন ১১০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে।

তিনি বলেন, নিটোরে প্রায় ৩৬০ জন ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার ১০০ জন কর্মরত রয়েছেন। তবে কিছু পদ ফাঁকা আছে। সেই পদগুলো পূরণ করার জন্য সব ধরনের সাহায্য আমরা করে দিব। আমি চাই হাসপাতালটি মডেল হিসেবে কাজ করুক। লোক বেশি হলেই কাজ ভালো হবে তা না, ডেডিকেটেড-কমিটেড লোক থাকতে হবে। যে বিভাগে চিকিৎসক নাই, সেই বিভাগেও চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গনি মোল্লাসহ হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।