নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বাধীনতাবিরোধীরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে দেশের মানুষ তাদের সেই অপচেষ্টা নস্যাৎ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়, তাদের চেষ্টা নস্যাৎ করে দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার শত্রুরা, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে একাত্তর সালে অবস্থান নিয়েছিল; আজকে তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। দেশের মুক্তিকামী মানুষ, স্বাধীনতাকামী মানুষ ও গণতন্ত্রকামী মানুষ— তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়ে অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে ইনশাআল্লাহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের দিনে আমরা মনে করাই যে, স্বাধীনতার শত্রুরা যারা ১৯৭১ সালে দেশের মুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তারা আবার মাথা চাড়া দিতে চাইছে। তবে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ, স্বাধীনতাকামী মানুষ ও গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধে আমরা ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। এজন্যই এই দিনটি আমাদের দলের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আজকের দিনে আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।
মহাসচিব প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন, এই মাজারে আমরা শপথ নিয়েছি, দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছি, তা অব্যাহত রাখব। গণতন্ত্রের জন্য যে লড়াই চলেছে, তা আমরা আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেব।
একই সঙ্গে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও গণতন্ত্র রক্ষার প্রহরী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া চান।
ফখরুল বলেন, দলের নির্বাসিত নেতা তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার দেশে আগমন গণতন্ত্রের লড়াইকে আরও শক্তিশালী করবে, এজন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধ আমরা ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিলাম। এজন্য এদিনটি আমাদের কাছে বিএনপির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা স্বাধীনতার ঘোষকের মাজার জিয়ারত করেছি, শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আমরা আজকে শপথ নিয়েছি, আমরা স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন রাখবার জন্য আমাদের যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রাম সবসময় অব্যাহত থাকবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে ‘অপারেশন সার্চলাইটের’ মধ্য দিয়ে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী, শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। সেই লড়াইয়ে চূড়ান্ত বিজয় আসে ১৬ ডিসেম্বর।
সেদিন ঢাকার রেসকোর্স (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী।
বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, “আমরা শপথ নিয়েছি, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যে সংগ্রাম করছি, সেটা অবশ্যই আমরা অব্যাহত রাখব; একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র অবশ্যই প্রতিষ্ঠা করব।”
তিনি বলেন, “মহান বিজয় দিবসের দিনে আমি আমার দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের পক্ষ থেকে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা শহীদ হয়েছেন—তাদের প্রতি আমরা জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি।
“একই সঙ্গে আমরা আল্লাহ তালার কাছে প্রার্থনা করছি এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য যিনি নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন সেই মহান নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন। আমরা তার রোগমুক্তির জন্য পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া চাইছি।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিনসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ছিলেন।
পরে মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ড্যাব, ছাত্র দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে জিয়ার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















