Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

লাগামছাড়া নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে দাম। দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই। অস্বস্তি বেড়েছে মাছ-মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের বাজারেও। বিভিন্ন সময় নানা পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। নতুন করে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে দেশি রসুন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে এসে যেন দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার এসব বাজারে বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৪০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে শীতকালীন সবজির বাজার চড়া থাকতে দেখা গেছে। ছোট বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ছোট আকারের ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৪০ টাকা, শিম ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাকা টমেটো ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এক কেজি সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি ১৪০০-১৫০০ টাকায়। এছাড়াও হাফ কেজি সাইজের ইলিশ ৮০০-১০০০ টাকা, চারটায় এক কেজি হয় এমন সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। মাছের সাইজ যত বড় হচ্ছে দাম আরও বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।

এছাড়া বাজারে এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মাগুর মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাঙাশ ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে এক বিক্রেতা বলেন, ইলিশের দাম আরও বেশি ছিল, অহন তাও কমছে কয়েকদিন আগে এক কেজি সাইজের ইলিশ বেচছি ১৭০০-১৮০০ টাকায়। সে হিসেবে অহন দুই-তিনশ টাকা কমছে।

শনিবর আখড়া বাজারে বাজার করতে আসা ছাত্তার বেপারী নামে একজন বলেন, মাছের যে দাম তাতে ইলিশ তো দূরের কথা, পাঙ্গাশ তেলাপিয়াও সাধ্যারে বাইরে চলে যাচ্ছে। কয়েক মাস আগে যেই তেলাপিয়া মাছ ১২০-১৩০ টাকায় কিনছি এখন সেগুলাই দুইশ টাকার উপরে। পাঙ্গাশ মাছের দাম ২০০-২৫০ টাকা। কেমনে মাছ কিনব!

আরেক ক্রেতা মানিক বলেন, বাসায় মেহমান আসছে, ইলিশ মাছের যে দাম, ছোট সাইজের ইলিশও সাত-আটশ টাকা চাচ্ছে। ছোট সাইজের জাটকাও ৪০০-৫০০ টাকা। এটা ছাড়া আমাদের কেনার কোনো উপায় নাই।

বাজারে প্রতি ডজন মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। শাহজালাল ডিম ভাণ্ডারের বিক্রয় কর্মী মাজেদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ পর ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আসছে। ১৮৫ টাকা ডজন হয়ে গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। তবে সামনের দিকে ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা কম। তিনি আরও জানান, ডজন বা খাঁচা ধরে ক্রেতাদের ডিম কেনার প্রবণতা কমেছে। ভাঙা ডিমও বিক্রি বেড়েছে।

মাংসের বাজারের চিত্রও অভিন্ন। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা।

কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। যাত্রাবাড়ী এলাকার রহমান স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম বলেন, মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকায় এসেছে। গত দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানেই আমদানি করা রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। দেশি রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এই বিক্রেতা আরও বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও বেড়েছে। তদারকি-অভিযান শুরু হলে পণ্যটির দাম হয়তো কিছুটা কমবে।

বাজারে পেঁয়াজ, রসুনের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, দাম কমার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতিকেজি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাজারে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে, কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাড়ছে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি, বৃষ্টি, পরিবহন সংকটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

বাজার করতে আসা বিনা আক্তার বলেন, সব কিছুতে দাম। আগুনের মতো দাম। দেখতেই তো পাচ্ছেন। কিছুই বলার নেই। প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে আর আমরা কিনে খাচ্ছি। কিছুই করার নেই। এগুলো দেখার বা নিয়ন্ত্রণের কেউ নেই। চাল থেকে সবজি সবকিছুই এখন সিন্ডিকেটের কব্জায়। বাজারে একটা বাজেট নিয়ে আসলেও এসে দেখি দাম হাওয়ার গতিতে বাড়ছে। ফলে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই বাদ দিয়ে বাসায় যেতে হয়। এভাবেই চলছে। কী লাভ এসব বলে?

নাছির নামে আরেক ক্রেতা বলেন, দাম কেমন সেটা তো অনুমান করতেই পারছেন। এক কেজি সবজি যদি ৮০ থেকে ২০০ টাকায় বা তার বেশি দামে কিনতে হয় তাহলে আমরা কেমন আছি সেটা জিজ্ঞাসার প্রয়োজন নেই। সবকিছুতেই দাম। এতদিন মাছ মাংস, চাল ডিমে দাম বেড়েছে। এখন সবজিতেও। আমরা তাহলে কিভাবে বাঁচব? প্রতিদিন তো আর ৮০ টাকার এক কেজি ধুন্দল দিয়ে সংসার চলে না। এর সাথে চাল, ডাল, মাংস, ডিম বা আরও সবজি দরকার পড়ে। সবমিলিয়ে মানিয়ে চলা মুশকিল!

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

প্রকাশের সময় : ০১:০১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

লাগামছাড়া নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে দাম। দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই। অস্বস্তি বেড়েছে মাছ-মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের বাজারেও। বিভিন্ন সময় নানা পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। নতুন করে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে দেশি রসুন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে এসে যেন দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার এসব বাজারে বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৪০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে শীতকালীন সবজির বাজার চড়া থাকতে দেখা গেছে। ছোট বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ছোট আকারের ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৪০ টাকা, শিম ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাকা টমেটো ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এক কেজি সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি ১৪০০-১৫০০ টাকায়। এছাড়াও হাফ কেজি সাইজের ইলিশ ৮০০-১০০০ টাকা, চারটায় এক কেজি হয় এমন সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। মাছের সাইজ যত বড় হচ্ছে দাম আরও বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।

এছাড়া বাজারে এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মাগুর মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাঙাশ ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে এক বিক্রেতা বলেন, ইলিশের দাম আরও বেশি ছিল, অহন তাও কমছে কয়েকদিন আগে এক কেজি সাইজের ইলিশ বেচছি ১৭০০-১৮০০ টাকায়। সে হিসেবে অহন দুই-তিনশ টাকা কমছে।

শনিবর আখড়া বাজারে বাজার করতে আসা ছাত্তার বেপারী নামে একজন বলেন, মাছের যে দাম তাতে ইলিশ তো দূরের কথা, পাঙ্গাশ তেলাপিয়াও সাধ্যারে বাইরে চলে যাচ্ছে। কয়েক মাস আগে যেই তেলাপিয়া মাছ ১২০-১৩০ টাকায় কিনছি এখন সেগুলাই দুইশ টাকার উপরে। পাঙ্গাশ মাছের দাম ২০০-২৫০ টাকা। কেমনে মাছ কিনব!

আরেক ক্রেতা মানিক বলেন, বাসায় মেহমান আসছে, ইলিশ মাছের যে দাম, ছোট সাইজের ইলিশও সাত-আটশ টাকা চাচ্ছে। ছোট সাইজের জাটকাও ৪০০-৫০০ টাকা। এটা ছাড়া আমাদের কেনার কোনো উপায় নাই।

বাজারে প্রতি ডজন মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। শাহজালাল ডিম ভাণ্ডারের বিক্রয় কর্মী মাজেদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ পর ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আসছে। ১৮৫ টাকা ডজন হয়ে গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। তবে সামনের দিকে ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা কম। তিনি আরও জানান, ডজন বা খাঁচা ধরে ক্রেতাদের ডিম কেনার প্রবণতা কমেছে। ভাঙা ডিমও বিক্রি বেড়েছে।

মাংসের বাজারের চিত্রও অভিন্ন। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা।

কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। যাত্রাবাড়ী এলাকার রহমান স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম বলেন, মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকায় এসেছে। গত দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানেই আমদানি করা রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। দেশি রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এই বিক্রেতা আরও বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও বেড়েছে। তদারকি-অভিযান শুরু হলে পণ্যটির দাম হয়তো কিছুটা কমবে।

বাজারে পেঁয়াজ, রসুনের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, দাম কমার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতিকেজি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাজারে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে, কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাড়ছে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি, বৃষ্টি, পরিবহন সংকটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

বাজার করতে আসা বিনা আক্তার বলেন, সব কিছুতে দাম। আগুনের মতো দাম। দেখতেই তো পাচ্ছেন। কিছুই বলার নেই। প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে আর আমরা কিনে খাচ্ছি। কিছুই করার নেই। এগুলো দেখার বা নিয়ন্ত্রণের কেউ নেই। চাল থেকে সবজি সবকিছুই এখন সিন্ডিকেটের কব্জায়। বাজারে একটা বাজেট নিয়ে আসলেও এসে দেখি দাম হাওয়ার গতিতে বাড়ছে। ফলে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই বাদ দিয়ে বাসায় যেতে হয়। এভাবেই চলছে। কী লাভ এসব বলে?

নাছির নামে আরেক ক্রেতা বলেন, দাম কেমন সেটা তো অনুমান করতেই পারছেন। এক কেজি সবজি যদি ৮০ থেকে ২০০ টাকায় বা তার বেশি দামে কিনতে হয় তাহলে আমরা কেমন আছি সেটা জিজ্ঞাসার প্রয়োজন নেই। সবকিছুতেই দাম। এতদিন মাছ মাংস, চাল ডিমে দাম বেড়েছে। এখন সবজিতেও। আমরা তাহলে কিভাবে বাঁচব? প্রতিদিন তো আর ৮০ টাকার এক কেজি ধুন্দল দিয়ে সংসার চলে না। এর সাথে চাল, ডাল, মাংস, ডিম বা আরও সবজি দরকার পড়ে। সবমিলিয়ে মানিয়ে চলা মুশকিল!