Dhaka শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উত্তরণ মোকাবিলায় কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয় : ড. দেবপ্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজির আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হবে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মূল বিষয়। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এর পাশাপাশি, আমাদের মানব সম্পদের বিকাশ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। দুর্ভাগ্যবশত, নীতিনির্ধারকরা তাদের কথা যথাযথভাবে শুনছেন না এবং তাদের বিষয়গুলো পর্যাপ্ত মিডিয়া কভারেজ পাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেসব টুলস বা যন্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করছে, সেগুলোর চাহিদাও বাজারে শেষ হয়েছে। ফলে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করার পরও বেকার থাকছে। কিন্তু বিদেশি লোকজন ঠিকই কাজ পেয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা কমিশন যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, সেভাবে করেনি। তারা সঠিকভাবে কাজ করলে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার এমন পরিস্থিতি হতো না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কীভাবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করেছে, সেটির কোনো অংশ আমাদের দেশে করা হয়নি। কোরিয়া, জাপান ও ভারত যেভাবে কারিগরি শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পরিবর্তন করেছে, সেটা আমরা করতে পারিনি। বর্তমান যুগে গণিত, বিজ্ঞান ও অটোমেশনে দক্ষ না হলে উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বৃহত্তর এবং অধিক ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের আওতায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। কিন্তু এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।

কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন ও যুগোপযোগী করতে করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, আগামীর রাজনৈতিক ইশতেহারে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট আলাপ থাকতে হবে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে মোট জিডিপির ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে এমন নয়। কারিগরি শিক্ষার বৃত্তি, যন্ত্রাংশ ক্রয় ও অবকাঠামো উন্নয়ন কত টাকা ব্যয় করা হবে, সেটিও স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে শিক্ষকদের আধুনিকায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পুরোনো শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সমাজে এখনো নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। সেগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কারিগরি শিক্ষাকে অনেকে ছোট করে দেখেন। কারিগরি থেকে পাস করা একটি ছেলের চেয়ে বিবিএ পাস করা ছেলেকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়। এসব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো কারিগর হয়ে উঠতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বিভিন্ন পর্যায়ের গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উত্তরণ মোকাবিলায় কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয় : ড. দেবপ্রিয়

প্রকাশের সময় : ০৬:৫০:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজির আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হবে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মূল বিষয়। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এর পাশাপাশি, আমাদের মানব সম্পদের বিকাশ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। দুর্ভাগ্যবশত, নীতিনির্ধারকরা তাদের কথা যথাযথভাবে শুনছেন না এবং তাদের বিষয়গুলো পর্যাপ্ত মিডিয়া কভারেজ পাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেসব টুলস বা যন্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করছে, সেগুলোর চাহিদাও বাজারে শেষ হয়েছে। ফলে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করার পরও বেকার থাকছে। কিন্তু বিদেশি লোকজন ঠিকই কাজ পেয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা কমিশন যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, সেভাবে করেনি। তারা সঠিকভাবে কাজ করলে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার এমন পরিস্থিতি হতো না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কীভাবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করেছে, সেটির কোনো অংশ আমাদের দেশে করা হয়নি। কোরিয়া, জাপান ও ভারত যেভাবে কারিগরি শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পরিবর্তন করেছে, সেটা আমরা করতে পারিনি। বর্তমান যুগে গণিত, বিজ্ঞান ও অটোমেশনে দক্ষ না হলে উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বৃহত্তর এবং অধিক ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের আওতায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। কিন্তু এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।

কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন ও যুগোপযোগী করতে করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, আগামীর রাজনৈতিক ইশতেহারে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট আলাপ থাকতে হবে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে মোট জিডিপির ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে এমন নয়। কারিগরি শিক্ষার বৃত্তি, যন্ত্রাংশ ক্রয় ও অবকাঠামো উন্নয়ন কত টাকা ব্যয় করা হবে, সেটিও স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে শিক্ষকদের আধুনিকায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পুরোনো শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সমাজে এখনো নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। সেগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কারিগরি শিক্ষাকে অনেকে ছোট করে দেখেন। কারিগরি থেকে পাস করা একটি ছেলের চেয়ে বিবিএ পাস করা ছেলেকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়। এসব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো কারিগর হয়ে উঠতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বিভিন্ন পর্যায়ের গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।