আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববাজারে প্রথমবারের মতো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭১১.১৯ ডলার ছাড়িয়েছে। সেই হিসেবে দেশের বাজারেও যেকোনো সময় দামি এই ধাতুটির দাম বেড়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১২টা পর্যন্ত স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম অবস্থান করছিল ২ হাজার ৭১১.১৯ ডলারে। একদিনে ১৮.১০ ডলার বা শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে দাম বেড়েছে প্রতি আউন্সে।
মার্কিন নির্বাচন, ফেডারেল রিজার্ভের সুদ হার হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার কারণে এখন বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এরআগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে স্বর্ণের দাম সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। দুবাই জুয়েলারি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাজার খোলার সময় ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম গ্রামপ্রতি ৩২৪ দশমিক ২৫ দিরহামে উঠে গেছে, যা বুধবার বাজার বন্ধের সময় ছিল ৩২৩ দশমিক ৭৫ দিরহাম।
উত্তাপহীন মুদ্রানীতির ফলে স্বর্ণের দাম অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক বাজারের প্রভাবে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ক্রেতাদের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমিরাতের সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে হয় আউন্সপ্রতি ২,৭১১ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে একই পরিমাণ বেড়ে হয় আউন্সপ্রতি ২,৭২২ ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, ফেডারেল রিজার্ভের সুদ হার হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা ঘিরে এখন বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বমুখী স্বর্ণের দাম।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকে। সংগঠনটির সবশেষ দেওয়া দাম অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৩ টাকা। এটিই দেশের বাজারে এখনো পর্যন্ত স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সংগঠনটির পক্ষে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি। এই কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দাম বাড়ছে, তাতে দেশের বাজারেও দাম বাড়ানো লাগবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমার স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবার পাকা স্বর্ণের দাম কমলে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববাজারের দামের চিত্র পাকা স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৪২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১৭ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।