Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বরূপকাঠিতে সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হতে না হতেই বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির কৃত্তিপাশা সড়কের সংস্কার কাজ শেষ না হতেই নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন অংশ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক মেরামত কাজ শেষ হওয়ার ১০ দিনের মাথায় এই সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টির পানিতে কার্পেটিংয়ের পিচ ধুয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। স্বরূপকাঠি-কৃত্তিপাশা সড়কের ব্রিজ কালভার্টসহ পুনর্নিমাণ কাজ চলমান। এমএম বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ করছে বলে জানায় স্থানীয়রা। ওই সড়কের শুরুতেই স্বরূপকাঠি-জগন্নাথকাঠি ৪০০ মিটার অংশে ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার মেরামত কাজের প্রাক্কলন নেওয়া হয়।

কাজের মূল ঠিকাদার মাইনুদ্দীন বাশি। তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে উপ-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন শুভ নামে একজন। চলমান কাজের মধ্যে একই সড়কে আরেকটি মেরামত প্রকল্প জুন মাসের শেষ দিকে নেওয়ায় এটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগের কিছু লোকের যোগসাজশে মেরামতের নামে ২৬ লাখ টাকা হরিলুট হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. কবির হোসেন বলেন, সড়ক বিভাগের ওই রাস্তাটি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত ছিল। রাস্তাটি মেরামতের কাজ শুরু হলে সকলের আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু কাজ এতই নিম্নমানের হচ্ছিল যা দেখে এলাকাবাসীর আপত্তির মুখে রাতের আঁধারে ঢালাই কাজ শুরু করা হয়। এতে এলাকাবাসী বাধা দিলে তারা পরের দিনে কোনো রকমে তড়িঘড়ি করে পিচ ঢালাই কাজ শেষ করে রাতেই চলে যায় ঠিকাদারের লোকজন।

সাবেক পৌর মেয়র ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, রাস্তার কাজ খুবই খারাপ হয়েছে। কাজ শেষের ১০ দিনের মাথায় রাস্তার পিচ উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পুরো কাজেই অনিয়ম হয়েছে বলে রাস্তাটির এমন দশা হয়েছে।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সড়ক বিভাগের নেছারাবাদ উপজেলার দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার রতন মিস্ত্রি জানান, কাজের শুরুতে আমি ২ দিন উপস্থিত ছিলাম। পরে শরীর অসুস্থ থাকায় আর যেতে পারিনি। পিরোজপুরের শুভ নামে এক ঠিকাদার ওই কাজ করেছে। এর বেশিকিছু আমি জানি না।

পিরোজপুর সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম জানান, ৪০০ মিটার কার্পেটিং রাস্তার রিপেরিংয়ের জন্য সম্ভবত ২৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। মাইনুদ্দীন বাশি ওই কাজের মূল ঠিকাদার। তার থেকে সাব কন্ট্যাক্ট নিয়ে শুভ নামে এক ব্যক্তি কাজ করেছে। কাজের সময় আমরা ছিলাম, কাজ করে কাজের বিল দেওয়া হয়ে গেছে। এখন কাজ যদি খারাপ হয় তা হলে প্রয়োজনে ঠিকাদার আবার ওই কাজ করে দেবে।

স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, কাজের মান খুবই খারাপ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তিনিসহ কাউন্সিলররা সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় উপ-ঠিকাদার মান ঠিক রাখবেন বলে জানান। কিন্তু তাঁরা যেনতেনভাবে কাজ করে পালিয়ে গেছেন। এতে চরম অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না : রিজওয়ানা হাসান

স্বরূপকাঠিতে সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হতে না হতেই বেহাল দশা

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৬:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির কৃত্তিপাশা সড়কের সংস্কার কাজ শেষ না হতেই নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন অংশ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক মেরামত কাজ শেষ হওয়ার ১০ দিনের মাথায় এই সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টির পানিতে কার্পেটিংয়ের পিচ ধুয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। স্বরূপকাঠি-কৃত্তিপাশা সড়কের ব্রিজ কালভার্টসহ পুনর্নিমাণ কাজ চলমান। এমএম বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ করছে বলে জানায় স্থানীয়রা। ওই সড়কের শুরুতেই স্বরূপকাঠি-জগন্নাথকাঠি ৪০০ মিটার অংশে ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার মেরামত কাজের প্রাক্কলন নেওয়া হয়।

কাজের মূল ঠিকাদার মাইনুদ্দীন বাশি। তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে উপ-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেন শুভ নামে একজন। চলমান কাজের মধ্যে একই সড়কে আরেকটি মেরামত প্রকল্প জুন মাসের শেষ দিকে নেওয়ায় এটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগের কিছু লোকের যোগসাজশে মেরামতের নামে ২৬ লাখ টাকা হরিলুট হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. কবির হোসেন বলেন, সড়ক বিভাগের ওই রাস্তাটি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত ছিল। রাস্তাটি মেরামতের কাজ শুরু হলে সকলের আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু কাজ এতই নিম্নমানের হচ্ছিল যা দেখে এলাকাবাসীর আপত্তির মুখে রাতের আঁধারে ঢালাই কাজ শুরু করা হয়। এতে এলাকাবাসী বাধা দিলে তারা পরের দিনে কোনো রকমে তড়িঘড়ি করে পিচ ঢালাই কাজ শেষ করে রাতেই চলে যায় ঠিকাদারের লোকজন।

সাবেক পৌর মেয়র ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, রাস্তার কাজ খুবই খারাপ হয়েছে। কাজ শেষের ১০ দিনের মাথায় রাস্তার পিচ উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পুরো কাজেই অনিয়ম হয়েছে বলে রাস্তাটির এমন দশা হয়েছে।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সড়ক বিভাগের নেছারাবাদ উপজেলার দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার রতন মিস্ত্রি জানান, কাজের শুরুতে আমি ২ দিন উপস্থিত ছিলাম। পরে শরীর অসুস্থ থাকায় আর যেতে পারিনি। পিরোজপুরের শুভ নামে এক ঠিকাদার ওই কাজ করেছে। এর বেশিকিছু আমি জানি না।

পিরোজপুর সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম জানান, ৪০০ মিটার কার্পেটিং রাস্তার রিপেরিংয়ের জন্য সম্ভবত ২৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। মাইনুদ্দীন বাশি ওই কাজের মূল ঠিকাদার। তার থেকে সাব কন্ট্যাক্ট নিয়ে শুভ নামে এক ব্যক্তি কাজ করেছে। কাজের সময় আমরা ছিলাম, কাজ করে কাজের বিল দেওয়া হয়ে গেছে। এখন কাজ যদি খারাপ হয় তা হলে প্রয়োজনে ঠিকাদার আবার ওই কাজ করে দেবে।

স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, কাজের মান খুবই খারাপ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তিনিসহ কাউন্সিলররা সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় উপ-ঠিকাদার মান ঠিক রাখবেন বলে জানান। কিন্তু তাঁরা যেনতেনভাবে কাজ করে পালিয়ে গেছেন। এতে চরম অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।