Dhaka মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বছভাবে, আয়নার মত পরিস্কার নির্বাচন করতে চায় ইসি : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, স্বছভাবে, আয়নার মত পরিস্কার নির্বাচন করতে চায় ইসি। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশন বিশ্বকে দেখাতে চায় নির্বাচনে কোন লুকোছাপা হচ্ছে না।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, সংস্কার কমিশন আমাদের কাজকে হালকা করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাই আমাদের সংলাপ একটু দেরিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য বারবার বলছি। আজকের সংলাপ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়। আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। মিডিয়াকে পার্টনার নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মিসইউনফরমেশন, ডিসইনফেমেশন অ্যাড্রেস করার জন্য আপনাদের গুরুত্ব অনেক।

‎এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে। গণমাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নির্বাচনের অনূকূল পরিবেশ তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সহযোগিতা চাই। এআই-এর অপব্যবহার রোধে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রবাসী, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেন, সেসব সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা আমরা করবো। প্রায় ১০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে ভোটের আওতায় নিয়ে আসা হবে এবার। সবাইকে সাথে নিয়ে স্বচ্ছভাবে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই। আয়নার মতো স্বচ্ছ করে এই নির্বাচন করতে চাই।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন মিডিয়াকে সহযোগী পার্টনার হিসেবে পাশে পেতে চাই।

তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার, মিথ্যা তথ্য (মিসইনফরমেশন) এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচার (ডিসইনফরমেশন) যেন নির্বাচনের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে, সেজন্য গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকা খুব জরুরি।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন যে নির্বাচন যতটা কাছে, তার তুলনায় এত দেরিতে কেন মিডিয়ার সঙ্গে সংলাপ শুরু হলো? এ বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, কমিশনের অধীনে গঠিত সংস্কার কমিশন আগেই বিভিন্ন অংশীজন, মিডিয়া, সিভিল সোসাইটি, রাজনৈতিক প্রতিনিধি—সব পক্ষের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো কমিশনের কাজ অনেকটা সহজ করে দিয়েছে। ফলে ইসি মূল সংলাপে একটু পরে নামলেও, পূর্বপ্রস্তুতি আগে থেকেই চলছিল।

সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কারণ, তারা নিজেরা এখনো নির্বাচনী আইন ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত। এমন অবস্থায় ইসি তাদের আমন্ত্রণ জানালেও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ ছিল। এজন্য রাজনৈতিক সংলাপ কিছুটা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন ঘিরে কমিশন যেসব কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, প্রায় ৭৭ লাখ মানুষের তথ্য হালনাগাদের এই বিশাল কর্মযজ্ঞে কমিশন বড় সফলতা পেয়েছে। এর মাধ্যমে ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার শনাক্ত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪৩ লাখের বেশি নতুন উপযুক্ত ভোটারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যাদের নাম আগে ছিল না। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি রচনায় একটি বড় অগ্রগতি। নারী পুরুষের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারী যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।

সিইসি বলেন, কমিশন এখন সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ক্ষেত্রেও গণমাধ্যমের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একা নয়, সবার সহযোগিতা নিয়েই সামনে এগোতে চায়। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল সোসাইটি এবং সর্বস্তরের জনগণের সম্মিলিত ভূমিকা জরুরি।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক করতে মিডিয়াকে শুধু প্রচার নয়, বরং নীতিনির্ধারণী আলোচনায়ও অংশ নিতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার থেকে শুরু করে ভুল তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি মোকাবিলায় মিডিয়া একটি ‘ফ্রন্টলাইন পার্টনার’ হিসেবে কাজ করতে পারে।

সিইসি আরও বলেন, এ সংলাপ শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য নয়। কমিশন চায় সাংবাদিকদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্য চার নির্বাচন কমিশনার এবং দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া

বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে

স্বছভাবে, আয়নার মত পরিস্কার নির্বাচন করতে চায় ইসি : সিইসি

প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, স্বছভাবে, আয়নার মত পরিস্কার নির্বাচন করতে চায় ইসি। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশন বিশ্বকে দেখাতে চায় নির্বাচনে কোন লুকোছাপা হচ্ছে না।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, সংস্কার কমিশন আমাদের কাজকে হালকা করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাই আমাদের সংলাপ একটু দেরিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য বারবার বলছি। আজকের সংলাপ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়। আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। মিডিয়াকে পার্টনার নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মিসইউনফরমেশন, ডিসইনফেমেশন অ্যাড্রেস করার জন্য আপনাদের গুরুত্ব অনেক।

‎এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে। গণমাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নির্বাচনের অনূকূল পরিবেশ তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সহযোগিতা চাই। এআই-এর অপব্যবহার রোধে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রবাসী, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেন, সেসব সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা আমরা করবো। প্রায় ১০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে ভোটের আওতায় নিয়ে আসা হবে এবার। সবাইকে সাথে নিয়ে স্বচ্ছভাবে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই। আয়নার মতো স্বচ্ছ করে এই নির্বাচন করতে চাই।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন মিডিয়াকে সহযোগী পার্টনার হিসেবে পাশে পেতে চাই।

তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার, মিথ্যা তথ্য (মিসইনফরমেশন) এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচার (ডিসইনফরমেশন) যেন নির্বাচনের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে, সেজন্য গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকা খুব জরুরি।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন যে নির্বাচন যতটা কাছে, তার তুলনায় এত দেরিতে কেন মিডিয়ার সঙ্গে সংলাপ শুরু হলো? এ বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, কমিশনের অধীনে গঠিত সংস্কার কমিশন আগেই বিভিন্ন অংশীজন, মিডিয়া, সিভিল সোসাইটি, রাজনৈতিক প্রতিনিধি—সব পক্ষের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো কমিশনের কাজ অনেকটা সহজ করে দিয়েছে। ফলে ইসি মূল সংলাপে একটু পরে নামলেও, পূর্বপ্রস্তুতি আগে থেকেই চলছিল।

সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কারণ, তারা নিজেরা এখনো নির্বাচনী আইন ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত। এমন অবস্থায় ইসি তাদের আমন্ত্রণ জানালেও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ ছিল। এজন্য রাজনৈতিক সংলাপ কিছুটা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন ঘিরে কমিশন যেসব কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, প্রায় ৭৭ লাখ মানুষের তথ্য হালনাগাদের এই বিশাল কর্মযজ্ঞে কমিশন বড় সফলতা পেয়েছে। এর মাধ্যমে ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার শনাক্ত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪৩ লাখের বেশি নতুন উপযুক্ত ভোটারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যাদের নাম আগে ছিল না। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি রচনায় একটি বড় অগ্রগতি। নারী পুরুষের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারী যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।

সিইসি বলেন, কমিশন এখন সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ক্ষেত্রেও গণমাধ্যমের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একা নয়, সবার সহযোগিতা নিয়েই সামনে এগোতে চায়। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল সোসাইটি এবং সর্বস্তরের জনগণের সম্মিলিত ভূমিকা জরুরি।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক করতে মিডিয়াকে শুধু প্রচার নয়, বরং নীতিনির্ধারণী আলোচনায়ও অংশ নিতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার থেকে শুরু করে ভুল তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি মোকাবিলায় মিডিয়া একটি ‘ফ্রন্টলাইন পার্টনার’ হিসেবে কাজ করতে পারে।

সিইসি আরও বলেন, এ সংলাপ শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য নয়। কমিশন চায় সাংবাদিকদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্য চার নির্বাচন কমিশনার এবং দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।