Dhaka বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্পেনে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারি বৃষ্টির পর স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বুধবার (৩০ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বন্যায় রাস্তা-ঘাট এবং বিভিন্ন শহর পানিতে তলিয়ে গেছে।

এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছে। দেশটির বেশ কিছু অঞ্চলেই বজ্রপাত এবং ভারী বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

স্পেনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বন্যা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেসব ভিডিওতে দেখা গেছে, বহু মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন, পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচতে গাছেও উঠেছেন অনেকে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্লোস মাজোন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এখনই বন্যায় মৃতের সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করা সম্ভব নয়।

স্পেনের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভ্যালেনসিয়া অঞ্চলের চিভায় মঙ্গলবার মাত্র ৮ ঘণ্টায় ৪৯১ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে যা এক বছরের বৃষ্টিপাতের সমান।

ভ্যালেন্সিয়ার গভর্নর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বন্যার কারণে প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং সে এলাকাগুলোতে বসবাসরত লোকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরাও সেসব এলাকায় যাওয়া উপায় করতে পারছে না।

বন্যার কারণে রাজধানী মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার বিভিন্ন শহরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে, স্কুল এবং অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ভ্যালেন্সিয়ার আলজিরা শহরে প্রবল বর্ষণের মধ্যে গাড়িতে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা।

সহায়তার জন্য রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশনে শত শত ফোনকল এসেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় আটকা পড়েছেন এমন লোকজন বা প্রিয়জনদের উদ্ধারে সহায়তা চেয়ে লোকজন ফোন করেছেন। তবে কিছু এলাকায় পৌঁছানোর জন্য উদ্ধারকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

এদিকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লেতুর পৌরসভায় নিখোঁজদের উদ্ধারে ড্রোন ব্যবহার করেছেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা। স্পেনের জাতীয় টেলিভিশন স্টেশন টিভিইকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তা মিলাগ্রোস তোলোন। তিনি বলেন, লোকজনকে উদ্ধার করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভেলেনসিয়ায় অনেক মানুষ ট্রাক বা গাড়ি এমনকি বাড়ির ছাদে বা ব্রীজের ওপর দাঁড়িয়ে থেকেই রাত পার করেছেন। তারা দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

এদিকে ভেলেনসিয়া অঞ্চলে লাল সতর্কতা জারি করেছে স্পেনের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এইমেত। এছাড়া আন্দালুসিয়া অঞ্চলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভেলেনসিয়া সিটি হল জানিয়েছে, বুধবার সব স্কুল এবং খেলাধুলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শহরের পার্কগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে নিখোঁজদের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তিনি লোকজনকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরি থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

স্পেনে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১

প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারি বৃষ্টির পর স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বুধবার (৩০ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বন্যায় রাস্তা-ঘাট এবং বিভিন্ন শহর পানিতে তলিয়ে গেছে।

এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছে। দেশটির বেশ কিছু অঞ্চলেই বজ্রপাত এবং ভারী বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

স্পেনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বন্যা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেসব ভিডিওতে দেখা গেছে, বহু মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন, পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচতে গাছেও উঠেছেন অনেকে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্লোস মাজোন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এখনই বন্যায় মৃতের সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করা সম্ভব নয়।

স্পেনের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভ্যালেনসিয়া অঞ্চলের চিভায় মঙ্গলবার মাত্র ৮ ঘণ্টায় ৪৯১ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে যা এক বছরের বৃষ্টিপাতের সমান।

ভ্যালেন্সিয়ার গভর্নর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বন্যার কারণে প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং সে এলাকাগুলোতে বসবাসরত লোকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরাও সেসব এলাকায় যাওয়া উপায় করতে পারছে না।

বন্যার কারণে রাজধানী মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার বিভিন্ন শহরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে, স্কুল এবং অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ভ্যালেন্সিয়ার আলজিরা শহরে প্রবল বর্ষণের মধ্যে গাড়িতে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা।

সহায়তার জন্য রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশনে শত শত ফোনকল এসেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় আটকা পড়েছেন এমন লোকজন বা প্রিয়জনদের উদ্ধারে সহায়তা চেয়ে লোকজন ফোন করেছেন। তবে কিছু এলাকায় পৌঁছানোর জন্য উদ্ধারকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

এদিকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লেতুর পৌরসভায় নিখোঁজদের উদ্ধারে ড্রোন ব্যবহার করেছেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা। স্পেনের জাতীয় টেলিভিশন স্টেশন টিভিইকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তা মিলাগ্রোস তোলোন। তিনি বলেন, লোকজনকে উদ্ধার করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভেলেনসিয়ায় অনেক মানুষ ট্রাক বা গাড়ি এমনকি বাড়ির ছাদে বা ব্রীজের ওপর দাঁড়িয়ে থেকেই রাত পার করেছেন। তারা দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

এদিকে ভেলেনসিয়া অঞ্চলে লাল সতর্কতা জারি করেছে স্পেনের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এইমেত। এছাড়া আন্দালুসিয়া অঞ্চলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভেলেনসিয়া সিটি হল জানিয়েছে, বুধবার সব স্কুল এবং খেলাধুলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শহরের পার্কগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে নিখোঁজদের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তিনি লোকজনকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরি থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন।