Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে বইমেলা : সংস্কৃতি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বইমেলা আয়োজনে কোনো সমস্যা হবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন করা হবে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অনেকগুলো পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে। রিপোর্ট হওয়ার আগে থেকে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছিলাম। গণপূর্ত উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমাদের সচিব সাহেব গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। এটার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জড়িত রয়েছে, সেই মন্ত্রণালয় সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের এটুকু বলতে পারি যে আমরা একটা পজিটিভ আউটকামের দিকে যাচ্ছি। আশা করা যায় বইমেলা যেখানে হতো সেখানেই হবে এবং সুন্দর আয়োজনে হবে। কোন ঝামেলা হবে না। এরই মধ্যে তিন মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। তিন মন্ত্রণালয়ের সভা হয়েছে, সামনে আরও হবে।

বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে, এটা কি আমরা বলতে পারি- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আশা করা যায়।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আইনের মধ্য থেকেই সব স্বপ্ন কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটা দেখা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বহু ধর্ম, বহু ভাষা, বহু জাতি গোষ্ঠী যেন এক জায়গায় থাকে এবং সম্প্রীতির কথা বলে। বাইরে বাংলাদেশ নিয়ে যে অপপ্রচার করা হয়, মিথ্যা প্রমাণ করাই এ সরকারের কাজ হবে।

তিনি বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর সারা দেশে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ডাকা প্রতিবাদ সভা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে। কাউকে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কারো কোনো বর্ণ, ধর্মের ব্যাপারে আক্রমণ করা হবে না।

উপদেষ্টা বলেন, নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে একটি ছবি তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। গত ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধকে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। পনেরো বছর অনেক দুঃশাসন হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। গত ষোল বছর দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা ছিল।

আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে অনেক বড় কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি খুবই ভাগ্যবান যে আমি একটা গ্রেট টিম পেয়েছি। আমরা কিছু এক্সাইটিং এবং ইম্পর্টেন্ট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। আপনারা হয়তো আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে জানতে পারবেন।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, আমি বাইরে থেকে জানতাম যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি ঘুমন্ত মন্ত্রণালয়। ভেতরে তো এসে দেখি এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, এখানে আমার আসার মূল কারণ হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের কী ন্যারেটিভ আমরা নির্মাণ করবো, ন্যারিটিভ কথা দিয়ে নির্মাণ হবে না; নির্মাণ হবে চলচ্চিত্র দিয়ে, থিয়েটার দিয়ে, গান দিয়ে, এসব দিয়ে।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমার চোখে কখনো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাজ চোখে পড়েনি। অনুষ্ঠান করতো খুব। একটা ন্যারেটিভ চেঞ্জ করা, মানুষের মাথায় একটা নতুন গল্প তৈরি করা- এটা আমি খুব একটা দেখিনি। আমি এসে দেখলাম যে ব্যাপক সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, আমি একটা কথা বলেছি, আইন-কানুনের ব্যাপারটা আপনারা দেখবেন। আমরা কেউ কোনদিন যেন আইনের বাইরে না যাই। আইনের মধ্যে থেকে আমি যে স্বপ্নগুলো দেখছি, এটা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, আপনারা আমাকে বলেন। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পাচ্ছি।

আপনি কী কী বিষয় অগ্রাধিকার দেবেন- এ বিষয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, কাল বা পরশুর মধ্যে আপনারা অনেক বড় কিছু জানতে পারবেন।

‘আমার অগ্রাধিকার হচ্ছে, আমরা এমন একটা বাংলাদেশের ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাই যে বাংলাদেশে বহু ধর্ম, বহু ভাষা, বহু জাতিগোষ্ঠী এক জায়গায় থাকে। আমাদের একটা সম্প্রীতির কথা বলে এবং আমাদের সম্পর্কে যে নানা উল্টাপাল্টা ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে বাইরে, সেই ন্যারেটিভগুলো স্ট্রংলি কাউন্টার করাটা আমার কাজ।’

সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, দ্বিতীয় একটা মেজর কাজ হচ্ছে, গত ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চাদরে ঢেকে কিভাবে দুঃশাসনকে জায়েজ করা হয়েছে, কিভাবে গুম, খুনকে জায়েজ করা হয়েছে, ব্যাংক লুটকে জায়েজ করা হয়েছে! এখন আর ১০ কোটি টাকার কোনো খেলা নেই, দুর্নীতি সব হাজার কোটি টাকা থেকে শুরু হয়। এই গল্পগুলো শুধু দেশের মানুষ নয়, দেশের বাইরেও তুলে ধরতে হবে।

‘এই দুঃশাসনের ন্যারেটিভ যদি মানুষ জানে, তারা (আওয়ামী লীগ) কী করেছিল, এটাই তো জুলাই স্পিরিট। শহীদেরা তো শহীদ হয়েছে এই কারণে। সবাইকে বলা এটা যেন আর না ঘটে। না ঘটে সেটা বলতে হলে আগে জানাতে হবে কী ঘটেছিল’- বলেন উপদেষ্টা।

জুলাই স্পিরিট নিয়ে আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজ পুরোদমে শুরু করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, কারো কর্মপরিচয়ে নয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই হবে সরকারের মূল কাজ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রোববার শহীদ মিনারে ইশতেহার ঘোষণা করবে এনসিপি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে বইমেলা : সংস্কৃতি উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:০৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বইমেলা আয়োজনে কোনো সমস্যা হবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন করা হবে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অনেকগুলো পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে। রিপোর্ট হওয়ার আগে থেকে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছিলাম। গণপূর্ত উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমাদের সচিব সাহেব গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। এটার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জড়িত রয়েছে, সেই মন্ত্রণালয় সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের এটুকু বলতে পারি যে আমরা একটা পজিটিভ আউটকামের দিকে যাচ্ছি। আশা করা যায় বইমেলা যেখানে হতো সেখানেই হবে এবং সুন্দর আয়োজনে হবে। কোন ঝামেলা হবে না। এরই মধ্যে তিন মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। তিন মন্ত্রণালয়ের সভা হয়েছে, সামনে আরও হবে।

বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে, এটা কি আমরা বলতে পারি- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আশা করা যায়।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আইনের মধ্য থেকেই সব স্বপ্ন কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটা দেখা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বহু ধর্ম, বহু ভাষা, বহু জাতি গোষ্ঠী যেন এক জায়গায় থাকে এবং সম্প্রীতির কথা বলে। বাইরে বাংলাদেশ নিয়ে যে অপপ্রচার করা হয়, মিথ্যা প্রমাণ করাই এ সরকারের কাজ হবে।

তিনি বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর সারা দেশে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ডাকা প্রতিবাদ সভা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে। কাউকে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কারো কোনো বর্ণ, ধর্মের ব্যাপারে আক্রমণ করা হবে না।

উপদেষ্টা বলেন, নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে একটি ছবি তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। গত ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধকে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। পনেরো বছর অনেক দুঃশাসন হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। গত ষোল বছর দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা ছিল।

আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে অনেক বড় কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি খুবই ভাগ্যবান যে আমি একটা গ্রেট টিম পেয়েছি। আমরা কিছু এক্সাইটিং এবং ইম্পর্টেন্ট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। আপনারা হয়তো আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে জানতে পারবেন।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, আমি বাইরে থেকে জানতাম যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি ঘুমন্ত মন্ত্রণালয়। ভেতরে তো এসে দেখি এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, এখানে আমার আসার মূল কারণ হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের কী ন্যারেটিভ আমরা নির্মাণ করবো, ন্যারিটিভ কথা দিয়ে নির্মাণ হবে না; নির্মাণ হবে চলচ্চিত্র দিয়ে, থিয়েটার দিয়ে, গান দিয়ে, এসব দিয়ে।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমার চোখে কখনো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাজ চোখে পড়েনি। অনুষ্ঠান করতো খুব। একটা ন্যারেটিভ চেঞ্জ করা, মানুষের মাথায় একটা নতুন গল্প তৈরি করা- এটা আমি খুব একটা দেখিনি। আমি এসে দেখলাম যে ব্যাপক সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, আমি একটা কথা বলেছি, আইন-কানুনের ব্যাপারটা আপনারা দেখবেন। আমরা কেউ কোনদিন যেন আইনের বাইরে না যাই। আইনের মধ্যে থেকে আমি যে স্বপ্নগুলো দেখছি, এটা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, আপনারা আমাকে বলেন। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পাচ্ছি।

আপনি কী কী বিষয় অগ্রাধিকার দেবেন- এ বিষয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, কাল বা পরশুর মধ্যে আপনারা অনেক বড় কিছু জানতে পারবেন।

‘আমার অগ্রাধিকার হচ্ছে, আমরা এমন একটা বাংলাদেশের ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাই যে বাংলাদেশে বহু ধর্ম, বহু ভাষা, বহু জাতিগোষ্ঠী এক জায়গায় থাকে। আমাদের একটা সম্প্রীতির কথা বলে এবং আমাদের সম্পর্কে যে নানা উল্টাপাল্টা ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে বাইরে, সেই ন্যারেটিভগুলো স্ট্রংলি কাউন্টার করাটা আমার কাজ।’

সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, দ্বিতীয় একটা মেজর কাজ হচ্ছে, গত ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চাদরে ঢেকে কিভাবে দুঃশাসনকে জায়েজ করা হয়েছে, কিভাবে গুম, খুনকে জায়েজ করা হয়েছে, ব্যাংক লুটকে জায়েজ করা হয়েছে! এখন আর ১০ কোটি টাকার কোনো খেলা নেই, দুর্নীতি সব হাজার কোটি টাকা থেকে শুরু হয়। এই গল্পগুলো শুধু দেশের মানুষ নয়, দেশের বাইরেও তুলে ধরতে হবে।

‘এই দুঃশাসনের ন্যারেটিভ যদি মানুষ জানে, তারা (আওয়ামী লীগ) কী করেছিল, এটাই তো জুলাই স্পিরিট। শহীদেরা তো শহীদ হয়েছে এই কারণে। সবাইকে বলা এটা যেন আর না ঘটে। না ঘটে সেটা বলতে হলে আগে জানাতে হবে কী ঘটেছিল’- বলেন উপদেষ্টা।

জুলাই স্পিরিট নিয়ে আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজ পুরোদমে শুরু করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, কারো কর্মপরিচয়ে নয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই হবে সরকারের মূল কাজ।