আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর সমুদ্র সৈকতের একটি এলাকায় আত্মঘাতী বোমা ও বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো প্রায় ৬৩ জন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২ আগস্ট) গভীর রাতে রাজধানী মোগাদিশুতে লিডো সমুদ্র সৈকতে বোমা ও বন্দুক হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, স্থানীয়রা খুব আতঙ্কিত ছিল, কী ঘটেছে তা জানা যাচ্ছিল না। কারণ বিস্ফোরণের পরপরই গোলাগুলি শুরু হয়েছিল। আমি সৈকতের পাশে আহত লোকজনকে দেখেছি। লোকজন আতঙ্কে চিৎকার করছিল।কে মারা গেছে আর কে বেঁচে আছে জানাও যাচ্ছিল না।
পুলিশের মুখপাত্র আবদিফাতাহ আদান হাসান গণমাধ্যমকে জানান, এই হামলায় ৩২ জনেরও বেশি বেসামরিক মানুষ মারা গেছে এবং প্রায় ৬৩ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলেই হামলাকারীদেরকে হত্যা করেছে। এছাড়া বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি চালাচ্ছিল এমন এক হামলাকারীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় একজন সৈন্য নিহত এবং আরেকজন আহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। বিচ ভিউ হোটেলের প্রবেশপথে একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হামলা শুরু হয়। এসময় অন্যান্য হামলাকারীরা হোটেলে বন্দুক হামলা চালানোর চেষ্টা করে। সমুদ্র সৈকতে লোকজনের ওপর গুলি চালায়। সে সময় সমুদ্র সৈকতে অনেক পর্যটক ছিলেন।
এদিকে এ ঘটনায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসান আলী খায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, লিডো সৈকতে লোকজনের সাঁতার কাটার সময় বিস্ফোরণ ঘটেছে। সন্ত্রাসী এই হামলা রাতে ঘটেছে, যখন সৈকতটি সবচেয়ে বেশি জনাকীর্ণ ছিল।
এক্সে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের অন্ধকারে লিডো সমুদ্র সৈকতে অনেকের মরদেহ পড়ে আছে। এসময় অনেক লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
লিডো সমুদ্র সৈকত, মোগাদিশুর একটি জনপ্রিয় এলাকা। সোমালিরা তাদের সপ্তাহান্ত উপভোগ করার দরুন এলাকাটি শুক্রবার রাতে ব্যস্ত থাকে। তবে এলাকাটি অতীতেও আল-শাবাব যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল।