স্পোর্টস ডেস্ক :
বিরতির পরপরই গোল করে দলকে তিন গোলে এগিয়ে নিলেন কিলিয়ান এমবাপে। সহজ জয়ের আশা জাগাল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু দুই গোল শোধ করে ম্যাচ জমিয়ে তুলল সেল্তা ভিগো। শেষ পর্যন্ত পারল না দলটি। পাঁচ গোলের জমজমাট লড়াইয়ে জিতে শিরোপা লড়াইয়ে ভালোভাবেই টিকে রইল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার (৪ মে) ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল।
আর্দা গিলের স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেওয়ার পর জোড়া গোল করেন এমবাপে। হাভি রদ্রিগেসের পর উইল সুইডবার্গের গোলে ব্যবধান কমায় সেল্তা।
গিলের ও এমবাপের পাশাপাশি রিয়ালের জয়ে দারুণ অবদান থিবো কোর্তোয়ার। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দারুণ কিছু সেভ করেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। প্রায় ৪৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৪টি শট নেয় সেল্তা, এর সাতটি ছিল লক্ষ্েয। অন্য দিকে রেয়ালের ১৭ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্েয।
প্রতিপক্ষের মাঠে পঞ্চম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় সেল্তা। উগো সোতেলোর কর্নারে একটুর জন্য হেড লক্ষ্েয রাখতে পারেননি মার্কোস আলোন্সো।
সপ্তম মিনিটে ডি বক্সে বল পেয়ে যান বোর্হা ইগলেসিয়াস। কিন্তু সেল্তা ফরোয়ার্ড শট নেওয়ার আগেই পেছন থেকে এসে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রাউল আন্সেসিও।
সোতেলোর সেই কর্নারে আলোন্সোর হেড ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কোর্তোয়া। কর্নারের পর প্রতি আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল রিয়াল। লুকাস ভাসকেসের শট ফেরাতে গিয়ে নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন ইয়োয়েল লাগো। ঝাঁপিয়ে ফেরান সেল্তা গোলরক্ষক।
৩৩তম মিনিটে চমৎকার গোলে রিয়ালকে এগিয়ে নেন গিলের। কর্নারের পর লুকাস ভাসকেসের কাছ থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন তরুণ মিডফিল্ডার।
ছয় মিনিট পর সমতা প্রায় ফিরিয়েই ফেলছিল সেল্তা। ইগলেসিয়াসের শট অহেলিয়া চুয়ামেনির পায়ে লেগে অনেকটা বাউন্স করে জালের দিকে যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া। প্রতি আক্রমণ থেকে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন এমবাপে।
দুটি দারুণ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া রিয়াল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান আরও বাড়ায়। ৪৮তম মিনিটে গিলেরের রক্ষণ চেরা পাস পেয়ে বাম পায়ের আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন এমবাপে।
আসরে এটি তার ২৪তম গোল। ফরাসি তারকা ফরোয়ার্ডের চেয়ে বেশি গোল করেছেন কেবল বার্সেলোনার রবের্ত লেভানদোভস্কি (২৫)।
রিয়ালের হয়ে অভিষেকে সর্বোচ্চ গোলের কীর্তির আরও কাছে পৌঁছে গেলেন এমবাপে। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে ইউরোপের সফলতম দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৫ ম্যাচে ৩৭ গোল করেছিলেন ইভান জামোরানো। ৫২ ম্যাচে এমবাপের গোল হলো ৩৬টি।
৫৭তম মিনিটে গিলেরের শট ঠেকিয়ে ব্যবধান আরও বাড়তে দেননি সেল্তা গোলরক্ষক। এর আগে পরে দুটি চেষ্টা লক্ষ্েয রাখতে পারেননি জুড বেলিংহ্যাম।
৬৯তম মিনিটে হাভি রদ্রিগেসের গোলে ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দেয় সেল্তা। কর্নার থেকে পাবলো দুরানের ব্যাকহিল গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ভাসকেস । ফিরতি বলে খুব কাছ থেকে গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন রদ্রিগেস।
সাত মিনিট পর উইলট সুইডবার্গের গোলে ব্যবধান আরও কমায় সেল্তা। একটু আগেই বদলি নামা ইয়াগো আসপাসের সেটা বলে প্রথম স্পর্শ। সেল্তা অধিনায়কের রক্ষণ চেরা পাসে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান অরক্ষিত সুইডিশ ফরোয়ার্ড। ঠাণ্ডা মাথার আড়াআড়ি শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন তিনি।
৭৯তম মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়েই ফেলছিল সেল্তা। আসপাসের আরেকটি দুর্দান্ত পাসে কোর্তোয়াকে একা পেয়ে যান দুরান। তার শট ঠিক মতো ফেরাতে পারেননি রিয়াল গোলরক্ষক কিন্তু বলের গতি অনেক কমে যাওয়ায় জালে যায়নি।
আট মিনিট পর ডি বক্সের মাথা থেকে আসপাসের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া।
৮৯তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে অনেকটা গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে রেয়ালকে হতাশ করেন ব্রাহিম দিয়াস।
স্নায়ু চাপের কঠিন সময়টুকু কোনোমতে কাটিয়ে দিয়ে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। ৩৪ ম্যাচে ২৩ জয় ও ছয় ড্রয়ে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে দলটি। সমান ম্যাচে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় বার্সেলোনা।