লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কাদিরার গোজা থেকে করাতির হাট সড়কের বেড়ীর মাথা সংলগ্ন খালের ওপর সেতুটির অবস্থান।সেতু এমনিতেই সরু। একসঙ্গে দুই পাশের গাড়ি চলতে পারে না। পুরাতন ঢালাই ভেঙে রড দেখা যাচ্ছে। ফাটল ধরেছে পিলারগুলোতে। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত সেতুটি পারাপার করছে যানবাহন ও মানুষজন।
ভারী যানবাহন নয়, তিন চাকার গাড়ি উঠলেই কাঁপতে শুরু করে সেতুটি। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই সেতুটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কথা বলছেন তারা।
স্থানীয় মফিজ উদ্দিন বলেন, প্রায় ৩৫ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় জনবসতি কম থাকায় সেতুটিও সরু করে নির্মাণ করা হয়েছিল। চওড়া কম হওয়ায় সেতুতে বড় ধরনের ও একসঙ্গে দুইটি যানবাহন চলাচল করতে পারে না। বর্তমানে সেতুটির গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। আশাপাশের গ্রাম ও চরাঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত ফসল ছোট ট্রলি, রিকশা-ভ্যানে করে হাটবাজারে নিতে হয়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সবাই সেতু পার হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে।
অটো রিকশাচালক আবদুল করিম বলেন, সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একটা রিকশা উঠলেই কেঁপে ওঠে। এক যুগের বেশি সময় ধরে স্থানীয়রা এখানে নতুন সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু, এখনো কোনো সুফল মেলেনি। মনে হয়, সেতুটি ভেঙে না পড়লে নতুন ব্রিজ হবে না।
সেফালি বেগম বলেন, সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কখন কি হয় বলাতো যায় না। ভারী যানবাহন উঠলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নতুন সেতু করার বিষয়ে কারো কোনো নজরদারি নেই। চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এমপিরা শুধু করছি করছি বলে দায় সারছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কামরুল সরকার বলেন, সেতুর রেলিং ভেঙে গেছে। উঠে গেছে পলেস্তার। সেতুটি পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। সম্প্রতি নিজ উদ্যোগে নতুন ঢালাই দিয়ে জোড়াতালি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে, নিচের অংশে দেওয়া সম্ভব হয়নি। চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চর রমনির ৪টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও চরাঞ্চলে আসা লোকজন এই সেতু দিয়ে চলাচল করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন সেতুর জন্য একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু, এখনো সুফল মেলেনি। যদি, এখানে নতুন সেতু নির্মাণ হয়, তাহলে এ অঞ্চলের লাখো মানুষ উপকৃত হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।