Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেতু আছে সড়ক নেই, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। এক বছর আগে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে যানবাহন ও এলাকাবাসীর চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি।

স্থানীয় কৃষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পার হচ্ছেন। অথচ শর্ত ছিল ব্রিজের সংযোগ সড়ক করার প্রয়োজনীয় জমি ও উপযোগিতা পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো জটিলতা দেখা দিলে দরপত্র আহবান করার আগেই কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মানুষের সুবিধার্থে পীরপুর-গঞ্জেরঘাট সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯৭ টাকা। দরপত্র আহব্বান করলে সেতুটি নির্মাণে কুষ্টিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠার মো. নুরুজ্জামান মিয়া ও সৈকত এন্টারপ্রাইজ জেভিসিএ এর সঙ্গে চুক্তি হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ১০ টাকায়। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি গঞ্জেরঘাট প্রান্তে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই বছরে ১১ ফেব্রুয়ারি দরপত্রের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি ২০২২ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরও সেতুটি চালু করা যায়নি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পীরপুর-গঞ্জেরঘাট সড়ক থেকে কিছুটা দূরে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর সেতুটি নির্মিত হয়েছে। সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকায় এটি আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। এজন্য সেতুর কাছে নৌকায় যে নদী পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে সেটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করছি। সারাদিনই খেয়াঘাটের মাঝি রশি টেনে নৌকায় যাত্রী পারাপার করেন। পণ্য নিয়েও অনেকেই পারাপার হতে হয়। সেতুর পেছনে সরকারের বরাদ্দের কোটি কোটি টাকাও আমাদের জীবনকে আধুনিক যোগাযোগের সুবিধা এনে দিতে পারেনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া জানান, সেতুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ সড়কটি হওয়ার কথা ছিল। সংযোগ সড়ক না হওয়ার কারণে সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক তৈরি ও জমি অধিগ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এলজিইডির কাছে আছে। আশা করছি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

এলজিইডি চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজের ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। অধিগ্রহণের জটিলতা কেটে গেলে নিয়ম মেনে জমির মালিককে মূল্য পরিশোধ এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুততম সময়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

সেতু আছে সড়ক নেই, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

প্রকাশের সময় : ০১:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। এক বছর আগে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে যানবাহন ও এলাকাবাসীর চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি।

স্থানীয় কৃষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পার হচ্ছেন। অথচ শর্ত ছিল ব্রিজের সংযোগ সড়ক করার প্রয়োজনীয় জমি ও উপযোগিতা পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো জটিলতা দেখা দিলে দরপত্র আহবান করার আগেই কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মানুষের সুবিধার্থে পীরপুর-গঞ্জেরঘাট সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯৭ টাকা। দরপত্র আহব্বান করলে সেতুটি নির্মাণে কুষ্টিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠার মো. নুরুজ্জামান মিয়া ও সৈকত এন্টারপ্রাইজ জেভিসিএ এর সঙ্গে চুক্তি হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ১০ টাকায়। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি গঞ্জেরঘাট প্রান্তে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই বছরে ১১ ফেব্রুয়ারি দরপত্রের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি ২০২২ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের এক বছর পরও সেতুটি চালু করা যায়নি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পীরপুর-গঞ্জেরঘাট সড়ক থেকে কিছুটা দূরে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর সেতুটি নির্মিত হয়েছে। সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকায় এটি আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। এজন্য সেতুর কাছে নৌকায় যে নদী পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে সেটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করছি। সারাদিনই খেয়াঘাটের মাঝি রশি টেনে নৌকায় যাত্রী পারাপার করেন। পণ্য নিয়েও অনেকেই পারাপার হতে হয়। সেতুর পেছনে সরকারের বরাদ্দের কোটি কোটি টাকাও আমাদের জীবনকে আধুনিক যোগাযোগের সুবিধা এনে দিতে পারেনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া জানান, সেতুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ সড়কটি হওয়ার কথা ছিল। সংযোগ সড়ক না হওয়ার কারণে সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক তৈরি ও জমি অধিগ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এলজিইডির কাছে আছে। আশা করছি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

এলজিইডি চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজের ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। অধিগ্রহণের জটিলতা কেটে গেলে নিয়ম মেনে জমির মালিককে মূল্য পরিশোধ এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুততম সময়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হবে।