Dhaka বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো আদিত্য-এল ১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে ভারতের নভোযান আদিত্য-এল ১। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা করেছে আদিত্য-এল ১।

উৎক্ষেপণের পর ১৬ দিন পৃথিবীর চারপাশে পাক খাবে সৌরযানটি। এ সময় ৫টি ধাপে সঞ্চয় করবে প্রয়োজনীয় গতিবেগ। পরবর্তী ১শ’ ১০ দিনে ১৫ লাখ কিলোমিটার দুরে সূর্যের ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্টে পৌঁছে, নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল-ওয়ান।

কক্ষপথের এই পয়েন্টের বড় সুবিধা হলো, সেখান থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সব সময় সূর্যের বিভিন্ন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তথ্যমতে, ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো এমন একটি স্থান যেখানে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি থাকে না।

আদিত্য-এল ১ মহাকাশযানটি ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টে স্থাপন করা হলে এটি পৃথিবীর মতো একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে। এতে করে স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য খুব কম জ্বালানির প্রয়োজন হবে।

এক দিনে ১ হাজার ৪শ’ ৪০ টি ছবি পাঠাতে সক্ষম মহাকাশযানটি। আগামী ৫ বছরের জন্য সফলভাবে তথ্য পাঠাতে পারবে যানটি। এমনটাই দাবি ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরোর।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরবে আদিত্য-এল১। এই ১৬ দিনে সূর্যের দিকে পাড়ি দেওয়ার জন্য পাঁচটি ধাপে গতিবেগ বাড়াবে আদিত্য। এর পর ১১০ দিন সূর্যের অভিমুখে যাত্রা করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে সেটি। এই ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল। ফলে এই অঞ্চলে পৌঁছে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থির থাকতে পারে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, তার উপর সূর্যের কী প্রভাব পড়ে, সে সব জানার চেষ্টা করবে আদিত্য-এল১।

সূর্য নিয়ে গবেষণায় এটিই হচ্ছে ইসরোর প্রথম অভিযান। সূর্যকে নিয়ে গবেষণার এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে সুরিয়া, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একজন দেবতার নাম।

এই অভিযানে কত খরচ হবে ইসরো তা না জানালেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, এতে চার কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৩৭৮ কোটি রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) খরচ হবে।

ইসরো বলছে, মহাকাশযানটিতে সাতটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র থাকবে, যা পর্যবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হবে। এই গবেষণা অভিযান বিজ্ঞানীদের সৌর বায়ু, সৌর শিখা এবং পৃথিবী ও এর কাছাকাছি মহাকাশে সেগুলোর প্রভাব সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করবে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই পাওয়া যেতে পারে আদিত্য এল -ওয়ানের পাঠানো প্রথম ছবি, দাবি সংস্থাটির।

বলা হচ্ছে, অভিযান সফল হলে সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হবে ইসরো। পাশাপাশি সূর্যের আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবও বুঝতে এ অভিযান সহায়ক হবে। ২০২০ সালেও সূর্যে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছিল ইসরো। কিন্তু সে সময় করোনা মহামারির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।

আবহাওয়া

সূর্যের উদ্দেশে উড়াল দিলো আদিত্য-এল ১

প্রকাশের সময় : ০১:০২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে ভারতের নভোযান আদিত্য-এল ১। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা করেছে আদিত্য-এল ১।

উৎক্ষেপণের পর ১৬ দিন পৃথিবীর চারপাশে পাক খাবে সৌরযানটি। এ সময় ৫টি ধাপে সঞ্চয় করবে প্রয়োজনীয় গতিবেগ। পরবর্তী ১শ’ ১০ দিনে ১৫ লাখ কিলোমিটার দুরে সূর্যের ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্টে পৌঁছে, নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল-ওয়ান।

কক্ষপথের এই পয়েন্টের বড় সুবিধা হলো, সেখান থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সব সময় সূর্যের বিভিন্ন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির তথ্যমতে, ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো এমন একটি স্থান যেখানে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি থাকে না।

আদিত্য-এল ১ মহাকাশযানটি ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টে স্থাপন করা হলে এটি পৃথিবীর মতো একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে। এতে করে স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য খুব কম জ্বালানির প্রয়োজন হবে।

এক দিনে ১ হাজার ৪শ’ ৪০ টি ছবি পাঠাতে সক্ষম মহাকাশযানটি। আগামী ৫ বছরের জন্য সফলভাবে তথ্য পাঠাতে পারবে যানটি। এমনটাই দাবি ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরোর।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরবে আদিত্য-এল১। এই ১৬ দিনে সূর্যের দিকে পাড়ি দেওয়ার জন্য পাঁচটি ধাপে গতিবেগ বাড়াবে আদিত্য। এর পর ১১০ দিন সূর্যের অভিমুখে যাত্রা করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে সেটি। এই ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল। ফলে এই অঞ্চলে পৌঁছে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থির থাকতে পারে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, তার উপর সূর্যের কী প্রভাব পড়ে, সে সব জানার চেষ্টা করবে আদিত্য-এল১।

সূর্য নিয়ে গবেষণায় এটিই হচ্ছে ইসরোর প্রথম অভিযান। সূর্যকে নিয়ে গবেষণার এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে সুরিয়া, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একজন দেবতার নাম।

এই অভিযানে কত খরচ হবে ইসরো তা না জানালেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, এতে চার কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৩৭৮ কোটি রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) খরচ হবে।

ইসরো বলছে, মহাকাশযানটিতে সাতটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র থাকবে, যা পর্যবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হবে। এই গবেষণা অভিযান বিজ্ঞানীদের সৌর বায়ু, সৌর শিখা এবং পৃথিবী ও এর কাছাকাছি মহাকাশে সেগুলোর প্রভাব সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করবে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই পাওয়া যেতে পারে আদিত্য এল -ওয়ানের পাঠানো প্রথম ছবি, দাবি সংস্থাটির।

বলা হচ্ছে, অভিযান সফল হলে সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হবে ইসরো। পাশাপাশি সূর্যের আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবও বুঝতে এ অভিযান সহায়ক হবে। ২০২০ সালেও সূর্যে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছিল ইসরো। কিন্তু সে সময় করোনা মহামারির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।