রংপুর জেলা প্রতিনিধি
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে ৭০ শতাংশ মানুষ শেষ নৌকায় ভোট দেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা কথা বলতে পারি শেখ হাসিনার আমলে দেশে যত উন্নয়ন হয়েছে, যত বিষোদগার ও প্রোপাগান্ডা করা হোক না কেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে ৭০ শতাংশ মানুষ শেষ নৌকায় ভোট দেবে। মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের জয় হবে। মানুষ উন্নয়ন দেখছে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবে। সুষ্ঠু ভোট হলে ৭০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দেবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসা দল। অস্ত্রের মুখে আসেনি। আগুন সন্ত্রাস করে আসেনি। প্রশাসন আছে, সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করবো না। তবে দলের গায়ে হাত দিতে এলে ছেড়ে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি এত বিক্ষোভ সমাবেশ করছে, কিন্তু তাতে জনগণ নেই। বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুধিত ছিলেন, তাদের চাঙা করতে সমাবেশ করা হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এরশাদের ঘাঁটি বলে পরিচিত বলতে চাই না রংপুরকে। স্থানীয় সরকার আর জাতীয় নির্বাচনের ফল এক নয়। মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে, তারা ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আর এই উত্তরবঙ্গ থেকেই শুরু হবে নির্বাচনী ক্যাম্পেইন।
সড়কপথের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, এখানে আঞ্চলিক উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়ে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা আছে সরকারের।
রংপুরের মঙ্গাকে প্রধানমন্ত্রী জাদুঘরে পাঠিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বলেছেন ভয় না পেতে। উন্নয়নেরই জয় হবে। জয় বাংলার বাংলাদেশকে কোনো অপশক্তির হাতে আমরা তুলে দেবো না।
প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে রংপুরের আনাচে-কানাচে ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যন্ত সাড়া জেগেছে। তাতে মনে হয় এই সমাবেশ মহাসমাবেশে রূপ নেবে, এই জনসমুদ্র মহাসমুদ্রে রূপ নেবে। রংপুরে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ হবে বুধবার (২ আগস্ট)।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অস্ত্রবাজি করে ক্ষমতায় আসিনি, কাজেই আমরা অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল নই। আমরা আগুন সন্ত্রাসে বিশ্বাসী করি না। আমাদের শক্তি এ দেশের জনগণ।
সরকারের উন্নয়নে রংপুর পাল্টে গেছে দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রংপুর থেকে মঙ্গা বিদায় হয়ে জাদুঘরে চলে গেছে। আজ রংপুর অঞ্চলে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। জয়দেবপুর থেকে রংপুর পর্যন্ত ছয় লেন সড়ক হচ্ছে। যা কখনো মানুষ কল্পনাই করতে পারিনি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়ন করেছেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, দলের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেন। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর তিনি আবার রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতির আলোকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন রংপুরের পুত্রবধূ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।