Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হেরে যাবে ভেবেই আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হেরে যাবে ভেবেই আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। এ ছাড়া ভালো কাজ করে থাকলে জনগণ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেন।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে বলেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছে না। যে যত কথাই বলুক না কেন, মূল কারণ তো এটাই। আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। এমনও হতে পারে বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়ে আবার আপনাদেরই ভোট দেবে। দেশের মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা উপলব্ধি করে রাজনীতি করুন।

তিনি বলেন, টেলিভিশন মিডিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়া বলেন— তাদের একটি গুরু দায়িত্ব হচ্ছে, যারা দেশ পরিচালনা করে তাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হবে। জবাবদিহিতা করতে হবে জনগণের সামনে। এজন্যই পৃথিবীর প্রায় সব সরকার সংবাদপত্রকে ভয় পায়। মিডিয়ার হাতে বন্দুক নেই, টিয়ার গ্যাস নেই, সাউন্ড গ্রেনেড নেই। কিন্তু তাদের হাতে যে জিনিসটি আছে, সেটি হচ্ছে কলম। আজকে আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের সরকার যত শক্তিশালী হোক সেটাকে কিন্তু মিডিয়া ধাক্কা দিয়ে ফেলে যেতে পারে। এটার জন্য বন্দুকের দরকার হয় না।

আওয়ামী লীগকে সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, ৭ তারিখ অনেক দূরে। কথায় আছে, দিল্লি হনুজ দূর অস্ত। আপনারা ভাবুন, আলোচনায় বসুন, চিন্তা করুন, সংলাপ করুন। সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকের যে পরিবেশ পরিস্থিতি সেখানে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। কোন আধুনিক সমাজ এভাবে বসবাস করতে পারে। ১৭৭১ সাল থেকে আজকে আড়াইশো বছর পেরিয়ে গিয়ে আজকের সরকার কি মানব সভ্যতার পেছনের দিকে হাঁটছে? যেখানে ১৭৭১ সালে সংবাদপত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ভূমিকা ব্রিটিশ সরকার নিশ্চিত করেছিল। সেখানে আজকে আমরা সংবাদপত্রের টুটি চেপে ধরে আছে। তাদেরকে এই সরকার বলছে, তোমরা কথা বলতে পারবে না।

বিএফইউজের নির্বাচনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে একটি তামাশার নির্বাচন বর্জন করেছি, কিন্তু নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা জানি আজকের পরিবেশ পরিস্থিতি অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা জানি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আজকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে এজন্য তারা প্রশংসা পাবে। এবং আজকে আমরা সরকারের চোখে এটা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এই চরম পরিস্থিতির মধ্যে সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

‘আমি সরকারকে অনুরোধ করব আপনারা যেভাবে বানরের পিঠা বেচার নির্বাচনের আয়োজন করেছেন, নির্বাচনের আগেই সব সিটের ফলাফল ইতোমধ্যে নির্ধারণ করে ফেলেছেন। এখনো সময় আছে এই অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন এতে করে সুনাম আওয়ামী লীগেরই হবে।’

মঈন খান বলেন, আমি অত্যন্ত আহত হৃদয় নিয়ে এখানে এসেছি। আমি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। বিএনপি সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ সাংবাদিককে বিশ্বাস করি না। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় আজকে আওয়ামী লীগ সরকার এই বিভাজন তৈরি করেছে। এই সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘ করার জন্য বা চিরস্থায়ী করার জন্য জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না।

নিজেকে বোকা রাজনীতিবিদ জানিয়ে মঈন খান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে হিংসা সংঘাত এবং সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসতে পারি আপনারা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে আপনারা সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আ.লীগ কর্মীদের প্রবেশ, দুধে ধোয়া হলো বিএনপির অফিস

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হেরে যাবে ভেবেই আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হেরে যাবে ভেবেই আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। এ ছাড়া ভালো কাজ করে থাকলে জনগণ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেন।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে বলেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছে না। যে যত কথাই বলুক না কেন, মূল কারণ তো এটাই। আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। এমনও হতে পারে বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়ে আবার আপনাদেরই ভোট দেবে। দেশের মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা উপলব্ধি করে রাজনীতি করুন।

তিনি বলেন, টেলিভিশন মিডিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়া বলেন— তাদের একটি গুরু দায়িত্ব হচ্ছে, যারা দেশ পরিচালনা করে তাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হবে। জবাবদিহিতা করতে হবে জনগণের সামনে। এজন্যই পৃথিবীর প্রায় সব সরকার সংবাদপত্রকে ভয় পায়। মিডিয়ার হাতে বন্দুক নেই, টিয়ার গ্যাস নেই, সাউন্ড গ্রেনেড নেই। কিন্তু তাদের হাতে যে জিনিসটি আছে, সেটি হচ্ছে কলম। আজকে আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের সরকার যত শক্তিশালী হোক সেটাকে কিন্তু মিডিয়া ধাক্কা দিয়ে ফেলে যেতে পারে। এটার জন্য বন্দুকের দরকার হয় না।

আওয়ামী লীগকে সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, ৭ তারিখ অনেক দূরে। কথায় আছে, দিল্লি হনুজ দূর অস্ত। আপনারা ভাবুন, আলোচনায় বসুন, চিন্তা করুন, সংলাপ করুন। সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকের যে পরিবেশ পরিস্থিতি সেখানে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। কোন আধুনিক সমাজ এভাবে বসবাস করতে পারে। ১৭৭১ সাল থেকে আজকে আড়াইশো বছর পেরিয়ে গিয়ে আজকের সরকার কি মানব সভ্যতার পেছনের দিকে হাঁটছে? যেখানে ১৭৭১ সালে সংবাদপত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ভূমিকা ব্রিটিশ সরকার নিশ্চিত করেছিল। সেখানে আজকে আমরা সংবাদপত্রের টুটি চেপে ধরে আছে। তাদেরকে এই সরকার বলছে, তোমরা কথা বলতে পারবে না।

বিএফইউজের নির্বাচনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে একটি তামাশার নির্বাচন বর্জন করেছি, কিন্তু নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা জানি আজকের পরিবেশ পরিস্থিতি অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা জানি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আজকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে এজন্য তারা প্রশংসা পাবে। এবং আজকে আমরা সরকারের চোখে এটা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এই চরম পরিস্থিতির মধ্যে সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

‘আমি সরকারকে অনুরোধ করব আপনারা যেভাবে বানরের পিঠা বেচার নির্বাচনের আয়োজন করেছেন, নির্বাচনের আগেই সব সিটের ফলাফল ইতোমধ্যে নির্ধারণ করে ফেলেছেন। এখনো সময় আছে এই অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন এতে করে সুনাম আওয়ামী লীগেরই হবে।’

মঈন খান বলেন, আমি অত্যন্ত আহত হৃদয় নিয়ে এখানে এসেছি। আমি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। বিএনপি সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ সাংবাদিককে বিশ্বাস করি না। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় আজকে আওয়ামী লীগ সরকার এই বিভাজন তৈরি করেছে। এই সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘ করার জন্য বা চিরস্থায়ী করার জন্য জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না।

নিজেকে বোকা রাজনীতিবিদ জানিয়ে মঈন খান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে হিংসা সংঘাত এবং সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসতে পারি আপনারা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে আপনারা সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ।