সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেন, কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাই। সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাশটিলা-৭ ও সিলেট-১০ গ্যাস কূপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, গৃহস্থালিতে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে ব্যাপক অপচয় হচ্ছে। যেখানে শিল্প-কারখানা পর্যাপ্ত গ্যাস পাচ্ছে না, সেখানে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া অনুচিত। এই অপচয় রোধ করতে হলে গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, গ্যাস সবচেয়ে আন-অফিশিয়াল ব্যবহৃত হয় আবাসিকে। শিল্পকারখানায় যখন গ্যাসের ঘাটতি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যখন গ্যাস মেলে না, তখন বাসাবাড়িতে গ্যাস ব্যবহার আসলে একপ্রকার অপচয়। এতে যে ব্যয় হয়, তার সঙ্গে গ্যাস বিক্রির অর্থের বিস্তর ফারাক।
তিনি আরো বলেন, যেখানে গ্যাস উৎপাদন হয়, সেসব এলাকায় আমরা স্বল্পমূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। বেসরকারি সিলিন্ডার যেখানে ১ হাজার ৪৫৬ টাকা, সেখানে আমরা দিচ্ছি ৮০০ টাকায়। এটা আমরা এখনই চালু করব। ভবিষ্যতে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ আর দেওয়া হবে না।
উপদেষ্টা জানান, একসময় দেশে গ্যাসের ব্যবহার ছিল না বলেই আবাসিকে সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। এখন এলপিজির ব্যবহার বেড়েছে এবং সরকার এর দাম কমানোর চেষ্টা করছে। বাসাবাড়িতে এলপিজি ও শিল্প খাতে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহারের দিকেই যাবে সরকার।
সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আবাসিক গ্যাস সংযোগ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন হয়, সেসব অঞ্চলে সরকার স্বল্প মূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেবে।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উৎপাদন কমছে। একইসঙ্গে বাড়ছে এলএনজি আমদানি। উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি উপজেলার কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপ এলাকা, বাপেক্সের রিগ বিজয়-১২ ও ১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভারের রিগপ্যাড পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, ‘এই কূপগুলোর পাশ থেকেই গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। সিলেটের দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে বর্তমানে মোট ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে। আরও একটি কূপ খনন করা হবে, কাজ চলছে। আশা করছি সেখান থেকেও ৬-৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।’
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের (অপারেশন বিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মো. খালিদ আহমেদ, বাপেক্স/এসজিএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহেব আহমদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেহসানুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনির হোসেন, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ডিজিএম ফারুক আহমদ, এমএসটি প্ল্যান্টের ডিজিএম জাফর রায়হানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।