Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া প্রশাসনে কোনো রদবদল হবে না: ইসি আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া প্রশাসনে কোনো রদবদল করা হবে না।

বুধবার (২২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অযৌক্তিক কারণে কাউকে বদলি করবো না। তবে যদি যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে, অফিসার নিরপেক্ষ নন, তার আচরণ ও কাজে প্রমাণ হয়েছে, তখন বদলি করবো। যেমন জামালপুরের একজন জেলা প্রশাসককে আমরা বদলি করেছি, সে সময় সিডিউল ঘোষণা হয়নি। উনি একটি অনুষ্ঠানে একজন রাজনৈতিক দলের এমপির পক্ষে কথা বলেছেন। তখন তাকে বদলি করেছি।

প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য রদবদল করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, অনেকে নিজেদের ভাবনা থেকে এগুলো বলেন। আইনের ব্যাখ্যাটা হলো আরপিও অনুযায়ী পুলিশের কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং এর নিচে যত কর্মকর্তা আছেন, তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বদলি হতে পারবেন না। সরকার চাইলে এদের বদলি করতে পারবে না। সবাই আমাদের অধীনে এসেছে, এ আইনটি আপনারা কোথায় পেলেন? যদি এটা দেখাতে পারেন তাহলে আমরা এর উত্তর দিতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনের কাছে মনে হয়, কোনো বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর আচরণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিপক্ষে, তখন নির্বাচন কমিশন সে বিভাগ বা কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারে। রিটার্নিং অফিসার যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, এদের জেলার বাইরে বদলি করা যাবে না। পুরো সরকারি আইন ও রাষ্ট্র আমাদের অধীনে এসেছে, এটা আপনাদের কে বলেছে? এটা কোথায় পেয়েছেন। টকশো দিয়ে দেশ চলে না। সংবিধানে আছে নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য। আরওপিওতে আছে নির্বাচন কমিশন কোনো সংস্থা ও বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য।

রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা রদবদল কেন করবো? একটা যৌক্তিক কারণ বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। যদি অভিযোগ থাকে, এ কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন বা অমুকের পক্ষে কাজ করছেন, যদি সেই প্রমাণ থাকে, তখন আমরা ব্যবস্থা নেবো। তাছাড়া এত হাজার হাজার কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে প্রশাসনে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দেশ পরিচালনায় অথবা নির্বাচন পরিচালনায় যে একটা বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, এ দায়িত্ব কে নেবে? এখন কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করবো? একটা যুক্তি তো থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বদলি করলে তাদের টিএ বিল দিতে হবে, এই বিলের টাকাটা কে দেবে? প্রচুর টাকা লাগবে, কয়েকশ কোটি টাকা টিএ বিল লাগবে। আপনারা জানেন, একজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে তার ফ্যামিলির যাওয়া-আসার খরচ ও মালামাল পরিবহনের খরচ দিতে হয়। অনেক টাকা দিতে হয়। তারপরে বাসা পরিবর্তন করতে হয়। নতুন অফিসার এসে বলবে বাসায় রং করো, তার একটা খরচ আছে। কারণ আগের বাসায় তিনি থাকবেন না। এই টাকা কে দেবে? মুখ দিয়ে বদলি বললেই হয় না। বদলি করতে টাকা লাগে। হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই বদলি করবো যদি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে এবং প্রমাণ পাই।

কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভারত-রাশিয়াসহ ৩৪ দেশ ও চার সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা যেসব দেশের নির্বাচন কমিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, সেসব কমিশনের কোনো কমিশনার বা কর্মকর্তা যদি বাংলাদেশে আসেন, তা হলে এখানে তাদের যাতায়াতের খরচ, হোটেল ভাড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচ কমিশন ব্যবস্থা করবে। তবে তাদের বিমান খরচ বহন করা হবে না। এ ছাড়া অন্যান্য সংস্থা বা সাংবাদিকরা এলে তাদের সব খরচ নিজেদের বহন করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন বিক্রি করতে আচরণবিধি ভঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনোনয়ন ফরম কেনার সময় পার্টি অফিসে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকলাপ আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়বে না। কিন্তু মনোনয়ন ফরম কেনার সময় গাড়ি ও মোটরসাইকেলের শোডাউন করতে পারবে না।

তফসিল ঘোষণা পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের আচরণবিধি মানছেন না, এই বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। তারা এসব ব্যাপারে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য কেউ এখন ভোট চাইতে পারবে না।

তিনি বলেন, মনোনয়ন ফরম কেনার সময় অনেকে মিছিল করেছেন, এগুলোও আমাদের আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। পার্টি অফিসের ভেতরে তারা রাজনৈতিক কী কার্যক্রম করল না করল এটি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে পড়বে না। আর কোনো জায়গায় আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি না এগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখবেন। এলাকায় গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করে কেউ এখন কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবে না।

রাজশাহীতে একজন প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, এ বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা কমিশনে রিপোর্ট দিয়েছেন। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

বিরোধী দল অভিযোগ করছে সরকার নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে রেখেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, এই অভিযোগ আমি ১৯৭০ সাল থেকে শুনে আসছি। আমি তখন ছোট ছিলাম, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র। তখন ইত্তেফাক পত্রিকা পড়েই দেখতাম এসব অভিযোগ। এর পরে যত নির্বাচন বাংলাদেশে হয়ে এসেছে, এ ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এ অভিযোগ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া প্রশাসনে কোনো রদবদল হবে না: ইসি আলমগীর

প্রকাশের সময় : ০৩:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া প্রশাসনে কোনো রদবদল করা হবে না।

বুধবার (২২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অযৌক্তিক কারণে কাউকে বদলি করবো না। তবে যদি যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে, অফিসার নিরপেক্ষ নন, তার আচরণ ও কাজে প্রমাণ হয়েছে, তখন বদলি করবো। যেমন জামালপুরের একজন জেলা প্রশাসককে আমরা বদলি করেছি, সে সময় সিডিউল ঘোষণা হয়নি। উনি একটি অনুষ্ঠানে একজন রাজনৈতিক দলের এমপির পক্ষে কথা বলেছেন। তখন তাকে বদলি করেছি।

প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য রদবদল করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, অনেকে নিজেদের ভাবনা থেকে এগুলো বলেন। আইনের ব্যাখ্যাটা হলো আরপিও অনুযায়ী পুলিশের কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং এর নিচে যত কর্মকর্তা আছেন, তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বদলি হতে পারবেন না। সরকার চাইলে এদের বদলি করতে পারবে না। সবাই আমাদের অধীনে এসেছে, এ আইনটি আপনারা কোথায় পেলেন? যদি এটা দেখাতে পারেন তাহলে আমরা এর উত্তর দিতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনের কাছে মনে হয়, কোনো বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর আচরণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিপক্ষে, তখন নির্বাচন কমিশন সে বিভাগ বা কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারে। রিটার্নিং অফিসার যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, এদের জেলার বাইরে বদলি করা যাবে না। পুরো সরকারি আইন ও রাষ্ট্র আমাদের অধীনে এসেছে, এটা আপনাদের কে বলেছে? এটা কোথায় পেয়েছেন। টকশো দিয়ে দেশ চলে না। সংবিধানে আছে নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য। আরওপিওতে আছে নির্বাচন কমিশন কোনো সংস্থা ও বিভাগের সহায়তা চাইলে তারা দিতে বাধ্য।

রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা রদবদল কেন করবো? একটা যৌক্তিক কারণ বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। যদি অভিযোগ থাকে, এ কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন বা অমুকের পক্ষে কাজ করছেন, যদি সেই প্রমাণ থাকে, তখন আমরা ব্যবস্থা নেবো। তাছাড়া এত হাজার হাজার কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে প্রশাসনে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দেশ পরিচালনায় অথবা নির্বাচন পরিচালনায় যে একটা বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, এ দায়িত্ব কে নেবে? এখন কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করবো? একটা যুক্তি তো থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বদলি করলে তাদের টিএ বিল দিতে হবে, এই বিলের টাকাটা কে দেবে? প্রচুর টাকা লাগবে, কয়েকশ কোটি টাকা টিএ বিল লাগবে। আপনারা জানেন, একজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে তার ফ্যামিলির যাওয়া-আসার খরচ ও মালামাল পরিবহনের খরচ দিতে হয়। অনেক টাকা দিতে হয়। তারপরে বাসা পরিবর্তন করতে হয়। নতুন অফিসার এসে বলবে বাসায় রং করো, তার একটা খরচ আছে। কারণ আগের বাসায় তিনি থাকবেন না। এই টাকা কে দেবে? মুখ দিয়ে বদলি বললেই হয় না। বদলি করতে টাকা লাগে। হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই বদলি করবো যদি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে এবং প্রমাণ পাই।

কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভারত-রাশিয়াসহ ৩৪ দেশ ও চার সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা যেসব দেশের নির্বাচন কমিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, সেসব কমিশনের কোনো কমিশনার বা কর্মকর্তা যদি বাংলাদেশে আসেন, তা হলে এখানে তাদের যাতায়াতের খরচ, হোটেল ভাড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচ কমিশন ব্যবস্থা করবে। তবে তাদের বিমান খরচ বহন করা হবে না। এ ছাড়া অন্যান্য সংস্থা বা সাংবাদিকরা এলে তাদের সব খরচ নিজেদের বহন করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন বিক্রি করতে আচরণবিধি ভঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনোনয়ন ফরম কেনার সময় পার্টি অফিসে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকলাপ আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়বে না। কিন্তু মনোনয়ন ফরম কেনার সময় গাড়ি ও মোটরসাইকেলের শোডাউন করতে পারবে না।

তফসিল ঘোষণা পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের আচরণবিধি মানছেন না, এই বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। তারা এসব ব্যাপারে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য কেউ এখন ভোট চাইতে পারবে না।

তিনি বলেন, মনোনয়ন ফরম কেনার সময় অনেকে মিছিল করেছেন, এগুলোও আমাদের আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। পার্টি অফিসের ভেতরে তারা রাজনৈতিক কী কার্যক্রম করল না করল এটি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে পড়বে না। আর কোনো জায়গায় আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি না এগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখবেন। এলাকায় গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করে কেউ এখন কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবে না।

রাজশাহীতে একজন প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, এ বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা কমিশনে রিপোর্ট দিয়েছেন। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

বিরোধী দল অভিযোগ করছে সরকার নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে রেখেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, এই অভিযোগ আমি ১৯৭০ সাল থেকে শুনে আসছি। আমি তখন ছোট ছিলাম, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র। তখন ইত্তেফাক পত্রিকা পড়েই দেখতাম এসব অভিযোগ। এর পরে যত নির্বাচন বাংলাদেশে হয়ে এসেছে, এ ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এ অভিযোগ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।