সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
সিলেটের নাজিরবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক ও পিকআপের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।
বুধবার (৭ জুন) সকাল ৬টার দিকে সিলেটের নাজিরবাজার বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে দুজন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। মোট কতজন আহত হয়েছেন এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি।
এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ১৩ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, সুনামগঞ্জ জেলার আলীনগরের শিশু মিয়ার ছেলে হারিছ মিয়া (৫৫), নেত্রকোণার বারহাট্টা এলাকার মৃত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আওলাদ হোসেন (৪০), সুনামগঞ্জের দিরাই ভাটিপাড়ার সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. সৈয়ব আলী (২৭), একই এলাকার বাদশা মিয়া (২৫), দিরাই মধুপুর গ্রামের সুনাই মিয়ার ছেলে সাধু মিয়া (৪০), দিরাই ভাটিপাড়ার মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ মিয়া (৫০), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাবনগাওয়ের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহীন মিয়া (৪০), একই উপজেলার মুরাদপুরের হারুন মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (২৬), সুনামগঞ্জ দিরাই ভাটিপাড়ার মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নুর (৬০), শান্তিগঞ্জ তলের বনত গ্রামের মৃত আমান উল্লাহ তালুকদারের ছেলে আওলাদ হোসেন তালুকদার (৫০), সুনামগঞ্জের দিরাই পাতাইয়া কাইম গ্রামের জসিম মিয়ার ছেলে একলিম মিয়া (৫০), একই উপজেলার গছিয়া গ্রামের বারিক উল্লাহর ছেলে সিজিল মিয়া (৫৫) ও সিলেট নগরের ৬নং ওয়ার্ডের বাদামবাগিচা ১নং সড়কের ৫৯ নং বাসার আব্দুর রহিমের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৩)। জানা গেছে, নিহতরা সবাই নির্মাণশ্রমিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বালুবাহী একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা হতাহত হয়। আহত কয়েকজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে পার্শ্ববর্তী ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে যাচ্ছিলো একটি পিকআপভ্যান। সকাল ৬টার দিকে নাজিরবাজারে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপভ্যানে থাকা ১৫ জন শ্রমিক নিহত হন।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা গণমাধ্যমকে জানান, একটি বড় ট্রাক ও পিকআপভ্যানের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা সবাই নির্মাণশ্রমিক বলে জানা গেছে।
আহত ঠিকাদার শের ইসলাম জানান, তিনি ৩০ জন শ্রমিক নিয়ে ট্রাকে করে কাজে যাচ্ছিলেন। পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে তার ভাই সাহেদ নুরও রয়েছেন। বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডান দিকে এসে আমাদের ট্রাকে ধাক্কা দিয়েছিল।
এর আগে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে আসা একটি ট্রাক ও সিলেট থেকেআসা শ্রমিকবাহী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত হন এবং অপর একজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে সিলেট ফায়ার সার্ভিসের ৭টি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ চালায় এবং হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
সিলেট ফায়ার সার্ভিস সিলেটের সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, নির্মাণ শ্রমিক বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি ওসমানী নগরের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে নাজিরবাজার এলাকায় পৌঁছামাত্র বিপরীতগামী মাল বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর শ্রমিক বহনকারী পিকআপটি রাস্তার পাশে পড়ে যায় এবং ট্রাকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। নিহতদের সবাই পুরুষ।