Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটের কিনব্রিজে রাত নামলেই আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিলেট নগরের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া সুরমা নদী বিভক্ত করেছে উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের। সুরমা নদীর ওপর নির্মিত কিনব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন দুই পারের হাজার হাজার মানুষ যাওয়া-আসা করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই এখন লোকজন কিনব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন। সেতুর ২ পাশে ৫৬টি বাতি লাগানো থাকলেও জ্বলছে ৩টি বাতি। ১০ দিন ধরে চলছে এ অবস্থা।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর চারপাশে অন্ধকার। সেতু দিয়ে কিছু সময় পরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, মোটরসাইকেল যাওয়া-আসা করছে। এতে পথচারীরা কিছুটা আলো পাচ্ছেন। তবে যানবাহন চলাচল না করলে পথচারীদের অন্ধকারের মধ্যেই হাঁটতে হচ্ছে। সেতুর ২ পাশে ৫৬টি বাতি থাকলেও জ্বলছে মাত্র ৩টি বাতি। এর মধ্যে সেতুর উত্তর পাশে দুটি বাতি জ্বলছে এবং দক্ষিণ পাশে বাতি জ্বলছে মাত্র একটি।

সেতুর দক্ষিণ পারের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলার বাসিন্দা সঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, তিনি প্রতিদিন কিনব্রিজ দিয়ে যাওয়া-আসা করেন। হেঁটে ব্রিজ পার হতে পাঁচ মিনিট লাগে। কাজের জন্য অনেক সময় বেশ রাতে বাসায় ফিরতে হয় তাঁকে। কিন্তু ১০ দিন ধরে অন্ধকারের মধ্যে ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অন্ধকারে মুঠোফোনের আলো জ্বালিয়ে চলাচল করছেন। আগে সেতুতে অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন। এখন সেতুটি আরও নিরিবিলি এবং অন্ধকার থাকায় এ আতঙ্ক বেড়েছে।

পথচারীরা বলেন, অনেকে গভীর রাতেও সেতু দিয়ে যাওয়া-আসা করেন। এ সময় অনেকের সঙ্গে টাকা-পয়সা ছাড়াও দামি মালামাল থাকে। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সেতুতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, কিনব্রিজ ব্রিটিশ আমলে সুরমা নদীর ওপর প্রথম সেতু। ১৯৩৬ সালে নির্মিত ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতু পুরোটাই লোহার। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কিন এ সেতুর উদ্বোধন করেন। সেই থেকেই সেতুর নাম কিনব্রিজ।

পথচারী এবং দুই পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুর উত্তর পাশে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় রয়েছে। ব্যবসাকেন্দ্রও উত্তরপাশে। অন্যদিকে দক্ষিণ পারে সব পরিবহন এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রয়েছে। নগরে মধ্যে সুরমা নদীর ওপর আরও দুটি সেতু থাকলেও সবচেয়ে বেশি লোকজন চলাচল করেন এ কিনব্রিজ দিয়েই।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কিনব্রিজের নিচে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট এবং অবৈধ বিভিন্ন দোকানপাট ও স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগে ব্রিজের নিচে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক মানুষের আড্ডা জমত। এখন সেখানে সুনসান থাকে। এর মধ্যে ১০ দিন ধরে সেতুর বাতিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

দক্ষিণ সুরমার পাঠান পাড়ার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এমনটি হচ্ছে। তিনি দ্রুত সব বাতি ঠিক করার দাবি জানান।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. রুহুল আলম বলেন, শর্টসার্কিটে বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দ্রুতই সেগুলো মেরামত বা পরিবর্তন করা হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

সিলেটের কিনব্রিজে রাত নামলেই আতঙ্ক

প্রকাশের সময় : ১২:২৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সিলেট নগরের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া সুরমা নদী বিভক্ত করেছে উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের। সুরমা নদীর ওপর নির্মিত কিনব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন দুই পারের হাজার হাজার মানুষ যাওয়া-আসা করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই এখন লোকজন কিনব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন। সেতুর ২ পাশে ৫৬টি বাতি লাগানো থাকলেও জ্বলছে ৩টি বাতি। ১০ দিন ধরে চলছে এ অবস্থা।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর চারপাশে অন্ধকার। সেতু দিয়ে কিছু সময় পরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, মোটরসাইকেল যাওয়া-আসা করছে। এতে পথচারীরা কিছুটা আলো পাচ্ছেন। তবে যানবাহন চলাচল না করলে পথচারীদের অন্ধকারের মধ্যেই হাঁটতে হচ্ছে। সেতুর ২ পাশে ৫৬টি বাতি থাকলেও জ্বলছে মাত্র ৩টি বাতি। এর মধ্যে সেতুর উত্তর পাশে দুটি বাতি জ্বলছে এবং দক্ষিণ পাশে বাতি জ্বলছে মাত্র একটি।

সেতুর দক্ষিণ পারের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলার বাসিন্দা সঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, তিনি প্রতিদিন কিনব্রিজ দিয়ে যাওয়া-আসা করেন। হেঁটে ব্রিজ পার হতে পাঁচ মিনিট লাগে। কাজের জন্য অনেক সময় বেশ রাতে বাসায় ফিরতে হয় তাঁকে। কিন্তু ১০ দিন ধরে অন্ধকারের মধ্যে ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অন্ধকারে মুঠোফোনের আলো জ্বালিয়ে চলাচল করছেন। আগে সেতুতে অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন। এখন সেতুটি আরও নিরিবিলি এবং অন্ধকার থাকায় এ আতঙ্ক বেড়েছে।

পথচারীরা বলেন, অনেকে গভীর রাতেও সেতু দিয়ে যাওয়া-আসা করেন। এ সময় অনেকের সঙ্গে টাকা-পয়সা ছাড়াও দামি মালামাল থাকে। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সেতুতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, কিনব্রিজ ব্রিটিশ আমলে সুরমা নদীর ওপর প্রথম সেতু। ১৯৩৬ সালে নির্মিত ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতু পুরোটাই লোহার। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কিন এ সেতুর উদ্বোধন করেন। সেই থেকেই সেতুর নাম কিনব্রিজ।

পথচারী এবং দুই পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুর উত্তর পাশে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় রয়েছে। ব্যবসাকেন্দ্রও উত্তরপাশে। অন্যদিকে দক্ষিণ পারে সব পরিবহন এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রয়েছে। নগরে মধ্যে সুরমা নদীর ওপর আরও দুটি সেতু থাকলেও সবচেয়ে বেশি লোকজন চলাচল করেন এ কিনব্রিজ দিয়েই।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কিনব্রিজের নিচে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট এবং অবৈধ বিভিন্ন দোকানপাট ও স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগে ব্রিজের নিচে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক মানুষের আড্ডা জমত। এখন সেখানে সুনসান থাকে। এর মধ্যে ১০ দিন ধরে সেতুর বাতিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

দক্ষিণ সুরমার পাঠান পাড়ার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এমনটি হচ্ছে। তিনি দ্রুত সব বাতি ঠিক করার দাবি জানান।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. রুহুল আলম বলেন, শর্টসার্কিটে বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দ্রুতই সেগুলো মেরামত বা পরিবর্তন করা হবে।