আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে দেশটির বর্তমান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক ডজন।
শুক্রবার (৭ মার্চ) দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সরকারি নিরাপত্তা কর্মী, ২৮ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।
মুস্তাফা নামে লাতাকিয়ার একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, আসাদ মিলিশিয়ার অবশিষ্ট কয়েকটি দল আমাদের অবস্থান এবং চেকপয়েন্টে আক্রমণ করেছে। তারা জাবলেহ এলাকায় আমাদের অনেক টহলকে লক্ষ্য করে হামলা করেছে।
হামলার কারণে অনেকে শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে তিনি হতাহতের সংখ্যা জানাননি। মুস্তাফা জানান, মিলিশিয়াদের নির্মূল করতে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে।
আলাউইট সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় অঞ্চলে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। আলাউইট কর্মীরা জানিয়েছেন, আসাদের পতনের পর থেকে তাদের সম্প্রদায় সহিংসতা এবং আক্রমণের শিকার হয়েছে, বিশেষ করে হোমস এবং লাতাকিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনার পর “বিশাল সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে” সরকারি সৈন্যরা জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিরিয়া-ভিত্তিক স্টেপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সরকার-সমর্থিত বাহিনী “প্রায় ৭০” আসাদ অনুগত সাবেক সরকারি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং জাবলেহ ও তার আশপাশের এলাকা থেকে ২৫ জনেরও বেশি যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে।
তবে পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় আসাদের প্রতি অনুগত ২৮ জন বন্দুকধারী নিহত হয়েছে। এছাড়া সরকারি বাহিনী লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে বলেও জানানো হয়েছে। তবে বিবিসি স্বাধীনভাবে এসব পরিসংখ্যান যাচাই করতে পারেনি।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে আসাদের অনুগতদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেছেন।
তিনি বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবার কেউ কেউ খুনি ও অপরাধীদের রক্ষায় পালিয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে জোর দিচ্ছে। তাদের এই পছন্দটি স্পষ্ট: অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য দেশের এই অঞ্চলটি একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দেশের দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেখানে ড্রুজ বাহিনীর সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে।