Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সালাম মুর্শেদীর দখল করা বাড়িকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত যে বাড়িটি দখলে রেখেছেন, তা পরিত্যক্ত উল্লেখ করে ওই সম্পত্তি সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে এ সংক্রান্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। রায়ে বলা হয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সরকারকে বাড়িটি দখলে নিতে হবে।

বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি দাবি করে এবং এটি মুর্শেদী অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন—এ অভিযোগ তুলে ব্যারিস্টার সুমন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার নথি অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি)—বর্তমানে রাজউক—ঢাকা রি-রোলিং মিলসের নামে প্লটটি বরাদ্দ দেয়। ১৯৭০ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা পাকিস্তানি হওয়ায় দেশ ত্যাগ করেন। তখন মো. ওয়াছিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মিলসের অ্যাটর্নি পরিচয় দিয়ে প্লটটি দখলে নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন।

১৯৭২ সালের জুনে ওয়াছিউর ডিআইটিকে জানান, প্লটটি তার স্ত্রী মালেকা রহমানের নামে তিনি ক্রয় করেছেন। কিন্তু একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি আরেকটি আবেদন করে দাবি করেন—প্লটটি তিনি সরাসরি ঢাকা রি-রোলিং মিলসের কাছ থেকেই কিনেছেন। পরস্পরবিরোধী এসব দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করেছে রায়।

রাজউকের সংরক্ষিত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্লটটির ১৯৬৯ সালের বিক্রয় চুক্তির (যা রেজিস্ট্রি হয়নি) একটি সত্যায়িত কপি মালেকা রহমানের নামে রয়েছে। আর পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নথিতে সফিক আহমেদ নামে একজনকে মিলসের অ্যাটর্নি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, তার অ্যাটর্নি হওয়ার কোনো বৈধ প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে রাষ্ট্রীয় দখলে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দুর্নীতি দমনে ধারাবাহিক রেকর্ড কেবল বিএনপিরই রয়েছে : তারেক রহমান

সালাম মুর্শেদীর দখল করা বাড়িকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ১২:০২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত যে বাড়িটি দখলে রেখেছেন, তা পরিত্যক্ত উল্লেখ করে ওই সম্পত্তি সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে এ সংক্রান্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। রায়ে বলা হয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সরকারকে বাড়িটি দখলে নিতে হবে।

বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি দাবি করে এবং এটি মুর্শেদী অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন—এ অভিযোগ তুলে ব্যারিস্টার সুমন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার নথি অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি)—বর্তমানে রাজউক—ঢাকা রি-রোলিং মিলসের নামে প্লটটি বরাদ্দ দেয়। ১৯৭০ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা পাকিস্তানি হওয়ায় দেশ ত্যাগ করেন। তখন মো. ওয়াছিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মিলসের অ্যাটর্নি পরিচয় দিয়ে প্লটটি দখলে নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন।

১৯৭২ সালের জুনে ওয়াছিউর ডিআইটিকে জানান, প্লটটি তার স্ত্রী মালেকা রহমানের নামে তিনি ক্রয় করেছেন। কিন্তু একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি আরেকটি আবেদন করে দাবি করেন—প্লটটি তিনি সরাসরি ঢাকা রি-রোলিং মিলসের কাছ থেকেই কিনেছেন। পরস্পরবিরোধী এসব দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করেছে রায়।

রাজউকের সংরক্ষিত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্লটটির ১৯৬৯ সালের বিক্রয় চুক্তির (যা রেজিস্ট্রি হয়নি) একটি সত্যায়িত কপি মালেকা রহমানের নামে রয়েছে। আর পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নথিতে সফিক আহমেদ নামে একজনকে মিলসের অ্যাটর্নি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, তার অ্যাটর্নি হওয়ার কোনো বৈধ প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে রাষ্ট্রীয় দখলে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।