Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সার্জেন্ট মোর্শেদার সহায়তায় ফুটপাতে শিশুর জন্ম

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা নতুন বাজারের ফুটপাতে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক মা। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই ভালো আছেন। রাস্তায় হঠাৎ প্রসব বেদনা ওঠায় ওই নারী অসহায় বোধ করেন। তখন যেন চোখে অন্ধকার দেখছিলেন তিনি। তবে এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়ান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) ট্রাফিক বিভাগের কর্তব্যরত সার্জেন্টর মোর্শেদা।

খবর পেয়েই অন্য এক নারী কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান প্রসব বেদনায় কাতর নারীর কাছে। এরপর বাসের টিকিট কাউন্টারের ছাতা নিয়ে ওই রাস্তার এক পাশে গড়ে তোলেন নিরাপদ বেষ্টনী। কিছু সময় পর স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নেয় ফুটফুটে এক শিশু।

শুধু তাই নয়, সন্তান জন্ম নেওয়ার পর নবজাতকের নাড়ি কাটা নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। তখনো আবার এগিয়ে আসেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দ্রুত ওই নারীসহ তার শিশুকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরে হাসপাতালে নবজাতকের নাড়ি কাটা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই নারী ও শিশু দুজনই ভালো আছেন।

শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজুর রহমান রিয়েল তার ফেসবুক আইডিতে কয়েকটি ছবিসহ এমন তথ্য পোস্ট করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। একজন মায়ের পাশে এভাবে ছুটে যাওয়ার জন্য সার্জেন্ট মোর্শেদাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সবাই।

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল তার পোস্টে লিখেছেন, প্রতিদিনের মতো ট্রাফিক ডিউটি করছিলেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দায়িত্বরত অবস্থায় ঢাকার চাকা পরিবহন কাউন্টারের একজন স্টাফ তাকে বলেন, পাশেই একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ কথা শোনার পর একটুও দেরি না করে তিনি দ্রুত ট্রাফিক কনস্টেবল তানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, সেই নারীর প্রসব ব্যথা উঠেছে। তিনি অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে রাস্তার পাশে মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন।

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল আরও লেখেন, আশপাশে কোনো ভবনও ছিল না যন্ত্রণাকাতর ওই নারীকে নেওয়ার মতো। এ অবস্থা দেখে সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কনস্টেবল তানিয়া দ্রুত বাস কাউন্টার থেকে কয়েকটি ছাতা নিয়ে আসেন। এ সময় চারপাশ ঘিরে দিয়ে এবং ওই নারীকে বাচ্চা প্রসবে সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পর একটা ফুটফুটে বাচ্চা জন্ম নেয়।

তিনি লেখেন, কিন্তু তখনো নবজাতকের নাড়ি কাটা হয়নি। সার্জেন্ট মোর্শেদা জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করে দ্রুত জরুরি অ্যাম্বুলেন্স এনে নবজাতকসহ প্রসূতি মাকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছেন।

হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, এরকম মহানুভবতা ও ভালো কাজের জন্য সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কনস্টেবল তানিয়াকে ধন্যবাদ জানাই।

এ বিষয়ে সার্জেন্ট মোর্শেদা বলেন, আমি সড়কের যানজট কমানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে এক ব্যক্তি এসে জানান নতুন বাজারে ফুটওভার ব্রিজের নিচে একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। আমি দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর তাকে আগলে ধরি। এক পথচারী নারীকে সহায়তা করতে অনুরোধ করি। অল্প সময়ের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়।

তিনি বলেন, পরে আমি অ্যাম্বুলেন্স কল করে পাশের উপশম হেলথ পয়েন্টে পাঠাই। মোটরসাইকেলে চেপে আমিও অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে যাই। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সার্জেন্ট মোর্শেদার সহায়তায় ফুটপাতে শিশুর জন্ম

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা নতুন বাজারের ফুটপাতে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক মা। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই ভালো আছেন। রাস্তায় হঠাৎ প্রসব বেদনা ওঠায় ওই নারী অসহায় বোধ করেন। তখন যেন চোখে অন্ধকার দেখছিলেন তিনি। তবে এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়ান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) ট্রাফিক বিভাগের কর্তব্যরত সার্জেন্টর মোর্শেদা।

খবর পেয়েই অন্য এক নারী কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান প্রসব বেদনায় কাতর নারীর কাছে। এরপর বাসের টিকিট কাউন্টারের ছাতা নিয়ে ওই রাস্তার এক পাশে গড়ে তোলেন নিরাপদ বেষ্টনী। কিছু সময় পর স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নেয় ফুটফুটে এক শিশু।

শুধু তাই নয়, সন্তান জন্ম নেওয়ার পর নবজাতকের নাড়ি কাটা নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। তখনো আবার এগিয়ে আসেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দ্রুত ওই নারীসহ তার শিশুকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরে হাসপাতালে নবজাতকের নাড়ি কাটা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই নারী ও শিশু দুজনই ভালো আছেন।

শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজুর রহমান রিয়েল তার ফেসবুক আইডিতে কয়েকটি ছবিসহ এমন তথ্য পোস্ট করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। একজন মায়ের পাশে এভাবে ছুটে যাওয়ার জন্য সার্জেন্ট মোর্শেদাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সবাই।

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল তার পোস্টে লিখেছেন, প্রতিদিনের মতো ট্রাফিক ডিউটি করছিলেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দায়িত্বরত অবস্থায় ঢাকার চাকা পরিবহন কাউন্টারের একজন স্টাফ তাকে বলেন, পাশেই একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ কথা শোনার পর একটুও দেরি না করে তিনি দ্রুত ট্রাফিক কনস্টেবল তানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, সেই নারীর প্রসব ব্যথা উঠেছে। তিনি অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে রাস্তার পাশে মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন।

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল আরও লেখেন, আশপাশে কোনো ভবনও ছিল না যন্ত্রণাকাতর ওই নারীকে নেওয়ার মতো। এ অবস্থা দেখে সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কনস্টেবল তানিয়া দ্রুত বাস কাউন্টার থেকে কয়েকটি ছাতা নিয়ে আসেন। এ সময় চারপাশ ঘিরে দিয়ে এবং ওই নারীকে বাচ্চা প্রসবে সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পর একটা ফুটফুটে বাচ্চা জন্ম নেয়।

তিনি লেখেন, কিন্তু তখনো নবজাতকের নাড়ি কাটা হয়নি। সার্জেন্ট মোর্শেদা জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করে দ্রুত জরুরি অ্যাম্বুলেন্স এনে নবজাতকসহ প্রসূতি মাকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছেন।

হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, এরকম মহানুভবতা ও ভালো কাজের জন্য সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কনস্টেবল তানিয়াকে ধন্যবাদ জানাই।

এ বিষয়ে সার্জেন্ট মোর্শেদা বলেন, আমি সড়কের যানজট কমানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে এক ব্যক্তি এসে জানান নতুন বাজারে ফুটওভার ব্রিজের নিচে একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। আমি দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর তাকে আগলে ধরি। এক পথচারী নারীকে সহায়তা করতে অনুরোধ করি। অল্প সময়ের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়।

তিনি বলেন, পরে আমি অ্যাম্বুলেন্স কল করে পাশের উপশম হেলথ পয়েন্টে পাঠাই। মোটরসাইকেলে চেপে আমিও অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে যাই। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ।