নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বুধবার (১৯ এপ্রিল) সরকারি ছুটি হলেও মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) অফিস শেষে বিকেল থেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। তবে, বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে সায়েদাবাদে বেড়েছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। তবে নির্ধারিত সময়ে বাস না ছাড়া, বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, বাস কাউন্টারগুলোতে রয়েছে ঘুরমুখো মানুষের ভিড়। অনেকে টিকিট না পেয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ সায়েদাবাদে গাড়ি না পেয়ে এগোচ্ছেন ধোলাইপাড়ের দিকে।
বাস কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, মূলত রাজধানীর কিছু কিছু জায়গায় জ্যাম রয়েছে। ফলে, গাড়ি আসতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় মানুষের সমস্যা হচ্ছে।
যাত্রী আশিক মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জ যাওয়ার জন্য আল মোবারকা পরিবহনে সাড়ে ৮টার বাসের টিকিট কেটেছি। এখন সাড়ে ৯টা বাজে। বাস এখনও ছাড়েনি। ভাড়ার বিষয়ে বলেন, অন্য সময়ে ভাড়া ৬০০ টাকা নিলেও ঈদের কারণে সাড়ে ৭০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। এসব বিষয় দেখার কেউ নেই।
বরিশাল যাওয়ার জন্য সাকুরা পরিবহনের বাসের টিকিট কেটেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টার বাসের টিকিট কেটেছি। এখনও নাকি গাড়িই আসেনি। কখন গাড়ি ছাড়বে তাও জানি না। তবু কষ্ট লাগছে না। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে পারবো এটাই আনন্দ।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে বরগুনায় ঈদ করতে যাচ্ছেন ঠিকাদার বশির আহমেদ। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ইসলামিয়া পরিবহনের বাসের টিকিট কেটেছি। এখন ১০টা বাজে। তবু বাস আসেনি। কী আর করার, অপেক্ষা করছি। বাড়ি তো যেতেই হবে।
সায়েদাবাদে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. রানা বলেন, ভোর থেকেই মহাসড়কে জ্যাম। থেমে থেমে বাস চলছে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আজ ভোর থেকে যাত্রীরা ভিড় জমিয়েছেন। বিশেষ করে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চাপ বেশি। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে ওই অঞ্চলের মানুষ বাসে যেতে বেশি আগ্রহী।
হিমাচল পরিবহনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা আগের মতো যাত্রী পাচ্ছি না। এখন অনেক গাড়ি কমলাপুর টিটিপাড়া থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে চলে যায়। তাই যাত্রীরা সেখানে চলে যায়। সায়েদাবাদে যানজট থাকে তাই মানুষ এখন ওদিক থেকেই ফ্লাইওভার দিয়ে চলে যায়। আগের চেয়ে টিকিট বিক্রি এখন অনেক কম। এখন ঈদের সময়ও যাত্রী সেভাবে পাই না।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার স্টাফ মো. ওসমান বলেন, সায়েদাবাদে আসা গাড়িগুলো জ্যামের মুখে পড়ছে। তাই কাউন্টারে গাড়ি আসতে লেট করছে। দেখা গেছে ঢাকার বাইরে থেকে দ্রুত গাড়ি চলে এলেও সায়েদাবাদে এসে বিভিন্ন মোড়ে জ্যামে গাড়ি বসে থাকে। এতে যাত্রীদেরও ভোগান্তি হয়।
ঝিনাইদহগামী যাত্রী সামসুল ইসলাম বলেন, আমি উত্তরা থেকে সায়েদাবাদে এসেছি, যাবো ঝিনাদাহ। খুব সকাল সকাল বের হয়ে এখানে এসেছি। বাড়িতে মা আছে, তাই তীব্র গরমেও বাড়ি যাচ্ছি। মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে এইটুকু কষ্ট করতেই হবে।
বরিশালগামী যাত্রী সুমন মোল্লা বলেন, আমি সকালে এসেছি। কোনো কোনো গাড়িতে ভাড়া বেশি চাওয়া হচ্ছে। তাই অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। ভাড়া অন্যান্য সময় পাঁচশত টাকা হলেও এখন ৭০০/৮০০ টাকা চাইছে। সেজন্য দাঁড়িয়ে আছি, কমে পেলে গাড়িতে উঠবো।
জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের সায়েদাবাদ জোনের এসি বাহাউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, বুধবার (১৯ এপ্রিল) ঘরমুখো মানুষের প্রচণ্ড চাপ। সড়কে চাপ থাকায় গাড়ি খুব ধীরে ধীরে চলছে। কোথাও যেন যানজটের সৃষ্টি না হয় সেই চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।