Dhaka বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে পরিকল্পনা চলছে : রিজভী

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০১:২৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৯৯ জন দেখেছেন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে অনেক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জনগণ জানে কোথায় থেকে এসব করা হচ্ছে, তাই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মানুষ দুর্গাপূজা পালন করেছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে একটি ধর্মভিত্তিক দলের অনুগতদের বসানো হচ্ছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আজকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তৈরি করার জন্য নানাবিধ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এদেশের জনগণ, এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ, এদেশের হিন্দু মুসলমান জনগোষ্ঠী, সবাই টের পেয়েছে কোথা থেকে কি হচ্ছে। তাই সবাই একত্রিতভাবে এবারের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের দুর্গাপূজা হয়েছে। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাদের উৎসব পালন করেছে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ, হিন্দু-মুসলমান, আলেম-ওলামা, মসজিদের মুয়াজ্জিন, মসজিদের ইমাম, মাদরাসার ছাত্র প্রত্যেকেই পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এইটা হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য। এটি সম্প্রীতির ঐতিহ্য। আমাদের নেতা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা দীর্ঘদিন সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। তাই আমাদের মধ্যে কেউ কোনো বিভাজন তৈরি করতে পারবে না। তাদের নিজের দেশে তারা যাই করুক যতই অন্ধকার নামিয়ে নিয়ে আসুক কিন্তু আমাদেরকে সেটি করতে পারবে না।

রিজভী বলেন, নতুন ইস্যু তৈরি করে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। ভ্রান্ত কথা বলে মিথ্যা পরিসংখ্যান দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। গত ১৫ বছর কারা আপোষহীন লড়াই করেছে তা সাধারণ মানুষ জানে।

দুর্গাপূজায় ড. ইউনূসের মুখাকৃতি দিয়ে ‘অসুর’ বানিয়ে ভারত নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেলাম যে, ভারতে ড. ইউনূসসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার মূর্তি বানানো হয়েছে। এগুলো অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয়, এটা একেবারেই একটা অপসংস্কৃতির পরিচয়। ভারতে আমরা শুনেছি সঙ্গীত শিল্পকলার এত চর্চা হয়, সেই দেশ এত নিম্নরুচির পরিচয় দেবে এটা আমরা কল্পনা করতে পারি না।

রিজভী বলেন, আজকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তৈরি করার জন্য নানাবিধ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এদেশের জনগণ, এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ, এদেশের হিন্দু মুসলমান জনগোষ্ঠী, সবাই টের পেয়েছে কোথা থেকে কি হচ্ছে। তাই সবাই একত্রিতভাবে এবারের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের দুর্গাপূজা হয়েছে। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাদের উৎসব পালন করেছে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে।

ফেব্রুয়ারিতে অবাধ- সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণ প্রত্যাশা করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যে সময় পেয়েছেন এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা মোটেই কঠিন কোনো কাজ নয়। আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশন সেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন এবং জনগণ প্রস্তুত। জনগণ ভোট দিতে প্রস্তুত। সুতরাং নতুন কোনো ইস্যু তৈরি করে জনগনকে এবং মানুষের চোখকে বিভ্রান্ত করার যারা চেষ্টা করছেন তারাও জনগণের কাছে আজকে ধরা খেয়ে যাবেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ সরকার। সে কোনো দিকে হেলবে না, কোনো দিকে যাবে না এমন প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আজকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় একটি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলের লোকজনদেরকে খুব কৌশলে নানাভাবে বসানো হচ্ছে, বসানো হয়েছে। এটা দিয়ে কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। জনগণ প্রত্যক্ষ করছে, আমরাও প্রত্যক্ষ করছি। কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে এই সব বিশেষ রাজনৈতিক দলের মনোভাবাপন্ন প্রশাসক এবং আমলাদেরকে বসানো হচ্ছে। তারা কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে দেবে না। তাই আমি বলবো, আপনারা এমন ব্যক্তিদের নিয়োজিত করুন যারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। কোনো দলের আজ্ঞাবহ হবে না।

জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারাবাহিকতা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে জাতিকে একদলীয় দুঃশাসন থেকে মুক্ত করেছিল। এরপর বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আর ৫ আগস্টের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারেক রহমান জাতিকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করেছেন।’

আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীরা নানা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বরং তা বাস্তবায়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সব অন্ধকার দূর করে জাতীয়তাবাদের পতাকা উঁচু রাখবে— এটাই বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে পরিকল্পনা চলছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০১:২৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে অনেক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জনগণ জানে কোথায় থেকে এসব করা হচ্ছে, তাই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মানুষ দুর্গাপূজা পালন করেছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে একটি ধর্মভিত্তিক দলের অনুগতদের বসানো হচ্ছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আজকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তৈরি করার জন্য নানাবিধ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এদেশের জনগণ, এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ, এদেশের হিন্দু মুসলমান জনগোষ্ঠী, সবাই টের পেয়েছে কোথা থেকে কি হচ্ছে। তাই সবাই একত্রিতভাবে এবারের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের দুর্গাপূজা হয়েছে। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাদের উৎসব পালন করেছে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ, হিন্দু-মুসলমান, আলেম-ওলামা, মসজিদের মুয়াজ্জিন, মসজিদের ইমাম, মাদরাসার ছাত্র প্রত্যেকেই পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এইটা হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য। এটি সম্প্রীতির ঐতিহ্য। আমাদের নেতা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা দীর্ঘদিন সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। তাই আমাদের মধ্যে কেউ কোনো বিভাজন তৈরি করতে পারবে না। তাদের নিজের দেশে তারা যাই করুক যতই অন্ধকার নামিয়ে নিয়ে আসুক কিন্তু আমাদেরকে সেটি করতে পারবে না।

রিজভী বলেন, নতুন ইস্যু তৈরি করে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। ভ্রান্ত কথা বলে মিথ্যা পরিসংখ্যান দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। গত ১৫ বছর কারা আপোষহীন লড়াই করেছে তা সাধারণ মানুষ জানে।

দুর্গাপূজায় ড. ইউনূসের মুখাকৃতি দিয়ে ‘অসুর’ বানিয়ে ভারত নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেলাম যে, ভারতে ড. ইউনূসসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার মূর্তি বানানো হয়েছে। এগুলো অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয়, এটা একেবারেই একটা অপসংস্কৃতির পরিচয়। ভারতে আমরা শুনেছি সঙ্গীত শিল্পকলার এত চর্চা হয়, সেই দেশ এত নিম্নরুচির পরিচয় দেবে এটা আমরা কল্পনা করতে পারি না।

রিজভী বলেন, আজকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তৈরি করার জন্য নানাবিধ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এদেশের জনগণ, এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ, এদেশের হিন্দু মুসলমান জনগোষ্ঠী, সবাই টের পেয়েছে কোথা থেকে কি হচ্ছে। তাই সবাই একত্রিতভাবে এবারের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের দুর্গাপূজা হয়েছে। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাদের উৎসব পালন করেছে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে।

ফেব্রুয়ারিতে অবাধ- সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণ প্রত্যাশা করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যে সময় পেয়েছেন এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা মোটেই কঠিন কোনো কাজ নয়। আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশন সেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন এবং জনগণ প্রস্তুত। জনগণ ভোট দিতে প্রস্তুত। সুতরাং নতুন কোনো ইস্যু তৈরি করে জনগনকে এবং মানুষের চোখকে বিভ্রান্ত করার যারা চেষ্টা করছেন তারাও জনগণের কাছে আজকে ধরা খেয়ে যাবেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ সরকার। সে কোনো দিকে হেলবে না, কোনো দিকে যাবে না এমন প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আজকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় একটি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলের লোকজনদেরকে খুব কৌশলে নানাভাবে বসানো হচ্ছে, বসানো হয়েছে। এটা দিয়ে কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। জনগণ প্রত্যক্ষ করছে, আমরাও প্রত্যক্ষ করছি। কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে এই সব বিশেষ রাজনৈতিক দলের মনোভাবাপন্ন প্রশাসক এবং আমলাদেরকে বসানো হচ্ছে। তারা কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে দেবে না। তাই আমি বলবো, আপনারা এমন ব্যক্তিদের নিয়োজিত করুন যারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। কোনো দলের আজ্ঞাবহ হবে না।

জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারাবাহিকতা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে জাতিকে একদলীয় দুঃশাসন থেকে মুক্ত করেছিল। এরপর বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আর ৫ আগস্টের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারেক রহমান জাতিকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করেছেন।’

আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীরা নানা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বরং তা বাস্তবায়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সব অন্ধকার দূর করে জাতীয়তাবাদের পতাকা উঁচু রাখবে— এটাই বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’