Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরীর চিটাগং ক্লাব লিমিটেডের গেস্ট হাউজ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম এ হারুন অর রশিদ চিটাগং ক্লাব লিমিটেডের গেস্টহাউজ কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার ৩০৮ নম্বর রুমে গত ৩ আগস্ট বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তার মামা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও সাখাওয়াত হোসেনের নন্দনকাননের বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। সাক্ষাৎ শেষে পুনরায় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে আবার গেস্টহাউজে আসেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় গেস্টহাউজের লোকজন দরজা নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে গেস্টহাউজের লোকজন রুমের জানালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং তাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। এরপর চিকিৎসক এসে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও সিআইডি পর্যবেক্ষণ করছে। তার মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। তার মরদেহ সুরহতাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হবে।

হারুন অর রশিদের ভাগনে সাংবাদিক আরিচ আহমেদ শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে মারা যাওয়া ফুফাতো ভাই অধুনালুপ্ত দৈনিক বঙ্গবার্তার সম্পাদক কে এম শাখাওয়াত হোসেনের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে রোববার (৩ জুলাই) চট্টগ্রামে আসেন। প্রয়াত শাখাওয়াত হোসেনের বাসায় রাতের খাবার খেয়ে রাত্রিযাপন করতে রাত ১০টায় চট্টগ্রাম ক্লাবে যান। সকালে নির্ধারিত সময়ে প্রাতঃরাশে না যাওয়ায় ক্লাবের কর্মকর্তারা ডাকাডাকি করেন। পরে তার মুঠোফোনে ফোন করে রিং বাজলেও সাড়া দেননি। পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুললে মৃত অবস্থায় পান। পরে পুলিশ ও সেনাদপ্তরে খবর দেওয়া হলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ও সিএমপি পুলিশ ঘটনাস্থলে যান।

তিনি ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন। এম হারুন-অর-রশীদ পাকিস্তানের কাকুলস্থ মিলিটারি একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন।

১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই রেজিমেন্টের বাঙালি সেনারা শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন।
২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন। একই দিন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০০২ সালের ১৬ জুন জেনারেল হাসান মশহুদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের মাধ্যমে তিনি অবসরে যান।

অবসরের পর তিনি কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড আছে বলেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে : ইসি সচিব

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ০৩:২৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরীর চিটাগং ক্লাব লিমিটেডের গেস্ট হাউজ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম এ হারুন অর রশিদ চিটাগং ক্লাব লিমিটেডের গেস্টহাউজ কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার ৩০৮ নম্বর রুমে গত ৩ আগস্ট বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তার মামা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও সাখাওয়াত হোসেনের নন্দনকাননের বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। সাক্ষাৎ শেষে পুনরায় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে আবার গেস্টহাউজে আসেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় গেস্টহাউজের লোকজন দরজা নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে গেস্টহাউজের লোকজন রুমের জানালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং তাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। এরপর চিকিৎসক এসে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও সিআইডি পর্যবেক্ষণ করছে। তার মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। তার মরদেহ সুরহতাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হবে।

হারুন অর রশিদের ভাগনে সাংবাদিক আরিচ আহমেদ শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে মারা যাওয়া ফুফাতো ভাই অধুনালুপ্ত দৈনিক বঙ্গবার্তার সম্পাদক কে এম শাখাওয়াত হোসেনের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে রোববার (৩ জুলাই) চট্টগ্রামে আসেন। প্রয়াত শাখাওয়াত হোসেনের বাসায় রাতের খাবার খেয়ে রাত্রিযাপন করতে রাত ১০টায় চট্টগ্রাম ক্লাবে যান। সকালে নির্ধারিত সময়ে প্রাতঃরাশে না যাওয়ায় ক্লাবের কর্মকর্তারা ডাকাডাকি করেন। পরে তার মুঠোফোনে ফোন করে রিং বাজলেও সাড়া দেননি। পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুললে মৃত অবস্থায় পান। পরে পুলিশ ও সেনাদপ্তরে খবর দেওয়া হলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ও সিএমপি পুলিশ ঘটনাস্থলে যান।

তিনি ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন। এম হারুন-অর-রশীদ পাকিস্তানের কাকুলস্থ মিলিটারি একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন।

১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই রেজিমেন্টের বাঙালি সেনারা শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন।
২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন। একই দিন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০০২ সালের ১৬ জুন জেনারেল হাসান মশহুদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের মাধ্যমে তিনি অবসরে যান।

অবসরের পর তিনি কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।