Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনাম ৬ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে হকার সাগর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম তার দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্র পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ডা. এনামুর রহমান কোনো রাজনীতিবিদ নন। তিনি রানা প্লাজা ধসের সময় তার এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা কার্যক্রমের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এ পরিচিতির সুবাদে তার ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সখ্যতা তৈরি হয়। এরপর বিনাভোটে এমপি নির্বাচিত হন এবং তাকে প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছেন এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এই দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, এজন্য তার দোসর ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তাই এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে তার তদন্ত কর্মকর্তার চাওয়া ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

এরপর আসামিপক্ষে আইনজীবী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, সবশেষ সংসদে তিনি এমপি বা মন্ত্রী কিছু ছিলেন না। তার নির্বাচনী এলাকাও এই মামলার ঘটনাস্থল মিরপুর এলাকায় নয়। তিনি হার্টের রোগী। এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। তাই রিমান্ড বাতিলসহ জামিনের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হোক।

শুনানির এ পর্যায়ে ডা. এনামুর রহমান বলেন, আগস্টে এই ঘটনার সময় থেকে আমি আমার হাসপাতালে নির্দেশ দিয়েছিলাম, এই ঘটনায় যারা আহত আসবে তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে। আগস্ট থেকে বিগত চার মাসে আমার এনাম মেডিকেলে ২৯০ জন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে ভর্তি রেখে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছি। এছাড়া বহির্বিভাগে আরও ৫৭৬ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের এই রেজিস্ট্রার দেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলও বিস্মিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারিতে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর আমি হাসপাতাল থেকে বের হইনি। কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমেও অংশ নেইনি। অনেকটা অসুস্থতা ও অনেকটা মন খারাপ থেকে এভাবেই ছিলাম। কোনোভাবেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন বা মামলায় বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো অংশগ্রহণ ছিল না।

এর আগে রোববার (২৬ জানুয়ারি) মধ্যরাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন আসামিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। মামলায় এনামুর ৩০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনাম ৬ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে হকার সাগর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম তার দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্র পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ডা. এনামুর রহমান কোনো রাজনীতিবিদ নন। তিনি রানা প্লাজা ধসের সময় তার এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা কার্যক্রমের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এ পরিচিতির সুবাদে তার ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সখ্যতা তৈরি হয়। এরপর বিনাভোটে এমপি নির্বাচিত হন এবং তাকে প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছেন এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এই দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, এজন্য তার দোসর ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তাই এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে তার তদন্ত কর্মকর্তার চাওয়া ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

এরপর আসামিপক্ষে আইনজীবী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, সবশেষ সংসদে তিনি এমপি বা মন্ত্রী কিছু ছিলেন না। তার নির্বাচনী এলাকাও এই মামলার ঘটনাস্থল মিরপুর এলাকায় নয়। তিনি হার্টের রোগী। এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। তাই রিমান্ড বাতিলসহ জামিনের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হোক।

শুনানির এ পর্যায়ে ডা. এনামুর রহমান বলেন, আগস্টে এই ঘটনার সময় থেকে আমি আমার হাসপাতালে নির্দেশ দিয়েছিলাম, এই ঘটনায় যারা আহত আসবে তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে। আগস্ট থেকে বিগত চার মাসে আমার এনাম মেডিকেলে ২৯০ জন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে ভর্তি রেখে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছি। এছাড়া বহির্বিভাগে আরও ৫৭৬ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের এই রেজিস্ট্রার দেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলও বিস্মিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারিতে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর আমি হাসপাতাল থেকে বের হইনি। কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমেও অংশ নেইনি। অনেকটা অসুস্থতা ও অনেকটা মন খারাপ থেকে এভাবেই ছিলাম। কোনোভাবেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন বা মামলায় বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো অংশগ্রহণ ছিল না।

এর আগে রোববার (২৬ জানুয়ারি) মধ্যরাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন আসামিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। মামলায় এনামুর ৩০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।