চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে এ আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের আদালত-৬-এর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতেও তাকে তোলা হয়েছিল।
রাউজান থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সিদ্দিকুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাউজানে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির দলইনগর-নোয়াজিষপুর শাখা (এবাদত খানা) ভাঙচুরের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার এক নম্বর আসামি ফজলে করিম চৌধুরীর রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিলো। আজ সকালে তাকে আদালতে হাজির করে শুনানি শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৩৮ মিনিটে আদালতে আনা হয়। এর আগে থেকেই আদালত চত্বরে একদল বিক্ষোভকারী অবস্থান নেন। তারা সবাই ফজলে করিম কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জানা যায়, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে বহনকারী গাড়ি আদালত চত্বরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা ডিম ছুড়ে মারেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ফজলে করিমের ফাঁসিরও দাবি তোলেন। দাবিতে বিক্ষোভও করতে দেখা যায়।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আলাউদ্দিন।
চট্টগ্রামের রাউজানে ২০১৯ সালে দায়েরকৃত এবাদতখানা ভাঙচুর ও লুটপাটের একটি মামলায় তাকে দুই দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়ের হওয়া একাধিক হত্যা মামলায় তাকে আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাজীরবাজার থেকে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়েছিল। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে আনা হয় তাকে।
চট্টগ্রাম-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও রাউজানে হত্যাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। ফজলে করিম চট্টগ্রামের রাউজান আসন থেকে ২০০১ সাল থেকে টানা পাঁচবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য ছিলেন।