Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবমেরিন টাইটানের কেউই বেঁচে নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অবশেষে নিশ্চিত হওয়া গেল আটলান্টিকের তলদেশে হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের পরিণতি। সমুদ্রের তলদেশে পানির চাপ নিতে পারেনি সাবমার্সিবল টাইটান। এর ফলে সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে সেটি। এতে থাকা পাঁচ জনের কেউই বেঁচে নেই বলে এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছে ডুবোযানটির পরিচালনাকারী সংস্থা ওশেনগেট।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে এ তথ্য জানানো হয়।

সংস্থাটি বলেছে, আমরা এখন বিশ্বাস করছি আমাদের সিইও স্টকটন রাসম, শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিস হার্ডিং এবং পল-হেনরি নারগোলেট দুঃখজনকভাবে হারিয়ে গেছেন। তারা সত্যিকারের অভিযাত্রী ছিলেন— যারা অ্যাডভেঞ্চার, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান এবং বিশ্বের সমুদ্র রক্ষায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্বাসে একমত পোষণ করতেন। এই কঠিন সময়ে এই পাঁচজন ও তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আমরা এই মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি। এই সময়টি তাদের জন্য খুবই কঠিন।

আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে ডুবোযানটির ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানানোর পরই এমন বিবৃতি দিয়েছে ওশেনগেট।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে মার্কিন কোস্টগার্ডের সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের প্রায় ১৬০০ ফুট দূরে টাইটানের লেজের অংশ পাওয়া গেছে। এর কাছাকাছি মিলেছে অন্যান্য অংশ। বিশেষজ্ঞরা ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করেছেন। এরই মধ্যে যাত্রীদের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে।

মাগার বলেন যে, আমরা কেবল কল্পনা করতে পারি যে এটি তাদের জন্য কতটা ভয়াবহ ছিল। আবিষ্কারটি কঠিন সময়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা প্রদান করবে।

মার্কিন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা বলেন যে, নিখোঁজ সাবমার্সিবলের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের পর দূরবর্তী চালিত যানগুলো ঘটনাস্থলে থাকবে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে।

ইউএস কোস্টগার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার টাইটান সাবমার্সিবল অনুসন্ধানে সহায়তা করার জন্য বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই অত্যন্ত জটিল অনুসন্ধান অভিযানে জোরালো গতিতে অনুসন্ধান অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে। সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধারে বিশেষজ্ঞদের দ্রুত সংগঠিত করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা সব সংস্থা এবং কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।

মার্কিন কোস্টগার্ড বলছে, কর্মকর্তারা সাবমেরিনের ব্যর্থতার কারণ নিয়ে গবেষণা করছে। এটি অবিশ্বাস্যরকম জটিল। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় লাগবে।

তিনি বলেছিলেন যে, অনুসন্ধানকারী যানগুলো ‘অত্যন্ত দক্ষ’ এবং আরও তথ্য প্রকাশ করবে।

মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, অনুসন্ধানে পাঁচটি ধ্বংসাবশেষের টুকরা পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো টাইটানকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।

রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেন, প্রেসার হুলের বাইরে অবস্থিত নাকের শঙ্কুটি প্রথম পাওয়া টুকরো। তারপর, তারা একটি বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের ক্ষেত্র’ খুঁজে পেয়েছিল।

ক্রুরা প্রথমটির মধ্যে একটি দ্বিতীয়, ছোট ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিল, যেখানে চাপের হুলের অন্য প্রান্তটি অবস্থিত ছিল। তিনি বলেন, আমরা সেখানে যা আছে তা সম্পূর্ণরূপে ম্যাপ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।

মৃতদেহের সন্ধান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কোস্টগার্ড। তবে সেটি এমন পরিবেশে অত্যান্ত চ্যালেঞ্জিং এবং পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএস কোস্ট গার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেছেন, নিখোঁজ টাইটানিক-বাউন্ড সাবমার্সিবলের আপাত বিস্ফোরণের পরে যাত্রীদের মৃতদেহের সন্ধান ও উদ্ধারের কাজ চ্যালেঞ্জিং। তবুও এটি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, সমুদ্রের তলদেশ একটি অবিশ্বাস্যভাবে ক্ষমাহীন পরিবেশ। আমরা কাজ চালিয়ে যাব। কিন্তু তাদের মরদেহ বা কোনোকিছু পাওয়া যাবে কি না- এমন সম্ভাবনার কোনো উত্তর নেই।

রোববার (১৮ জুন) দুইজন ক্রু এবং তিনজন সাধারণ যাত্রীসহ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দেয় ওশেনগেটের ডুবোযান টাইটান। উদ্দেশ্য ছিল সাগরের ১২ হাজার ফুট নিচে পড়ে থাকা জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখা। কিন্তু এই যাত্রা শুরুর মাত্র ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই ডুবোযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সূত্র: বিবিসি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

সাবমেরিন টাইটানের কেউই বেঁচে নেই

প্রকাশের সময় : ০২:০৪:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অবশেষে নিশ্চিত হওয়া গেল আটলান্টিকের তলদেশে হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের পরিণতি। সমুদ্রের তলদেশে পানির চাপ নিতে পারেনি সাবমার্সিবল টাইটান। এর ফলে সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে সেটি। এতে থাকা পাঁচ জনের কেউই বেঁচে নেই বলে এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছে ডুবোযানটির পরিচালনাকারী সংস্থা ওশেনগেট।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে এ তথ্য জানানো হয়।

সংস্থাটি বলেছে, আমরা এখন বিশ্বাস করছি আমাদের সিইও স্টকটন রাসম, শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিস হার্ডিং এবং পল-হেনরি নারগোলেট দুঃখজনকভাবে হারিয়ে গেছেন। তারা সত্যিকারের অভিযাত্রী ছিলেন— যারা অ্যাডভেঞ্চার, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান এবং বিশ্বের সমুদ্র রক্ষায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্বাসে একমত পোষণ করতেন। এই কঠিন সময়ে এই পাঁচজন ও তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আমরা এই মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি। এই সময়টি তাদের জন্য খুবই কঠিন।

আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে ডুবোযানটির ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানানোর পরই এমন বিবৃতি দিয়েছে ওশেনগেট।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে মার্কিন কোস্টগার্ডের সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের প্রায় ১৬০০ ফুট দূরে টাইটানের লেজের অংশ পাওয়া গেছে। এর কাছাকাছি মিলেছে অন্যান্য অংশ। বিশেষজ্ঞরা ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করেছেন। এরই মধ্যে যাত্রীদের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে।

মাগার বলেন যে, আমরা কেবল কল্পনা করতে পারি যে এটি তাদের জন্য কতটা ভয়াবহ ছিল। আবিষ্কারটি কঠিন সময়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা প্রদান করবে।

মার্কিন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা বলেন যে, নিখোঁজ সাবমার্সিবলের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের পর দূরবর্তী চালিত যানগুলো ঘটনাস্থলে থাকবে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে।

ইউএস কোস্টগার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার টাইটান সাবমার্সিবল অনুসন্ধানে সহায়তা করার জন্য বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই অত্যন্ত জটিল অনুসন্ধান অভিযানে জোরালো গতিতে অনুসন্ধান অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে। সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধারে বিশেষজ্ঞদের দ্রুত সংগঠিত করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা সব সংস্থা এবং কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।

মার্কিন কোস্টগার্ড বলছে, কর্মকর্তারা সাবমেরিনের ব্যর্থতার কারণ নিয়ে গবেষণা করছে। এটি অবিশ্বাস্যরকম জটিল। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় লাগবে।

তিনি বলেছিলেন যে, অনুসন্ধানকারী যানগুলো ‘অত্যন্ত দক্ষ’ এবং আরও তথ্য প্রকাশ করবে।

মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, অনুসন্ধানে পাঁচটি ধ্বংসাবশেষের টুকরা পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো টাইটানকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।

রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেন, প্রেসার হুলের বাইরে অবস্থিত নাকের শঙ্কুটি প্রথম পাওয়া টুকরো। তারপর, তারা একটি বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের ক্ষেত্র’ খুঁজে পেয়েছিল।

ক্রুরা প্রথমটির মধ্যে একটি দ্বিতীয়, ছোট ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিল, যেখানে চাপের হুলের অন্য প্রান্তটি অবস্থিত ছিল। তিনি বলেন, আমরা সেখানে যা আছে তা সম্পূর্ণরূপে ম্যাপ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।

মৃতদেহের সন্ধান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কোস্টগার্ড। তবে সেটি এমন পরিবেশে অত্যান্ত চ্যালেঞ্জিং এবং পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএস কোস্ট গার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেছেন, নিখোঁজ টাইটানিক-বাউন্ড সাবমার্সিবলের আপাত বিস্ফোরণের পরে যাত্রীদের মৃতদেহের সন্ধান ও উদ্ধারের কাজ চ্যালেঞ্জিং। তবুও এটি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, সমুদ্রের তলদেশ একটি অবিশ্বাস্যভাবে ক্ষমাহীন পরিবেশ। আমরা কাজ চালিয়ে যাব। কিন্তু তাদের মরদেহ বা কোনোকিছু পাওয়া যাবে কি না- এমন সম্ভাবনার কোনো উত্তর নেই।

রোববার (১৮ জুন) দুইজন ক্রু এবং তিনজন সাধারণ যাত্রীসহ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দেয় ওশেনগেটের ডুবোযান টাইটান। উদ্দেশ্য ছিল সাগরের ১২ হাজার ফুট নিচে পড়ে থাকা জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখা। কিন্তু এই যাত্রা শুরুর মাত্র ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই ডুবোযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সূত্র: বিবিসি।