বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় খাদ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সান্তাহার সাইলো সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে পাথর ও খোয়া উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারজুড়ে ভাঙা এ বেহাল সড়কটি জনদুর্ভোগের আরেকটি নাম হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের কাছে। ৯ বছর সংস্কারহীন সড়কটি সাময়িকভাবে চলাচলযোগ্য করে তুলতে নওগাঁ সার ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন ও সান্তাহার ট্রাক মালিক সমিতি এগিয়ে এসেছেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল থেকে সংগঠন দু’টির নেতৃবৃন্দেরা ইট ফেলে বড় বড় গর্ত ভরাট করে দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, সান্তাহার পৌর শহরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সাইলোর রয়েছে, যার মধ্যে একটি গম ও আরেকটি চালের এবং এর প্রায় আধা কিলোমিটার উত্তরে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আরো একটি সারের গুদাম রয়েছে। সাইলোতে যেতে সান্তাহার মেইন রোডের খাঁড়ির ব্রিজ থেকে সারের গুদামের সামনে দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের একটি সড়ক রয়েছে। খাদ্য বিভাগের এ সড়ক দিয়ে সাইলো ও সার গুদামে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক চলাচল করে। সেই সঙ্গে সড়কটি সান্তাহার পৌরসভা, সান্তাহার ইউনিয়ন ও আদমদীঘি সদর ইউনিয়ন, রানীনগরের বোদলা, পালশা, তেবারিয়াসহ প্রায় ২৫-৩০ গ্রামের মানুষের চলাচলের ভরসা।
তারা অনেকে এ পথে যানবাহন ও হেঁটে চলাচল করেন। বর্তমানে বেশিরভাগ স্থানে পাথর, ইট ও খোয়া উঠে গিয়ে ছোটবড় শত শত খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সজল হোসেন বলেন, ৮-৯ বছর ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হবে হবে বলে সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না। ছোট গর্তগুলো বড় হয়ে যাচ্ছে। এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকছে। যানবাহন যেতে চাচ্ছে না।
সান্তাহার আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, উত্তরবঙ্গের মধ্যে খাদ্য বিভাগের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। বর্তমানে সড়কটির বেহাল দশায় প্রায় প্রতিদিনই যানবাহন বিকল হচ্ছে। আর এ কারণেই ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহন মালিকরা ওই সড়কে মালামাল বহনে তাদের গাড়ি ভাড়া দিতে চান না। এসব কারণে চালকরাও ওই সড়ক দিয়ে ট্রাক চালাতে অনীহা প্রকাশ করেন। এতে আমরা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
সান্তাহার ট্রাক মালিক সমিতির সহসভাপতি অহিদুর রহমান অলি বলেন, এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। অথচ সরকারিভাবে সংস্কার করা হচ্ছে না। এ কারণে জনভোগান্তি লাঘবে নওগাঁ সার ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন ও সান্তাহার ট্রাক মালিক সমিতির যৌথ উদ্যোগে আমরা সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু করেছি।’ স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সান্তাহার ট্রাক মালিক সমিরি সভাপতি কামরুল হাসান বলেন, ‘সড়কে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ট্রাক ও অন্যান্য চলাচল একদম অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নিরুপায় হয়ে আমরা গর্তে বড় বড় ইট ফেলে সড়কটি সাময়িক যানবাহন চলাচলযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছি।’ তবে সরকারের কাছে তিনি দ্রুত এই সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, খবর নিয়েছি। অচিরেই সড়কটি ভালো বাজেটে নির্মাণ হবে।
সান্তাহার সাইলোর রক্ষণ প্রকৌশলী এবং আহরণ ও ব্যয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনে একটি প্রকল্পে সড়কটি পুননির্মাণ করা হবে। আশা করা যায় চলতি বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরের দিকে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপরই কাজ শুরু হবে। দ্রুতই দুর্ভোগ কেটে যাবে।