Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদ্দাম হোসেনের মেয়ের ৭ বছরের জেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাবার বাথ পার্টির পক্ষে কথা বলায় ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বাগদাদের একটি আদালত। তিনি বর্তমানে জর্ডানে নির্বাসিত রয়েছেন। রোববার (২২ অক্টোবর) তার অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়্যা। খবরে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের পর বাথ পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। রায়ে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে টেলিভিশনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিষিদ্ধ বাথ পার্টির কার্যক্রম প্রচারের অপরাধে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ইরাকে আজও কেউ যদি ক্ষমতাচ্যুত সাদ্দাম সরকারের ছবি প্রচার করে বা স্লোগান দেয় তবে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে। অবশ্য ঠিক কোন সাক্ষাৎকারের কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তা রায়ে উল্লেখ করা হয়নি।

কিন্তু ২০২১ সালে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন সৌদি মালিকানাধীন আল-আরাবিয়া চ্যানেলে ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তার বাবার শাসনামলে ইরাকের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।

সৌদি এই চ্যানেলকে সেসময় তিনি বলেন, অনেকে আমাকে বলেছে- (সাদ্দাম হোসেনের শাসনামল) আমাদের জন্য সত্যিই গৌরবের, গর্বের সময় ছিল। অবশ্যই, সেসময় ইরাক স্থিতিশীল এবং অনেক সমৃদ্ধ দেশ ছিল।

রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন তার বোন রানার সঙ্গে জর্ডানে থাকেন। তাদের ভাই উদয় এবং কুসে ২০০৩ সালে মসুলে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলকে দেশের জন্য নির্মম দমন-পীড়নের সময় হিসেবে দেখা হয়।

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ২০০৬ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ফাঁসি দেওয়া হয়।

ফাঁসির অনেক বছর পরে সাদ্দাম হোসেনের বড় মেয়ে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন এক সাক্ষাতকারে প্রকাশ করেন তাদের পরিবারের অনেক ব্যক্তিগত তথ্য। আল আরাবিয়া ইংরেজি চ্যানেলে প্রচারিত হয় সেই সাক্ষাতকার। সেইসব তথ্যের মধ্যে যেমন আছে তাদের দুই বোনের বিবাহ, তেমনই তিনি প্রকাশ করেছিলেন তাদের দুই বোনের স্বামীদের হত্যার ঘটনাও।
রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে ইরাক সরকার ২০১৮ সালেই মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় রেখেছে। ৬০ জনের ওই তালিকায় ইসলামিক স্টেট, আল কায়দা এবং তার বাবার বাথ পার্টির সাবেক কর্মকর্তাদের নামও ছিল।

বাবা সাদ্দাম হোসেনের একটি ঘটনা প্রকাশ করেন রাঘাদ। তিনি বলেন, ‘একদিন খুব বোমা পড়ছিল বলে আমি স্কুলে যাই নি। বাবা সামরিক পোশাক পরে আমার কাছে এসেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন যে আমি কেন স্কুল যাই নি। বলেছিলাম যুদ্ধের কথা। তখন তিনি বলেছিলেন ইরাকের বাকি সব বাচ্চারা তো স্কুলে যাচ্ছে, তোমারও যাওয়া উচিত।’

তিনি জানান, বাবা বলেছিলেন, তুমি স্কুলে গেলে অন্য বাচ্চারাও সাহস পাবে। তাদের কথাও ভাবতে হবে তোমাকে, বলেছিলেন বাবা। তিনি চাইতেন সাদ্দাম হোসেনের সন্তান হিসাবে আমরা যেন বিশেষ কোনও সুবিধা না পাই। আমার ভাইয়েরা তো ইরাককে রক্ষা করতে গিয়েই প্রাণ দিয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সাদ্দাম হোসেনের মেয়ের ৭ বছরের জেল

প্রকাশের সময় : ০৩:০৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাবার বাথ পার্টির পক্ষে কথা বলায় ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বাগদাদের একটি আদালত। তিনি বর্তমানে জর্ডানে নির্বাসিত রয়েছেন। রোববার (২২ অক্টোবর) তার অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়্যা। খবরে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের পর বাথ পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। রায়ে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে টেলিভিশনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিষিদ্ধ বাথ পার্টির কার্যক্রম প্রচারের অপরাধে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ইরাকে আজও কেউ যদি ক্ষমতাচ্যুত সাদ্দাম সরকারের ছবি প্রচার করে বা স্লোগান দেয় তবে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে। অবশ্য ঠিক কোন সাক্ষাৎকারের কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তা রায়ে উল্লেখ করা হয়নি।

কিন্তু ২০২১ সালে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন সৌদি মালিকানাধীন আল-আরাবিয়া চ্যানেলে ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তার বাবার শাসনামলে ইরাকের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।

সৌদি এই চ্যানেলকে সেসময় তিনি বলেন, অনেকে আমাকে বলেছে- (সাদ্দাম হোসেনের শাসনামল) আমাদের জন্য সত্যিই গৌরবের, গর্বের সময় ছিল। অবশ্যই, সেসময় ইরাক স্থিতিশীল এবং অনেক সমৃদ্ধ দেশ ছিল।

রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন তার বোন রানার সঙ্গে জর্ডানে থাকেন। তাদের ভাই উদয় এবং কুসে ২০০৩ সালে মসুলে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলকে দেশের জন্য নির্মম দমন-পীড়নের সময় হিসেবে দেখা হয়।

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ২০০৬ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ফাঁসি দেওয়া হয়।

ফাঁসির অনেক বছর পরে সাদ্দাম হোসেনের বড় মেয়ে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেন এক সাক্ষাতকারে প্রকাশ করেন তাদের পরিবারের অনেক ব্যক্তিগত তথ্য। আল আরাবিয়া ইংরেজি চ্যানেলে প্রচারিত হয় সেই সাক্ষাতকার। সেইসব তথ্যের মধ্যে যেমন আছে তাদের দুই বোনের বিবাহ, তেমনই তিনি প্রকাশ করেছিলেন তাদের দুই বোনের স্বামীদের হত্যার ঘটনাও।
রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে ইরাক সরকার ২০১৮ সালেই মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় রেখেছে। ৬০ জনের ওই তালিকায় ইসলামিক স্টেট, আল কায়দা এবং তার বাবার বাথ পার্টির সাবেক কর্মকর্তাদের নামও ছিল।

বাবা সাদ্দাম হোসেনের একটি ঘটনা প্রকাশ করেন রাঘাদ। তিনি বলেন, ‘একদিন খুব বোমা পড়ছিল বলে আমি স্কুলে যাই নি। বাবা সামরিক পোশাক পরে আমার কাছে এসেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন যে আমি কেন স্কুল যাই নি। বলেছিলাম যুদ্ধের কথা। তখন তিনি বলেছিলেন ইরাকের বাকি সব বাচ্চারা তো স্কুলে যাচ্ছে, তোমারও যাওয়া উচিত।’

তিনি জানান, বাবা বলেছিলেন, তুমি স্কুলে গেলে অন্য বাচ্চারাও সাহস পাবে। তাদের কথাও ভাবতে হবে তোমাকে, বলেছিলেন বাবা। তিনি চাইতেন সাদ্দাম হোসেনের সন্তান হিসাবে আমরা যেন বিশেষ কোনও সুবিধা না পাই। আমার ভাইয়েরা তো ইরাককে রক্ষা করতে গিয়েই প্রাণ দিয়েছেন।