সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি :
ভারতের হাকিমপুর ক্যাম্পে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণকৃত নারী ও শিশুসহ ১৪ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড-বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজিবি সূত্র জানায়, গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের হাকিমপুর চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যরা হাকিমপুর ক্যাম্পের একটি টহল দলের সদস্যরা তাদেরকে আটক করে। পরবর্তীতে রবিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিএসএফ আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর দিবাজ্যোতি ডলি এবং বাংলাদেশ সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ তলুইগাছা বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আবুল কাশেমের মধ্যস্থতায় তলুইগাছা সীমান্তে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
হস্তান্তরকৃত বাংলাদেশি নাগরিকরা হলেন- বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানার সানকিডাঙ্গা গ্রামের মো. আফজাল শেখের ছেলে মো. মিজানুর রহমান শেখ (৩৮), মিজানুর রহমান শেখের স্ত্রী মোসা. শারমিন আক্তার (২৪), তাদের ছেলে শামীম শেখ (৭), মেয়ে রুমা শেখ (৪), একই গ্রামের মো. মোস্তফা শিকদারের ছেলে মো. নজরুল শিকদার (৫০), নজরুল শিকদারের স্ত্রী মোসা. কোহিনুর বেগম (৪৩), একই থানার বদনীডাঙ্গা গ্রামের মো. আফজাল শেখের ছেলে মো. কবির শেখ (৪০), কবির শেখের স্ত্রী মোছাম্মৎ তফুরা বেগম (৩০), পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার চন্ডিপুর গ্রামের মো. হানিফ মৃধার ছেলে মো. আরমান মৃধা (২৫), আরমান মৃধার স্ত্রীর হাজেরা আক্তার (২১), তাদের ছেলে হাফিজুল (৬), মেয়ে আমিনা (৩), মো. চুন্নু শেখের স্ত্রী মোসা. মুকুল বেগম (৪১) এবং সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার পদ্মবেউলা গ্রামের মোসলেম মোড়লের ছেলে আব্দুল কাদের মোড়ল (৪০)।
ভারত থেকে ফিরে আসা নজরুল শিকদার জানান, বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার তারা ১৩ জন বেশ কয়েক বছর আগে সপরিবারের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। তারা ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরুতে থেকে দিনমজুরের কাজ করতেন। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের আটক করতে ব্যাপক ধড়পাকড় শুরু করে। ফলে গ্রেফতার এড়াতে তারা সেখান থেকে কয়েকদিন আগে কলকাতায় চলে আসে। পরে শনিবার রাত ৮টার দিকে তারা হাকিমপুর বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে রবিবার রাতে তাদেরকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।
আশাশুনির আব্দুল কাদের মোড়ল জানান, তিনি কলকাতার হাওড়া এলাকায় থাকতেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার এড়াতে উল্লিখিতদের সঙ্গে তিনিও হাকিমপুর বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) সুশান্ত ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হস্তান্তরকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই শেষে তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।