সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় বিলের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই ঘের কর্মচারীকে নির্যাতনের পর দুই মালিককে ঘুম থেকে তুলে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। গুলিবিদ্ধ ও আহতাবস্থায় ৪ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার দিবাগত (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে পাটকেলঘাটা থানাধীন হরিণখোলা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, পাটকেলঘাটা থানাধীন হরিণখোলা গ্রামের অভিরাম মণ্ডলের ছেলে অলঙ্গ মণ্ডল (৬১), তার ভাই জগদীশ মণ্ডল (৪৫), ঘেরের পাহারাদার বীরেন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে বিশ্বনাথ মণ্ডল (৫৩) ও ঘের কর্মচারি আসননগর গ্রামের নারদ মুণ্ডার ছেলে শ্রীপদ মুণ্ডা (৩০)।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত অলঙ্গ মণ্ডল জানান, তিনি হরিণখোলা বিলে ১০০ বিঘা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে চিংড়ি ঘের পরিচালনা করে আসছেন। এর মধ্যে চার বিঘা সরকারি খাস জমির লিজের টাকা হরিণখোলা গ্রামের কার্তিক মণ্ডলকে না দিয়ে জমির মালিক দাবিদার স্বপন মণ্ডলকে দেওয়ায় তাদের সঙ্গে কার্তিক মণ্ডলের বিরোধ চলে আসছিলো ২০২২ সাল থেকে। এ ছাড়া পাঁচ শতক জমি নিয়ে কাকাতো ভাই শিব শেখরের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে শালিসি বৈঠক হয়েছে কয়েকবার। রয়েছে আদালতে মামলাও।
এরই জের ধরে রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ঘের কর্মচারি বিশ্বনাথ মণ্ডল ও পার্শ্ববর্তী দীলিপ মণ্ডলের ঘের কর্মচারি শ্রীপদ মুণ্ডাকে ঘেরের বাসা থেকে মুখোশধারী ৭/৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঘুম থেকে ডেকে তুলে নির্যাতনের পর তার বাড়ির সামনে আনা হয়। তাকে ও ভাই জগদীশকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বুকে গুলি করার চেষ্টা করলে তারা শট গান ধরে ফেলেন।একপর্যায়ে তার দুই উরুতে ও ভাই জগদীশের ডান উরু গুলিবিদ্ধ হয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাদের দুই ভাই ও দুই ঘের কর্মচারিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান ও অর্থোপেডিকস সার্জন ডা. হাফিজুল্লাহ জানান, অলঙ্গ মণ্ডলের দুই উরুতে ও জগদীশ মণ্ডলের ডান উরুতে গুলি লেগে বিপরীত দিক থেকে বেরিয়ে গেছে।
পাটকেলঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা আমলে নিয়ে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করা হবে। তাছাড়া গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রাথমিক তথ্য মতে ঘটনাটি ঘের ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘটেছে বলে জানা গেছে। মামলা আমলে নিয়ে আইনগতভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।