Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাড়ে ২৮ ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত সেই ট্রেন উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত হওয়া মালবাহী ট্রেনের ৭টি ওয়াগন সাড়ে ২৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঢাকাগামী লাইনে ট্রেন চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিকেল সাড়ে ৫টায় দুর্ঘটনাকবলিত মালবাহী ট্রেনের ৭টি ওয়াগনের উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ওয়াগনগুলো উদ্ধার করে পাশের তালশহর স্টেশনে রাখা হয়েছে। লাইনচ্যুত হওয়া ওয়াগনগুলো উদ্ধার হলেও লাইন মেরামত এখনো শেষ হয়নি। এখন ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত এবং স্লিপার বসানোর কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। কাজ শেষ হলে আপাতত ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হবে আপ লাইনে। আশা করা হচ্ছে আজ রাতের মধ্যেই আপ লাইনে ট্রেন চালানো যাবে। তবে একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে, মালবাহী ট্রেনের ওয়াগন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা খাইরুল কবিরকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী মো. সৌমাক শাওন, বিভাগীয় প্রকৌশলী ঢাকা-২ সিরাজ জিন্নাত ও বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. রাসেল।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টর দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে আসা ঢাকাগামী একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের সাতটি বগির বেশ কয়েকটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্লিপার ভেঙে যায়। ঘটনার পর থেকে আপ লাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। খবর পেয়ে বিকেল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন উদ্ধারে কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী ট্রেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় উল্লেখিত রেলাইনের ওপর ৫১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। রেললাইনের ওপর সাধারণত ৪৫ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা হলেই ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত কয়দিন ধরেই এ পথে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। পাশাপাশি কচুরিপানা ও পানি দিয়ে রেললাইনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট পথে বেশিরভাগ ট্রেনই বেশ বিলম্বে চলাচল করে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ ছাড়া আন্ত নগর তূর্ণা নিশিথা, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, উপকুল এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম মেইল, ঢাকা মেইলসহ সব কয়টি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেন উদ্ধার ও রেললাইন মেরামত কাজ শুক্রবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে শেষ হয়। পরে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা দিয়ে গতি কমিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ট্রেন চালানো হয়। এরই মধ্যে ওই এলাকার আপ রেললাইনের কিছু অংশ আবারো গরমের কারণে বাঁকা হয়ে যায়।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

সাড়ে ২৮ ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত সেই ট্রেন উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত হওয়া মালবাহী ট্রেনের ৭টি ওয়াগন সাড়ে ২৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঢাকাগামী লাইনে ট্রেন চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিকেল সাড়ে ৫টায় দুর্ঘটনাকবলিত মালবাহী ট্রেনের ৭টি ওয়াগনের উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ওয়াগনগুলো উদ্ধার করে পাশের তালশহর স্টেশনে রাখা হয়েছে। লাইনচ্যুত হওয়া ওয়াগনগুলো উদ্ধার হলেও লাইন মেরামত এখনো শেষ হয়নি। এখন ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত এবং স্লিপার বসানোর কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। কাজ শেষ হলে আপাতত ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হবে আপ লাইনে। আশা করা হচ্ছে আজ রাতের মধ্যেই আপ লাইনে ট্রেন চালানো যাবে। তবে একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে, মালবাহী ট্রেনের ওয়াগন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা খাইরুল কবিরকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী মো. সৌমাক শাওন, বিভাগীয় প্রকৌশলী ঢাকা-২ সিরাজ জিন্নাত ও বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. রাসেল।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টর দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে আসা ঢাকাগামী একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের সাতটি বগির বেশ কয়েকটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্লিপার ভেঙে যায়। ঘটনার পর থেকে আপ লাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। খবর পেয়ে বিকেল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন উদ্ধারে কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী ট্রেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় উল্লেখিত রেলাইনের ওপর ৫১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। রেললাইনের ওপর সাধারণত ৪৫ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা হলেই ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত কয়দিন ধরেই এ পথে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। পাশাপাশি কচুরিপানা ও পানি দিয়ে রেললাইনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট পথে বেশিরভাগ ট্রেনই বেশ বিলম্বে চলাচল করে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ ছাড়া আন্ত নগর তূর্ণা নিশিথা, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, উপকুল এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম মেইল, ঢাকা মেইলসহ সব কয়টি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেন উদ্ধার ও রেললাইন মেরামত কাজ শুক্রবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে শেষ হয়। পরে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা দিয়ে গতি কমিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ট্রেন চালানো হয়। এরই মধ্যে ওই এলাকার আপ রেললাইনের কিছু অংশ আবারো গরমের কারণে বাঁকা হয়ে যায়।