রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
রংপুরের পীরগাছায় পদ্মরাগ কমিউটার ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় দীর্ঘ সাড়ে ১৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর অবশেষে লালমনিরহাট-সান্তাহার-ঢাকা রেল যোগাযোগ চালু হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১টা ৫৫ মিনিটে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার মাধ্যমে ওই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সান্তাহার থেকে লালমনিরহাটগামী পদ্মরাগ এক্সপ্রেস রংপুরের পীরগাছা স্টেশনে প্রবেশের সময় হঠাৎ ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে করে রংপুরের সঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ দেশের সকল জেলার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার জন্য রেলওয়ে কর্মীরা রেলের স্লিপার এবং অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মাটি দেবে যাওয়াকে দায়ী করে বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার না করার কারণে রংপুর-লালমনিরহাট রেললাইনের বহু জায়গায় ধস নামার উপক্রম হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা না হলে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, সান্তাহার থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেন ‘পদ্মরাগ’ দুপুর ১টার দিকে রংপুরের পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এসময় পঞ্চগড় থেকে সান্তাহারগামী ‘দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ একই স্টেশনে আসায় ‘পদ্মরাগ’ ট্রেনটি দুই নম্বর লাইনে অবস্থান করে।
দোলনচাঁপা পীরগাছা ছেড়ে গেলে লালমনিরহাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে ‘পদ্মরাগ’ ট্রেনটি। এসময় এক নম্বর লাইনে থেকে দুই নম্বর লাইনে ক্রসিংয়ের সময় হঠাৎ ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলেও লাইন ও সিগন্যালের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বেলা সাড়ে ৪টার দিকে লালমনিরহাট থেকে একটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এলেও বগির ভার বহন করতে না পারায় সেটিকে কাজে লাগানো যায়নি। তবে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত বগিগুলোর সামনের একটি বগি উদ্ধার করে কাউনিয়া রেলওয়ে জংশনে নিয়ে যায় রিলিফ ট্রেনটি।
সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় লাইনচ্যুত বগিগুলোকে উদ্ধার করতে পার্বতীপুর থেকে আরেকটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে। ক্রেন কাজে লাগানো না যাওয়ায় সনাতন পদ্ধতিতে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। রাত ১টার দিকে লাইনচ্যুত সবকটি বগি উদ্ধার সম্ভব হয়। তবে মূল লাইনের স্লিপারে সমস্যা ধরা পড়ায় ট্রেন চলাচলে আরও এক ঘণ্টা বেশি সময় লাগে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলম বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের বগিগুলো রাত ৯টার মধ্যে উদ্ধারের টার্গেট নিয়ে কাজ শুরু করি। কিন্তু বৃষ্টি আর অতিরিক্ত উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে তা বিলম্বিত হয়। রাত প্রায় ১টার দিকে লাইনচ্যুত বগিগুলোকে উদ্ধার করা যায়। তবে পরীক্ষায় মূল লাইনের দুটি স্লিপারে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ট্রেন চলাচলে আর কিছুটা বেশি সময় লেগে যায়। পরে রাত ১টা ৪০ মিনিটে রেললাইনটি পুরোপুরি ঠিক হলে ২টা থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আপাতত আর কোনো সমস্যা নাই।