স্পোর্টস ডেস্ক :
ম্যাচের শুরু দুই প্রান্তে দুই স্পিনারের বোলিং দিয়ে। দুজন মিলেই করলেন প্রথম ৪২ ওভার। গোটা দিনে দুই দল মিলিয়ে ৯১ ওভারের ৮৮টিই করলেন স্পিনাররা। উইকেটের চরিত্র বোঝার জন্য যথেষ্ট এটিই। মুলতানের পর রাওয়ালপিন্ডিতেও প্রথম দিন দাপট দেখালেন স্পিনাররা। ইংল্যান্ডকে তিনশর নিচে থামিয়ে স্বস্তিতে নেই পাকিস্তানও।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন ইংল্যান্ডকে ২৬৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে পাকিস্তান করেছে ৩ উইকেটে ৭৩ রান। এখনও ১৯৪ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা। দুই দল মিলিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) পতন হওয়া ১৩ উইকেটের ১২টিই নিয়েছেন স্পিনাররা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আশা জাগানিয়া শুরুর পর ধস নামে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে। বিনা উইকেটে ৫৬ থেকে স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৯৮ ও ৬ উইকেটে ১১৮। এরপর কিপার-ব্যাটসম্যান জেমি স্মিথের ৬ ছক্কা ও ৫ চারে ৮৯ রানের আগ্রাসী ইনিংস ও গাস অ্যাটকিনসনের সঙ্গে শতরানের জুটির সৌজন্যে আড়াইশ ছাড়াতে পারে তারা।
মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ২০ উইকেটের সবকটি ভাগ করে নেওয়া দুই স্পিনার সাজিদ খান ও নোমান আলি মিলে এবার প্রথম ইনিংসে নেন ৯ উইকেট। অফ স্পিনার সাজিদ ১২৮ রানে নেন ৬টি, বাঁহাতি নোমান ৮৮ রানে ৩টি। অন্যটি নেন লেগ স্পিনার জাহিদ মাহমুদ।
পেস বোলিং অলরাউন্ডার আমের জামালকে এদিন বোলিং দেননি পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ। সাজিদ, নোমান, জাহিদ ও অফ স্পিনি অলরাউন্ডার সালমান আলি আগা মিলে করেন ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৬৮.২ ওভারের সবকটি।
আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৫৬ রান। ওপেনার জ্যাক ক্রাউলিকে ২৯ রানে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন নোমান। অল্প সময়ের ব্যবধানে তার বলেই আউট ওয়ানডাউনে নামা ওলি পোপও (৩)। এরপর দলীয় ১০০ রানের আগেই ইংলিশরা ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। এর মধ্যে অবশ্য ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন ওপেনার বেন ডাকেট (৫২)। তবে জো রুট (৫), হ্যারি ব্রুক (৫) ও বেন স্টোকসের (১২) ব্যর্থতায় সফরকারীরা চাপে পড়ে যায়।
১১৮ রানে ৬ উইকেট হারানো ইংলিশদের ইনিংস অল্পতেই গুটিয়ে যাবে– এমন শঙ্কা জেগেছিল। তবে অষ্টম উইকেটে জেমি স্মিথ ও অ্যাটকিনসন মিলে গড়েন ১০৫ রানের জুটি। সেটিই মূলত তাদের সম্মানজনক স্কোর এনে দেয়। ১১৯ বলে ৫টি চার ও ৬ ছক্কায় ৮৯ রান করেছেন স্মিথ। অ্যাটকিনসন ৭১ বলে ৩৯ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ৬৮.২ ওভারে ২৬৭ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।
বিপরীতে পাকিস্তান দেখেশুনে শুরু করেও ওপেনিং জুটি ভেঙে যায় ৩৫ রানে। শোয়েব বশিরের বলে এলবিডব্লু হন আব্দুল্লাহ শফিক (১৪)। সাইম আইয়ুবও আউট হয়ে যান অদ্ভুত শট খেলে। লিচের বল ডাউন দ্য উইকেটে এগিয়ে খেলতে গিয়ে ১৯ রানে তিনি শর্ট ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দেন। এর পরের ওভারেই বিদায় আগের ম্যাচে অভিষিক্ত হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানো কামরান গুলাম (৩)। অ্যাটকিনসনের বলে তিনি বোল্ড হয়েছেন। দিনের বাকিটা সময় শান মাসুদ ও সৌদ শাকিল মিলে পার করেছেন, দুজনেই অপরাজিত আছেন সমান ১৬ রানে।
এদিন প্রথম ইনিংসে ইতিহাস গড়েন দুই পাকিস্তানি স্পিনার সাজিদ ও নোমান। শুরু থেকে দুজনে মিলে করেছেন টানা ৪২ ওভার। দুই স্পিনার ম্যাচের শুরুর দুই ওভার করেছেন, এমন ঘটনা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ। আর পাকিস্তানের মাটিতে এমন ঘটনা প্রথম।