Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড ও মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয় : তথ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রহসন করা হয়েছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এ নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমকে কাজ করতে হবে দল-নিরপেক্ষভাবে। স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্র্বতী সরকারের। এর মাধ্যমে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করা হবে। স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনে সমস্যা থাকলে সেটি সংস্কারের পাশাপাশি সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডে বিচার হবে। তদন্ত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সহায়তা করবে। সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রহসন করা হয়েছে। এ নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয়।

সংবাদকর্মীদের বেতন কাঠামো নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যমান বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করা হবে। সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রণালয়ের অধীনে সব সংস্থার সেন্সর বোর্ড ও জুরি বোর্ডের কমিটি ভেঙে পুনর্গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, সেন্সর বোর্ডে যে সব ছবি আটকে আছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে।

স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের কথা প্রাথমিকভাবে ভাবা হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি ঠিক করা হবে।

তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, নিবর্তনমূলক আইন, যেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য অন্তরায়, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে জুলাই গণহত্যার প্রকৃতচিত্র তুলে ধরে তদন্তে সহায়তায় গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে দলাদলি চাই না, মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার চর্চা হোক।

সব মন্ত্রণালয়ের একটা কাঠামোগত সংস্কারের কথা ভাবছেন জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যাতে দীর্ঘমেয়াদী এটার সুফল আসে। বিভিন্ন আইনের পরিবর্তন, সাংবাদিকদের বেতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো আধুনিকায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গাটা হচ্ছে নিরপেক্ষতা। কিন্তু আমাদের দেশে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে দেখি, আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো গণমাধ্যমেও দুইটা ভাগ থাকে। এই বিষয়গুলো সাংবাদিকরা বিবেচনা করবেন, যাতে এ ধরনের দলীয় কোনো ভাগ সাংবাদিকদের মধ্যে না দেখি। যাতে তারা একটি নিরপেক্ষ জায়গা থেকে জনগণের জন্য কথা বলতে পারে।

অনেকে এখন ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাদের যেন কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে। মামলাগুলো হলেও সেগুলো সুস্পষ্ট তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে।

ডিএফপি এবং পিআইবিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তো বলেছি যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান নেই। প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দাঁড় করাতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আশি বা নব্বই দশকের প্রজন্ম ছাড়া কেউ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখে কি না জানা নেই।

তিনি বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে গতিশীল ও আধুনিক করা দরকার। সেগুলো খুবই স্থবির অবস্থায় আছে। বিটিভিকে দেখলে মনে হয় এটা আশি বা নব্বই দশকের বিটিভি। ওই জেনারেশনই বিটিভি দেখে, আর কেউ বিটিভি দেখে কি না জানি না।

উপদেষ্টা বলেন, এর একটা দিক হলো এর দলীয়করণ, রাজনীতিকীকরণ আছে, আরেকটা হচ্ছে, কনটেন্টগুলো মনে হচ্ছে এই প্রজন্মের জন্য নয়। সেই জায়গা থেকে মনে করি, সব প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকীকরণ করা উচিত। সরকারি একটা প্রতিষ্ঠান, সেখানে কিছু সরকারের অ্যাসাইন করা লোক বসবে, কিছু পদ দখল করে বসে থাকবে, এ রকমটা যাতে না হয়।
মতবিনিময় সভায় শুরুতে সাংবাদিক সহ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড ও মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয় : তথ্য উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ১২:৫১:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রহসন করা হয়েছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এ নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমকে কাজ করতে হবে দল-নিরপেক্ষভাবে। স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্র্বতী সরকারের। এর মাধ্যমে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করা হবে। স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনে সমস্যা থাকলে সেটি সংস্কারের পাশাপাশি সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডে বিচার হবে। তদন্ত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সহায়তা করবে। সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রহসন করা হয়েছে। এ নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রণালয়।

সংবাদকর্মীদের বেতন কাঠামো নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যমান বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করা হবে। সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রণালয়ের অধীনে সব সংস্থার সেন্সর বোর্ড ও জুরি বোর্ডের কমিটি ভেঙে পুনর্গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, সেন্সর বোর্ডে যে সব ছবি আটকে আছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে।

স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের কথা প্রাথমিকভাবে ভাবা হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি ঠিক করা হবে।

তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, নিবর্তনমূলক আইন, যেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য অন্তরায়, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে জুলাই গণহত্যার প্রকৃতচিত্র তুলে ধরে তদন্তে সহায়তায় গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে দলাদলি চাই না, মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার চর্চা হোক।

সব মন্ত্রণালয়ের একটা কাঠামোগত সংস্কারের কথা ভাবছেন জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যাতে দীর্ঘমেয়াদী এটার সুফল আসে। বিভিন্ন আইনের পরিবর্তন, সাংবাদিকদের বেতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো আধুনিকায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গাটা হচ্ছে নিরপেক্ষতা। কিন্তু আমাদের দেশে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে দেখি, আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো গণমাধ্যমেও দুইটা ভাগ থাকে। এই বিষয়গুলো সাংবাদিকরা বিবেচনা করবেন, যাতে এ ধরনের দলীয় কোনো ভাগ সাংবাদিকদের মধ্যে না দেখি। যাতে তারা একটি নিরপেক্ষ জায়গা থেকে জনগণের জন্য কথা বলতে পারে।

অনেকে এখন ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাদের যেন কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে। মামলাগুলো হলেও সেগুলো সুস্পষ্ট তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে।

ডিএফপি এবং পিআইবিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তো বলেছি যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান নেই। প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দাঁড় করাতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আশি বা নব্বই দশকের প্রজন্ম ছাড়া কেউ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখে কি না জানা নেই।

তিনি বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে গতিশীল ও আধুনিক করা দরকার। সেগুলো খুবই স্থবির অবস্থায় আছে। বিটিভিকে দেখলে মনে হয় এটা আশি বা নব্বই দশকের বিটিভি। ওই জেনারেশনই বিটিভি দেখে, আর কেউ বিটিভি দেখে কি না জানি না।

উপদেষ্টা বলেন, এর একটা দিক হলো এর দলীয়করণ, রাজনীতিকীকরণ আছে, আরেকটা হচ্ছে, কনটেন্টগুলো মনে হচ্ছে এই প্রজন্মের জন্য নয়। সেই জায়গা থেকে মনে করি, সব প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকীকরণ করা উচিত। সরকারি একটা প্রতিষ্ঠান, সেখানে কিছু সরকারের অ্যাসাইন করা লোক বসবে, কিছু পদ দখল করে বসে থাকবে, এ রকমটা যাতে না হয়।
মতবিনিময় সভায় শুরুতে সাংবাদিক সহ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।