সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের ওপর বাঁশের সাঁকোটি শ্যাওলা জমে ও স্রোতের চাপে ভেঙে পড়েছে। ফলে মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি ও তালা উপজেলার সারসা গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেকসোনা খাতুন।
জানা গেছে, কেশবপুর ও তালা উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ গত ৫০ বছর ধরে কপোতাক্ষ নদের ওপর এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করতেন। কারণ এলাকাটিতে এখনো কোনো স্থায়ী সেতু নির্মাণ হয়নি। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, হাটে যাতায়াতকারী কৃষক এবং পর্যটকেরা চলাফেরা করতেন।
মধুসূদনের স্মৃতিধন্য এই এলাকায় রয়েছে পর্যটন কেন্দ্র, মধু পল্লী, লাইব্রেরি ও একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সপ্তাহের তিন দিন এখানে হাট বসে, যেখানে দুই পাড়ের কৃষকেরা ফসল বিক্রি করেন। ফলে বাঁশের সাঁকোটির গুরুত্ব শুধু যোগাযোগ নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আহমেদ রাজু জানান, চলতি বছরের শুরুতে মধুকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকোটি মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে নদীর প্রবল স্রোত ও উজান থেকে আসা শ্যাওলা-কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ফের ভেঙে পড়ে।
এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ আলী বলেন, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এখন পারাপারের কোনো বিকল্প নেই।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন জানান, সেতু নির্মাণের জন্য ম্যাপ ও কারিগরি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশল দফতরের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
ইউএনও রেকসোনা খাতুন জানান, সাঁকোটির অবশিষ্ট অংশ ঠিক করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলছেন, দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন করে এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে যোগাযোগ ও জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি 
























