Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাক্ষী প্রমাণের অভাবে অনেক মাদক কারবারির বিচার হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জেলখানায় অন্তরীণ প্রায় ৬০ শতাংশ মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারী। সাক্ষী প্রমাণের অভাবে এদের কারও কারও বিচার হচ্ছে না।

শনিবার (৮ জুলাই) বিকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ‘আহছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্র’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এক থেকে দুই মাস পরে বের হয়ে আরও বেশি করে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। এ জায়গায় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন আপনাদের কাজ করতে হবে। যারা মাদক ব্যবসায়ী তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের পুলিশে ধরিয়ে দিতে হবে। গোপনে প্রশাসন ও পুলিশের কাছে তাদের ব্যাপারে জানাতে হবে। আমরা চাই নতুন প্রজন্মকে মাদক দ্রব্যের হাত থেকে রক্ষা করতে। নাহলে যে স্মার্ট বাংলাদেশের আমরা স্বপ্ন দেখি তা বাধাগ্রস্ত হবে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে যোগাযোগের জন্য হেলিকপ্টার কিনে দিয়েছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকের হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম শক্তির অংশ। এর মধ্যে অধিকাংশই যুব সমাজ। সেই যুব সমাজকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি তাহলে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি। যুব সমাজ যদি ভয়াবহ মাদকের ছোবলে আটকে যায় তাহলে দেশের উন্নয়নের পথ হারানোর সম্ভাবনা থেকে যায়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দাদার আমল থেকেই দেশে মাদক ছিল। সে সময় আফিম, গাঁজা খেয়ে মাদকসেবীরা চোখ লাল করে বসে থাকতো। এরপরে দেশে হেরোইন আসে। হেরোইনের পর ইয়াবা এসেছে। এরপরে এলএসডি ও আইস এসেছে। এই সমস্ত ভয়ঙ্কর মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয়নি। এসব মাদক এসেছে পাশের দেশ থেকে। আমাদের সম্ভাবনাময় দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এগুলো প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আগে মাদক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিধি ছোট ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি বিস্তৃত করা হয়েছে। এজন্য প্রত্যেকটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা হয়েছে।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্ডারে আমাদের বিজিবি রয়েছে। পুলিশ, আনসার, র্যাব সবাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে থাকতে বলেছেন। আমরা সেই জায়গায় থাকতে চাই। এজন্য যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত হোক, যারাই মাদক কারবারি হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ পরিণত করতে। সেভাবেই কাজ চলছে। আমাদের উন্নয়ন কেউ আটকাতে পারবে না। যদি আমাদের যুবসমাজ মাদকের ভয়ংকর ছোবলে আটকে যায়, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথ হারানোর আশঙ্কা থেকে যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিধি ছোট ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি বিস্তৃত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করা হয়েছে। দেশে মাদকের প্রবেশ আটকাতে বর্ডারে বিজিবি রয়েছে। পুলিশ, আনসার ও র‌্যাব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকতে বলেছেন। যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত হোক, যারাই মাদক ব্যবসায়ী হোক, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন– মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল এবং পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাক্ষী প্রমাণের অভাবে অনেক মাদক কারবারির বিচার হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:২৭:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জেলখানায় অন্তরীণ প্রায় ৬০ শতাংশ মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারী। সাক্ষী প্রমাণের অভাবে এদের কারও কারও বিচার হচ্ছে না।

শনিবার (৮ জুলাই) বিকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ‘আহছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্র’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এক থেকে দুই মাস পরে বের হয়ে আরও বেশি করে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। এ জায়গায় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন আপনাদের কাজ করতে হবে। যারা মাদক ব্যবসায়ী তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের পুলিশে ধরিয়ে দিতে হবে। গোপনে প্রশাসন ও পুলিশের কাছে তাদের ব্যাপারে জানাতে হবে। আমরা চাই নতুন প্রজন্মকে মাদক দ্রব্যের হাত থেকে রক্ষা করতে। নাহলে যে স্মার্ট বাংলাদেশের আমরা স্বপ্ন দেখি তা বাধাগ্রস্ত হবে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে যোগাযোগের জন্য হেলিকপ্টার কিনে দিয়েছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকের হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম শক্তির অংশ। এর মধ্যে অধিকাংশই যুব সমাজ। সেই যুব সমাজকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি তাহলে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি। যুব সমাজ যদি ভয়াবহ মাদকের ছোবলে আটকে যায় তাহলে দেশের উন্নয়নের পথ হারানোর সম্ভাবনা থেকে যায়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দাদার আমল থেকেই দেশে মাদক ছিল। সে সময় আফিম, গাঁজা খেয়ে মাদকসেবীরা চোখ লাল করে বসে থাকতো। এরপরে দেশে হেরোইন আসে। হেরোইনের পর ইয়াবা এসেছে। এরপরে এলএসডি ও আইস এসেছে। এই সমস্ত ভয়ঙ্কর মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয়নি। এসব মাদক এসেছে পাশের দেশ থেকে। আমাদের সম্ভাবনাময় দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এগুলো প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আগে মাদক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিধি ছোট ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি বিস্তৃত করা হয়েছে। এজন্য প্রত্যেকটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা হয়েছে।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্ডারে আমাদের বিজিবি রয়েছে। পুলিশ, আনসার, র্যাব সবাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে থাকতে বলেছেন। আমরা সেই জায়গায় থাকতে চাই। এজন্য যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত হোক, যারাই মাদক কারবারি হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ পরিণত করতে। সেভাবেই কাজ চলছে। আমাদের উন্নয়ন কেউ আটকাতে পারবে না। যদি আমাদের যুবসমাজ মাদকের ভয়ংকর ছোবলে আটকে যায়, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথ হারানোর আশঙ্কা থেকে যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিধি ছোট ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি বিস্তৃত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করা হয়েছে। দেশে মাদকের প্রবেশ আটকাতে বর্ডারে বিজিবি রয়েছে। পুলিশ, আনসার ও র‌্যাব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকতে বলেছেন। যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত হোক, যারাই মাদক ব্যবসায়ী হোক, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন– মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল এবং পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন।