Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আরো বিপজ্জনক হবে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পরিবর্তে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আরো বিপজ্জনক হবে।

সোমবার (৭ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, একতরফা ও একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতেই বারবার এ ধরনের সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে আইন তৈরি করছে সরকার। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নাম পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট মূলত নতুন মোড়কে, নতুনভাবে এনে আইওয়াশের চেষ্টা ছাড়া কিছু না।

বর্তমানে দেশে মত প্রকাশের ওপর বাধা নিষেধ রয়েছে বলে দাবি করে রিজভী বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে তার ঠাঁই হয় কারাগারে বা আয়নাঘরে। এখন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অধিকার পুলিশের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনার অধিকার ভোটাররা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তাঁবেদার তথ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিবি পুলিশের আক্রমণে টার্গেটকৃত নেতাকর্মীদের না পেলে পরিবারের সদস্যদের তুলে নেয়া হচ্ছে, এতে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। র‌্যাবের মতো গোয়েন্দা পুলিশও এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশ এখন মনুষ্যত্বহীন আওয়ামী ফ্যাসিজমের কালো ছায়ার নিচে। নির্যাতনের নির্মমতার মুখে দাঁড়িয়ে আছে গণতন্ত্রকামী মানুষ। অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামী জনগণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আজ স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও দেশকে গণতন্ত্রের অভিমুখী না করে নিষ্ঠুর ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করার আয়োজন চলছে মহাধুমধামে। কবির কথায় বলতে হয় ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ’। হিংসার একটা আদিম রূপের ছবি বাংলাদেশের সর্বত্র। প্রভুত্বকামী জুলুমবাজ সরকারের বিষাক্ত থাবা পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী বিদ্বেষের মন্ত্রণাদাতা, শান্তির শত্রু। বিগত কয়েকদিনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে এক সর্বগ্রাসী সহিংসতার ভয়ঙ্কর আক্রমণ। আইনের শাসন, সুবিচার, মানবিক মর্যাদার অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্রসমাজ থেকে মুছে দেয়া হয়েছে নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় বাহিনী গুলোকে। গণতন্ত্র এখন মৃত, সেজন্যই গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের যেকোন কর্মসূচিকে বরদাস্ত করছে না অবৈধ সরকার। মিছিলের শব্দ শুনলেই গুলি চালানো হচ্ছে নির্বিচারে, সাপ পেটানোর মতো লাঠিপেটা করা হয় নেতাকর্মীদের। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে বিরোধী নেতাকর্মীদের হাত, পা, পিঠ, পাকস্থলীই বিদ্ধ হচ্ছে না, তাদের মহামূল্যবান অঙ্গ চোখ হারিয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে, চেনা পৃথিবী হয়ে যায় তাদের কাছে অচেনা। আজীবন পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দিন কাটাতে হয়, এ বেদনা সহ্য করার মতো নয়। তাদেরকে সহমর্মিতা জানানোর ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, বর্তমানে এদেশে মত প্রকাশের ওপর বাধা নিষেধ রয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে তার ঠাঁই হয় কারাগারে বা আয়নাঘরে। এখন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অধিকার পুলিশের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনার অধিকার ভোটাররা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তাবেদার তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। অতিযত্নে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপপ্রচার আর কুৎসা ছড়ানোর জন্য গণমাধ্যমের কিছু অংশকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনকে রোধ করার জন্য অবৈধ কতৃর্ত্ববাদী সরকার জুলুমের সর্বোচ্চ পন্থা নামিয়ে এনেছে জনগণের ওপর। গণতন্ত্রের উল্টোযাত্রাকেই অব্যাহত রাখতে চায় আওয়ামী নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, কোনোভাবেই যাতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হতে না পারে সেজন্য খুন জখমে উৎসাহী ও সিন্ডিকেট হিতৈষী ম্যান্ডেটবিহীন আওয়ামী সরকার দমন-পীড়ণে নতুন নতুন মাত্রা যোগ করছে। মুদ্রা পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, শাসকগোষ্ঠীর আত্মীয়স্বজনদেরকে হরিলুট করার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এই অনাচারমূলক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা প্রয়োজন। তাই তারা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুম, খুন, ক্রসফায়ারের মতো অমানবিক নিষ্ঠুরতার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবেই এই আতঙ্কের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যাতে গণতন্ত্রকামী মানুষ রাজপথে ধেয়ে আসতে না পারে। বিএনপি ও ভিন্ন মতের মানুষদের পাইকারী হারে গ্রেফতার, রিমান্ডের নামে নির্যাতন, কখনো বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বিগত দেড় দশক ধরে। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এখনো সেই পৈশাচিকতা অব্যাহত আছে। আর এ ক্ষেত্রে দলীয় চেতনাবাহী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা এখন শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, ২৮ ও ২৯ জুলাইয়ের পূর্বাপর চলছে জুলুম-উৎপীড়ণের নানামুখী তৎপরতা। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের কতৃর্ক গ্রেফতার, গুম কোনোভাবেই থামছে না। গভীর রাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গোয়েন্দা পুলিশের হানায় দিনকে দিন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। বিশেষ বিশেষ টিম গঠন করে চালানো হচ্ছে অভিযান। তাদের আক্রমণে টার্গেটকৃত নেতাকর্মীদের না পেলে পরিবারের সদস্যদের তুলে নেয়া হচ্ছে, এতে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। র‌্যাবের মতো গোয়েন্দা পুলিশও এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুগত উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আজ আদালতে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীকে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হচ্ছে। ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আজ সাজা প্রদানের ঘটনাও আরেকটি নতুন ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত। অবিলম্বে এই সাজার আদেশ প্রত্যাহারের জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আরো বিপজ্জনক হবে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পরিবর্তে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আরো বিপজ্জনক হবে।

সোমবার (৭ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, একতরফা ও একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতেই বারবার এ ধরনের সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে আইন তৈরি করছে সরকার। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নাম পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট মূলত নতুন মোড়কে, নতুনভাবে এনে আইওয়াশের চেষ্টা ছাড়া কিছু না।

বর্তমানে দেশে মত প্রকাশের ওপর বাধা নিষেধ রয়েছে বলে দাবি করে রিজভী বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে তার ঠাঁই হয় কারাগারে বা আয়নাঘরে। এখন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অধিকার পুলিশের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনার অধিকার ভোটাররা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তাঁবেদার তথ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিবি পুলিশের আক্রমণে টার্গেটকৃত নেতাকর্মীদের না পেলে পরিবারের সদস্যদের তুলে নেয়া হচ্ছে, এতে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। র‌্যাবের মতো গোয়েন্দা পুলিশও এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশ এখন মনুষ্যত্বহীন আওয়ামী ফ্যাসিজমের কালো ছায়ার নিচে। নির্যাতনের নির্মমতার মুখে দাঁড়িয়ে আছে গণতন্ত্রকামী মানুষ। অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামী জনগণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আজ স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও দেশকে গণতন্ত্রের অভিমুখী না করে নিষ্ঠুর ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করার আয়োজন চলছে মহাধুমধামে। কবির কথায় বলতে হয় ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ’। হিংসার একটা আদিম রূপের ছবি বাংলাদেশের সর্বত্র। প্রভুত্বকামী জুলুমবাজ সরকারের বিষাক্ত থাবা পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী বিদ্বেষের মন্ত্রণাদাতা, শান্তির শত্রু। বিগত কয়েকদিনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে এক সর্বগ্রাসী সহিংসতার ভয়ঙ্কর আক্রমণ। আইনের শাসন, সুবিচার, মানবিক মর্যাদার অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্রসমাজ থেকে মুছে দেয়া হয়েছে নগ্ন দলীয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় বাহিনী গুলোকে। গণতন্ত্র এখন মৃত, সেজন্যই গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের যেকোন কর্মসূচিকে বরদাস্ত করছে না অবৈধ সরকার। মিছিলের শব্দ শুনলেই গুলি চালানো হচ্ছে নির্বিচারে, সাপ পেটানোর মতো লাঠিপেটা করা হয় নেতাকর্মীদের। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে বিরোধী নেতাকর্মীদের হাত, পা, পিঠ, পাকস্থলীই বিদ্ধ হচ্ছে না, তাদের মহামূল্যবান অঙ্গ চোখ হারিয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে, চেনা পৃথিবী হয়ে যায় তাদের কাছে অচেনা। আজীবন পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দিন কাটাতে হয়, এ বেদনা সহ্য করার মতো নয়। তাদেরকে সহমর্মিতা জানানোর ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, বর্তমানে এদেশে মত প্রকাশের ওপর বাধা নিষেধ রয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে তার ঠাঁই হয় কারাগারে বা আয়নাঘরে। এখন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অধিকার পুলিশের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় আনার অধিকার ভোটাররা হারিয়েছে। প্রতিনিয়ত সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তাবেদার তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। অতিযত্নে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপপ্রচার আর কুৎসা ছড়ানোর জন্য গণমাধ্যমের কিছু অংশকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনকে রোধ করার জন্য অবৈধ কতৃর্ত্ববাদী সরকার জুলুমের সর্বোচ্চ পন্থা নামিয়ে এনেছে জনগণের ওপর। গণতন্ত্রের উল্টোযাত্রাকেই অব্যাহত রাখতে চায় আওয়ামী নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, কোনোভাবেই যাতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হতে না পারে সেজন্য খুন জখমে উৎসাহী ও সিন্ডিকেট হিতৈষী ম্যান্ডেটবিহীন আওয়ামী সরকার দমন-পীড়ণে নতুন নতুন মাত্রা যোগ করছে। মুদ্রা পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, শাসকগোষ্ঠীর আত্মীয়স্বজনদেরকে হরিলুট করার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এই অনাচারমূলক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা প্রয়োজন। তাই তারা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুম, খুন, ক্রসফায়ারের মতো অমানবিক নিষ্ঠুরতার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবেই এই আতঙ্কের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যাতে গণতন্ত্রকামী মানুষ রাজপথে ধেয়ে আসতে না পারে। বিএনপি ও ভিন্ন মতের মানুষদের পাইকারী হারে গ্রেফতার, রিমান্ডের নামে নির্যাতন, কখনো বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বিগত দেড় দশক ধরে। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এখনো সেই পৈশাচিকতা অব্যাহত আছে। আর এ ক্ষেত্রে দলীয় চেতনাবাহী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা এখন শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, ২৮ ও ২৯ জুলাইয়ের পূর্বাপর চলছে জুলুম-উৎপীড়ণের নানামুখী তৎপরতা। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের কতৃর্ক গ্রেফতার, গুম কোনোভাবেই থামছে না। গভীর রাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গোয়েন্দা পুলিশের হানায় দিনকে দিন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। বিশেষ বিশেষ টিম গঠন করে চালানো হচ্ছে অভিযান। তাদের আক্রমণে টার্গেটকৃত নেতাকর্মীদের না পেলে পরিবারের সদস্যদের তুলে নেয়া হচ্ছে, এতে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। র‌্যাবের মতো গোয়েন্দা পুলিশও এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুগত উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আজ আদালতে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীকে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হচ্ছে। ইসাহাক সরকারসহ ২৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আজ সাজা প্রদানের ঘটনাও আরেকটি নতুন ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত। অবিলম্বে এই সাজার আদেশ প্রত্যাহারের জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ।