নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম নাসির উদ্দিন বলেন, সরকার যখন চাইবে তখনই নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত থাকবে। নির্বাচন নিয়ে আমরা কোনো ধরনের দায় নিতে রাজি নই।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের জন্য ইসি প্রস্তুত নয় বা সক্ষমতা নেই এমন অভিযোগ এড়াতেই আমরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। সরকার থেকে চিঠি পাওয়ার পর আরও জোরেশোরে কার্যক্রম চলছে। যাতে সরকার যখনই নির্বাচন আয়োজন করতে বলবে আমরা প্রস্তুত থাকতে পারি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কেউ যদি অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়, তারা সফল হবে না। নির্বাচন একা করা সম্ভব নয়, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ওপর কোনো ধরনের চাপ দেননি। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি।
নাসির উদ্দিন বলেন, প্রস্তুতি বুঝতে এসেছিলেন। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি, বিশেষ ধরনের সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির কথা জানিয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। রমজানের আগে ভোটের কথা বলেছেন। আমরা প্রস্তুতি জোরদার করেছি, এটা ঠিক, তবে প্রস্তুতি আগেই শুরু করেছি।
তিনি বলেন, নানা ধরনের টানাপোড়েন আছে। সেজন্য হয়তো সময়টা ঠিক করতে একটু সময় লেগেছে। আমরা চেয়েছি, আমাদের ওপর যেন ‘প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নয়’ এই ধরনের কোনো ব্লেম না আসে। আমরা কোনো ধরনের ব্লেম নিতে রাজি নই। সেই জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের দলগুলো দেশের স্বার্থ সবার ওপরে। তারা দেশের স্বার্থে, দেশের জন্য কাজ করেন। শেষ পর্যন্ত একটা সমঝোতায় আসবে-দেখবেন। গতকাল থেকে প্রধান উপদেষ্টা আবার শুরু করেছেন, এটাও জানিয়েছি। বিশ্বাস করি, একটা সমঝোতা হবে।
মব কালচার-যেটা তিনি জানতে চেয়েছেন-আমি বলেছি, ভোটের এখনো দেরি আছে। যারা মব সৃষ্টি করে, তারা তখন ভোটের সময় এলাকায় চলে যাবে। আর পাওয়া যাবে না। ঢাকা শহরই তো ভোটের সময় খালি হয়ে যায়। তাদের আর পাওয়া যাবে না।
নাসির উদ্দিন বলেন, একটা কথা তিনি (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ফাঁক দিয়ে বলেছেন গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে। আমি বলেছি, এই দেশটা গুজবের দেশ। তিনি আবার গুজবটা দূর করতে চান। আমি গুজব কানে না নিতে বলেছি। আমরা পুরো নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছি।
ভোটের দায়িত্বে ৯৫ শতাংশ সরকারের লোক আর ৫ শতাংশ ইসির-তিনি এমন বলেছেন। আমি বলেছি, সরকার যদি ৯৫ শতাংশ রেজাল্ট নিজের দিকে আনে, এটা একটা বিষয়। আরেকটা হলো, আমাদের ৯৫ শতাংশ জনগণের পক্ষে। এটা সৎ উদ্দেশ্যে। অতীতে এটা অপব্যবহার হয়েছে। উনি বলেছেন, এটা ঠিক। আমি বলেছি, সরকারকে বাদ দিয়ে ভোট সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগবে, বাজেট লাগবে-ওনাদের সহযোগিতা ছাড়া ভোট সম্ভব নয়। ৯৫ শতাংশ সরকারের লোকবল রেজাল্ট নিজেদের পক্ষে নিচ্ছেন না, কেননা সরকারপ্রধান কোনো দলের না। তিনি স্বাধীনভাবে ইসি যেন কাজ করতে পারে, সে সহযোগিতা করেছেন-সেটাও জানিয়েছি। আমরা সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়া সহযোগিতা পেয়েছি।
সিইসি বলেন, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে কালো টাকার কথা এসেছে। এটা একেবারে বন্ধ করতে তো পারবো না। ঐক্যমতের ভিত্তিতে কমিশনের সঙ্গে বসেছি-সেটাও জানিয়েছি। আমি আশাবাদী, সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইট করবো। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করবো। কানাডা যাবো, সেখানে সুবিধা-অসুবিধা জানবো। যারা ভোটের দায়িত্বে থাকেন, তারা ভোট দিতে পারেন না-এবার সে ব্যবস্থা করবো। এটা জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আইটি সাপোর্টে পোস্টাল ব্যালটের কথা বলেছি।