Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার বিরোধী দলকে দমনে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান ফ্যাসিস্ট ও জবর দখলকারী সরকার বিরোধী দলকে দমনে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ ফ্যাসিবাদী সরকার দমন নিপীড়নে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার করছে বিচার বিভাগকে। এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তারা জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকারগুলোকে পুরোপুরি হরণ নেওয়া হচ্ছে। জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে সঙ্ঘাতের দিকে ফেলে দিতে এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে বর্তমান অবৈধ আওয়ামী সরকার। ফ্যাসিস্ট সরকার এইটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান দেশের একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি এই আন্দোলনকে সঠিক খাতে নিয়ে যাচ্ছে ঐক্যবদ্ধ করে, রাজনৈতিক হিংসা পরায়ণ হয়ে সেই নেতার মামলার রায় দিয়েছে সরকার। এমনি তার স্ত্রীকে এই রায় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে একটি মিথ্যা মামলায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বিস্ময় ব্যাপার- নিম্ন আদালতের যে কোর্টে তার সাজা হলো, হাইকোর্ট ১০ বছর সাজা দিয়ে দিল। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসহ বহু নেতা জামিন পেয়েছেন, পরবর্তীকালে মামলা খালাস হয়ে গেছে এবং মন্ত্রীও ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল। সেই মামলাগুলোতে দুর্নীতির একই ধরন ছিল। সেটাও ওয়ান ইলেভেনে দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলাগুলো খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে আমাদের এমপি ছিলেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরার তাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে ঈশ্বরদীতে আমাদের নেতা মিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের অপরাধ ২৫-২৬ বছর আগে পাবনায় একটা সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে এমনভাবে তারা প্রচার করছে যেন এগুলো সত্য, বাকিগুলো মিথ্যা। গণমাধ্যমকেও তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, জনগণ যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, লাখ লাখ মানুষ কয়েক বছর ধরে এই সংগ্রামে নেমেছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন লাখ লাখ মানুষ রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই জন্য তারা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন চেয়েছে। ঠিক সেই সময়ে চলমান আন্দোলনের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যিনি এই আন্দোলনকে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সঠিকপথে নিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব, তার স্ত্রী অরাজনৈতিক মানুষ ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র লক্ষ্য আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া, তাকে ধীরগতি করা। যেখানে মামলাই হয় না, সেখানে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রথম থেকেই এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে। এই যে কেয়ারটেকার সরকার ইস্যুটি নিয়ে গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাও কিন্তু আদালতকে নিয়ে।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই ফরমায়েশি রায় দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সারাদেশের মানুষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বর্তমান আন্দোলন চলমান আন্দোলন। এ আন্দোলন তারেক রহমানের রায় দিয়ে ও হয়রানি করে স্তব্ধ করা যাবে না। এ দেশের মানুষ বিজয় ছাড়া এবার ঘরে ফিরবে না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বুধবার (২ আগস্ট) গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ তাকে বেদম পিটিয়েছে।’ নুরের ওপর আক্রমণের নিন্দাও জানান মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

সরকার বিরোধী দলকে দমনে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৪:০৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমান ফ্যাসিস্ট ও জবর দখলকারী সরকার বিরোধী দলকে দমনে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ ফ্যাসিবাদী সরকার দমন নিপীড়নে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার করছে বিচার বিভাগকে। এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তারা জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকারগুলোকে পুরোপুরি হরণ নেওয়া হচ্ছে। জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে সঙ্ঘাতের দিকে ফেলে দিতে এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে বর্তমান অবৈধ আওয়ামী সরকার। ফ্যাসিস্ট সরকার এইটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান দেশের একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি এই আন্দোলনকে সঠিক খাতে নিয়ে যাচ্ছে ঐক্যবদ্ধ করে, রাজনৈতিক হিংসা পরায়ণ হয়ে সেই নেতার মামলার রায় দিয়েছে সরকার। এমনি তার স্ত্রীকে এই রায় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে একটি মিথ্যা মামলায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বিস্ময় ব্যাপার- নিম্ন আদালতের যে কোর্টে তার সাজা হলো, হাইকোর্ট ১০ বছর সাজা দিয়ে দিল। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসহ বহু নেতা জামিন পেয়েছেন, পরবর্তীকালে মামলা খালাস হয়ে গেছে এবং মন্ত্রীও ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল। সেই মামলাগুলোতে দুর্নীতির একই ধরন ছিল। সেটাও ওয়ান ইলেভেনে দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলাগুলো খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে আমাদের এমপি ছিলেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরার তাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে ঈশ্বরদীতে আমাদের নেতা মিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের অপরাধ ২৫-২৬ বছর আগে পাবনায় একটা সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে এমনভাবে তারা প্রচার করছে যেন এগুলো সত্য, বাকিগুলো মিথ্যা। গণমাধ্যমকেও তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, জনগণ যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, লাখ লাখ মানুষ কয়েক বছর ধরে এই সংগ্রামে নেমেছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন লাখ লাখ মানুষ রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই জন্য তারা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন চেয়েছে। ঠিক সেই সময়ে চলমান আন্দোলনের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যিনি এই আন্দোলনকে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সঠিকপথে নিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব, তার স্ত্রী অরাজনৈতিক মানুষ ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র লক্ষ্য আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া, তাকে ধীরগতি করা। যেখানে মামলাই হয় না, সেখানে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রথম থেকেই এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে। এই যে কেয়ারটেকার সরকার ইস্যুটি নিয়ে গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাও কিন্তু আদালতকে নিয়ে।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই ফরমায়েশি রায় দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সারাদেশের মানুষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বর্তমান আন্দোলন চলমান আন্দোলন। এ আন্দোলন তারেক রহমানের রায় দিয়ে ও হয়রানি করে স্তব্ধ করা যাবে না। এ দেশের মানুষ বিজয় ছাড়া এবার ঘরে ফিরবে না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বুধবার (২ আগস্ট) গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ তাকে বেদম পিটিয়েছে।’ নুরের ওপর আক্রমণের নিন্দাও জানান মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।