Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না : রিজভী

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রুহুল কবির রিজভী

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন হলেই কেবল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তার আগে নয়।

শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে নারায়নগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায় মহানগর বিএনপির সদস্য সদ্য প্রয়াত মাহমুদুর রহমানের পরিবারকে সমবেদনা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এক কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, এই সরকারের অধিনে নিশি রাতের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর পার্লামেন্ট বাতিল করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। এর আগে কোনো নির্বাচন, সুষ্ঠু বা গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করি না। শেখ হাসিনার অধীনে যেটা হবে সেটা হলো রাতের নির্বাচন।

তারেক-জোবয়দার সাজায় বিএনপি দমে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা এর আগে আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে বন্দি করে রেখেছে। সর্বশেষ যে নেতা দেশবাসীকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করেছে তার বিরুদ্ধে সাজানো-পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রী স্বনামধন্য চিকিৎসক তাকেও পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। কেন এই পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হলো? কারণ তিনি যেন দেশে ফিরতে না পারেন।

তবে এসব হযরানি করে কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আওয়াজ আমাদের উজ্জীবিত করে। লন্ডন থেকে দেশনায়ক তারেক রহমান দলকে সুসংগঠিত করছেন। আজ সারাদেশের জাতীয়তাবাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। এসব সাজা কিংবা নেতাকর্মীদের পুলিশি হয়রানি করে কোনো লাভ হবে না। এসব করে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

বিচার বিভাগ সরকারের অনুগত উল্লেক করে রিজভী বলেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের জন্যই এমন রায় দেওয়া হয়েছে, যা দেশবাসী প্রত্যাখান করেছে। এই সরকার শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকেই নয়, তারা গণমাধ্যমকেও নানানভাবে চাপ দিচ্ছে। জোবায়েদা রহমান একটি বিখ্যাত পরিবারের পূত্রবধূ। শুধুমাত্র তাকে হেয় করার জন্য সরকার এ রায় দিয়েছে। কত মামলা বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে। সাগর-রুনির মামলা নিরানব্বই বার পেছানো হয়েছে। আর এ মামলা বিশ দিন এক মাসের মধ্যে বিচার করে সাজা দেওয়া হয়েছে। এটাই তো প্রমাণ করে যে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এ রায়গুলো দেওয়া হচ্ছে।

নিহত মাহমুদের নামে অসংখ্য মামলা ছিল। তিনি দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিলেন। দলীয় সব কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় থাকতেন। তিনি স্লোগান দিতে দিতে ঢাকার সমাবেশস্থলে গিয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এ ধরনের নিবেদিত নেতাকর্মী ঘরে ঘরে আছে বলেই দল এখনও টিকে আছে।444

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য মাহমুদের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী মানসিক চাপে আছেন। যেমনি শারীরিক নির্যাতনে শিকার, তেমনি মানসিক চাপ। বাসায় বসে থাকলেও তার নামে মামলা হয়। প্রতিনিয়ত পুলিশি আক্রমণ এবং আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। মানসিকভাবে তারা এমনভাবে বিপর্যস্ত যে, আমাদের নেতাকর্মী কখন কে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মাহমুদ সে ধরনেরই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। আমি আজকে শোকাবহ পরিবারকে সমবেদনা জানাতে দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহামুদের বাসায় এসেছি। তিনি গত ২৮ জুলাই বিএনপির মহা সমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে স্লোগান দিতে গিয়ে গরমে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মাহমুদের নামে মামলা আছে। কিন্তু তিনি এতই নিবেদিত ছিলেন কখনো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতেন না। যার কারণে অসুস্থ অবস্থায়ই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। ঢাকার সমাবেশস্থলে গিয়ে স্লোগান দিতে দিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এই বেদনাবিদুর ঘটনায় শোক জানানোর ভাষা আমাদের নেই। তার মতো নিবেদিত নেতাকর্মীরা আছে বলেই জাতীয়তাবাদী শক্তি টিকে আছে।

এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম ফারুক খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির সাবেকসহ সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সদস্য শওকত হাসেম শকু, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান জিকু উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন হলেই কেবল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তার আগে নয়।

শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে নারায়নগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায় মহানগর বিএনপির সদস্য সদ্য প্রয়াত মাহমুদুর রহমানের পরিবারকে সমবেদনা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এক কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, এই সরকারের অধিনে নিশি রাতের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর পার্লামেন্ট বাতিল করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। এর আগে কোনো নির্বাচন, সুষ্ঠু বা গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করি না। শেখ হাসিনার অধীনে যেটা হবে সেটা হলো রাতের নির্বাচন।

তারেক-জোবয়দার সাজায় বিএনপি দমে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা এর আগে আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে বন্দি করে রেখেছে। সর্বশেষ যে নেতা দেশবাসীকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করেছে তার বিরুদ্ধে সাজানো-পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রী স্বনামধন্য চিকিৎসক তাকেও পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। কেন এই পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হলো? কারণ তিনি যেন দেশে ফিরতে না পারেন।

তবে এসব হযরানি করে কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আওয়াজ আমাদের উজ্জীবিত করে। লন্ডন থেকে দেশনায়ক তারেক রহমান দলকে সুসংগঠিত করছেন। আজ সারাদেশের জাতীয়তাবাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। এসব সাজা কিংবা নেতাকর্মীদের পুলিশি হয়রানি করে কোনো লাভ হবে না। এসব করে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

বিচার বিভাগ সরকারের অনুগত উল্লেক করে রিজভী বলেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের জন্যই এমন রায় দেওয়া হয়েছে, যা দেশবাসী প্রত্যাখান করেছে। এই সরকার শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকেই নয়, তারা গণমাধ্যমকেও নানানভাবে চাপ দিচ্ছে। জোবায়েদা রহমান একটি বিখ্যাত পরিবারের পূত্রবধূ। শুধুমাত্র তাকে হেয় করার জন্য সরকার এ রায় দিয়েছে। কত মামলা বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে। সাগর-রুনির মামলা নিরানব্বই বার পেছানো হয়েছে। আর এ মামলা বিশ দিন এক মাসের মধ্যে বিচার করে সাজা দেওয়া হয়েছে। এটাই তো প্রমাণ করে যে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এ রায়গুলো দেওয়া হচ্ছে।

নিহত মাহমুদের নামে অসংখ্য মামলা ছিল। তিনি দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিলেন। দলীয় সব কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় থাকতেন। তিনি স্লোগান দিতে দিতে ঢাকার সমাবেশস্থলে গিয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এ ধরনের নিবেদিত নেতাকর্মী ঘরে ঘরে আছে বলেই দল এখনও টিকে আছে।444

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য মাহমুদের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী মানসিক চাপে আছেন। যেমনি শারীরিক নির্যাতনে শিকার, তেমনি মানসিক চাপ। বাসায় বসে থাকলেও তার নামে মামলা হয়। প্রতিনিয়ত পুলিশি আক্রমণ এবং আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। মানসিকভাবে তারা এমনভাবে বিপর্যস্ত যে, আমাদের নেতাকর্মী কখন কে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মাহমুদ সে ধরনেরই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। আমি আজকে শোকাবহ পরিবারকে সমবেদনা জানাতে দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহামুদের বাসায় এসেছি। তিনি গত ২৮ জুলাই বিএনপির মহা সমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে স্লোগান দিতে গিয়ে গরমে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মাহমুদের নামে মামলা আছে। কিন্তু তিনি এতই নিবেদিত ছিলেন কখনো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতেন না। যার কারণে অসুস্থ অবস্থায়ই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। ঢাকার সমাবেশস্থলে গিয়ে স্লোগান দিতে দিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এই বেদনাবিদুর ঘটনায় শোক জানানোর ভাষা আমাদের নেই। তার মতো নিবেদিত নেতাকর্মীরা আছে বলেই জাতীয়তাবাদী শক্তি টিকে আছে।

এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম ফারুক খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির সাবেকসহ সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সদস্য শওকত হাসেম শকু, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান জিকু উপস্থিত ছিলেন।