Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই নয়।

সোমবার (৮ মে) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, অবৈধ সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই নয়। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় মাঠ সাজানোর অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর।

বিএনপির গণ-আন্দোলন নস্যাৎ করতে কোনো কারণ ছাড়াই সরকার নাশকতার মামলা দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ বোমা নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছিল। নির্বাচন সামনে রেখে সর্বনাশা আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি করতে মরিয়া সরকার। জনগণ রাজপথে নেমেছে, যতই কৌশল করুক, জেল-জুলুম-হুলিয়া দিয়ে সরকার পার পাবে না।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, সরকার ভয় থেকে বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করছে, যাতে একটা কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সরকারের অনড় ও একগুঁয়েমি অবস্থান জনগণ নস্যাৎ করে দেবে।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সফরে সরকার সত্যকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টা করেছে,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন বলেই সেটা কাটানোর জন্য বিদেশে দেনদরবার করছে সরকার, এটা একটা ব্যর্থ প্রয়াস। সরকারকে ত্যাজ্য করেছে বলেই বিদেশেও সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।

রিজভী আরো বলেন, জাতীয় নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে, তখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, হামলা নির্যাতন এবং পাইকারি গ্রেপ্তার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী অবৈধ সরকারের দলবাজ প্রশাসন।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, ভোট ডাকাতির নানা রকম কারিগরি করতে মাঠ সাজানো শুরু হয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো সেই একই প্রক্রিয়ায় পুরানো পথে হাঁটতে শুরু করেছে তারা। ইতোমধ্যে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার নিজেদের ‘তখতে তাউস’ রক্ষা করতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এখনো আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আওয়ামী আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলায় সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সম্প্রতি গায়েবি মামলা দায়েরের সূত্রপাত করেছে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারের প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, কোনো কিছু ঘটেনি, হঠাৎ বলে দিলো-নাশকতা হয়েছে। নিজেরাই বোমা রেখে মামলা দিচ্ছে, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবার দেখা গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ নিজেরাই বোমাসহ প্রবেশ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফাঁসাতে। পুলিশ যে বোমা নিয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছে, সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে আসামি করার খেলা চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ কেউ শোনেনি, দেখেওনি। কিন্তু আসামি করা হচ্ছে মৃত ব্যক্তি ও কারাবন্দি নেতাদের। সারাদেশে চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম এই ভয়াবহ মামলাবাজি আর আটক বাণিজ্য।

তিনি বলেন, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার নিয়ে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশ, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও নিশিরাতের সরকার নিজেকে রক্ষা করতে এই অপকর্মে মরিয়া। ২০২১ সালের ২৪ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গায়েবি মামলা করে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষায় পাঁচ দফা নির্দেশনা দিলেও তা পরোয়া করে না আওয়ামী সরকারের পুলিশ প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ বাহিনী সরকার দলীয় সংস্থায় পরিণত হয়েছে- এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ প্রশাসনের দলবাজ হোমড়া চোমড়া ও প্রশাসনের অফিসাররা আবারো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বিয়াম ভবনসহ এখানে সেখানে ভোট ডাকাতির কলাকৌশল ও মাঠ সাজানো নিয়ে গুপ্ত বৈঠক শুরু করেছে।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা অভিযোগ করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার প্যাকেজ খরচ হিসাবে ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকার বাজেট চেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে ১৫৮ কোটি টাকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনাকাটায় ব্যয় হবে। সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠেকাতে ৫৪০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়ের প্রস্তাব রয়েছে তাদের বাজেটে।

তিনি বলেন, তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি ও কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার কিনতে মোট ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ৮ নম্বর খাতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে পুলিশের গতিও বাড়াতে হবে। এখানেই থেমে নেই আওয়ামী লীগ। নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় পরিচয় দেখে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী রদবদল ও পদোন্নতি শুরু হয়েছে। তবে এতসব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে।

রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে বেশ কয়েক মাস কারাগারে কাটাতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি থাকা হাজার হাজার মানুষ যেভাবে কারামুক্তির প্রহর গুনছে, একইভাবে দেশের কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ দেশে ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচার, অবিচার, অনাচার আর গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে মুক্তি চাইছে। মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রামের অনুপ্রেরণায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকামী মানুষের মুক্তির চলমান এই মিছিলকে গুম-খুন বা অপহরণ করে কিংবা অন্যায়ভাবে জেল জুলুম হুলিয়া দিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র আদায়ে জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি সরকার তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞার শর নিক্ষেপ করে যাচ্ছে। স্বার্থান্ধতা, ঔদ্ধত্য, অসহিষ্ণুতা, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং আকণ্ঠ দুর্নীতিতে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঝটপট সাদাকে কালো এবং কালোকে সাদা বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালালেও তার সরকারের অন্যায়-অনাচার আর দুর্নীতিকে পর্দার আড়ালে রাখতে পারছেন না। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জনদাবিকে অগ্রাহ্য করে সামনের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা মিশ্রিত অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছেন অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে। তবে অনঢ়তা, একগুঁয়েমি এবং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার সব ফন্দি জনগণ নস্যাৎ করে দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মীর নেওয়াজ আলী, মনির হোসেন, তরিকুল আলম তেনজিং, আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৩:২০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই নয়।

সোমবার (৮ মে) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, অবৈধ সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সরকার জমিদারি কায়দায় বিএনপিকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই নয়। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় মাঠ সাজানোর অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর।

বিএনপির গণ-আন্দোলন নস্যাৎ করতে কোনো কারণ ছাড়াই সরকার নাশকতার মামলা দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ বোমা নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছিল। নির্বাচন সামনে রেখে সর্বনাশা আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি করতে মরিয়া সরকার। জনগণ রাজপথে নেমেছে, যতই কৌশল করুক, জেল-জুলুম-হুলিয়া দিয়ে সরকার পার পাবে না।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, সরকার ভয় থেকে বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করছে, যাতে একটা কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সরকারের অনড় ও একগুঁয়েমি অবস্থান জনগণ নস্যাৎ করে দেবে।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সফরে সরকার সত্যকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টা করেছে,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন বলেই সেটা কাটানোর জন্য বিদেশে দেনদরবার করছে সরকার, এটা একটা ব্যর্থ প্রয়াস। সরকারকে ত্যাজ্য করেছে বলেই বিদেশেও সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।

রিজভী আরো বলেন, জাতীয় নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে, তখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, হামলা নির্যাতন এবং পাইকারি গ্রেপ্তার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী অবৈধ সরকারের দলবাজ প্রশাসন।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, ভোট ডাকাতির নানা রকম কারিগরি করতে মাঠ সাজানো শুরু হয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো সেই একই প্রক্রিয়ায় পুরানো পথে হাঁটতে শুরু করেছে তারা। ইতোমধ্যে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার নিজেদের ‘তখতে তাউস’ রক্ষা করতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এখনো আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আওয়ামী আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলায় সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সম্প্রতি গায়েবি মামলা দায়েরের সূত্রপাত করেছে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারের প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, কোনো কিছু ঘটেনি, হঠাৎ বলে দিলো-নাশকতা হয়েছে। নিজেরাই বোমা রেখে মামলা দিচ্ছে, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবার দেখা গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ নিজেরাই বোমাসহ প্রবেশ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফাঁসাতে। পুলিশ যে বোমা নিয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছে, সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে আসামি করার খেলা চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ কেউ শোনেনি, দেখেওনি। কিন্তু আসামি করা হচ্ছে মৃত ব্যক্তি ও কারাবন্দি নেতাদের। সারাদেশে চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম এই ভয়াবহ মামলাবাজি আর আটক বাণিজ্য।

তিনি বলেন, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার নিয়ে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশ, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও নিশিরাতের সরকার নিজেকে রক্ষা করতে এই অপকর্মে মরিয়া। ২০২১ সালের ২৪ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গায়েবি মামলা করে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষায় পাঁচ দফা নির্দেশনা দিলেও তা পরোয়া করে না আওয়ামী সরকারের পুলিশ প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ বাহিনী সরকার দলীয় সংস্থায় পরিণত হয়েছে- এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ প্রশাসনের দলবাজ হোমড়া চোমড়া ও প্রশাসনের অফিসাররা আবারো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বিয়াম ভবনসহ এখানে সেখানে ভোট ডাকাতির কলাকৌশল ও মাঠ সাজানো নিয়ে গুপ্ত বৈঠক শুরু করেছে।

ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা অভিযোগ করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার প্যাকেজ খরচ হিসাবে ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকার বাজেট চেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে ১৫৮ কোটি টাকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনাকাটায় ব্যয় হবে। সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠেকাতে ৫৪০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়ের প্রস্তাব রয়েছে তাদের বাজেটে।

তিনি বলেন, তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি ও কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার কিনতে মোট ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ৮ নম্বর খাতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে পুলিশের গতিও বাড়াতে হবে। এখানেই থেমে নেই আওয়ামী লীগ। নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় পরিচয় দেখে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী রদবদল ও পদোন্নতি শুরু হয়েছে। তবে এতসব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে।

রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে বেশ কয়েক মাস কারাগারে কাটাতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি থাকা হাজার হাজার মানুষ যেভাবে কারামুক্তির প্রহর গুনছে, একইভাবে দেশের কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ দেশে ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচার, অবিচার, অনাচার আর গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে মুক্তি চাইছে। মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রামের অনুপ্রেরণায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকামী মানুষের মুক্তির চলমান এই মিছিলকে গুম-খুন বা অপহরণ করে কিংবা অন্যায়ভাবে জেল জুলুম হুলিয়া দিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র আদায়ে জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি সরকার তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞার শর নিক্ষেপ করে যাচ্ছে। স্বার্থান্ধতা, ঔদ্ধত্য, অসহিষ্ণুতা, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং আকণ্ঠ দুর্নীতিতে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঝটপট সাদাকে কালো এবং কালোকে সাদা বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালালেও তার সরকারের অন্যায়-অনাচার আর দুর্নীতিকে পর্দার আড়ালে রাখতে পারছেন না। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জনদাবিকে অগ্রাহ্য করে সামনের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা মিশ্রিত অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছেন অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে। তবে অনঢ়তা, একগুঁয়েমি এবং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার সব ফন্দি জনগণ নস্যাৎ করে দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মীর নেওয়াজ আলী, মনির হোসেন, তরিকুল আলম তেনজিং, আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ ।