Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার চা শ্রমিকদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার চা শ্রমিকদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চা বাগানের শ্রমিকরা ভাসমান অবস্থায় থাকবে না। তাদের ভালো রাখার সব ব্যবস্থা নেবে সরকার। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটা আলাদা ফান্ড আছে, যেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে যারা অনগ্রসর জনগোষ্ঠী আমরা তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা দিয়ে থাকি। চা শ্রমিকদের জন্যও আমরা একটি বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করি।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল চায়ের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেটাকে সম্প্রসারণ করা, যত্ন করা, কীভাবে আরো চা উৎপাদন বাড়ান যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ছাড়া চা বোর্ড, ক্ষুদ্র চাষিদের প্রযুক্তি সহায়তা, প্রণোদনা, সবদিক থেকে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি লালমনিরহাটেও চা বোর্ডের স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পঞ্চগড়ে আঙ্গিনায়ও চা হচ্ছে, তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। চা আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

চা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের চা চাষ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে। যেখানে আমাদের সামান্য চা উৎপাদন হতো, সেখানে চা উৎপাদন এবং গ্রহণও বেড়েছে। পঞ্চগড়ে আঙ্গিনায়ও চা হচ্ছে, তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। চা আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ফ্লেভারের চা বাজারজাত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের রুচি বদলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভারের চায়ের চাহিদা বেড়েছে। বাজারে হার্বাল টি, মশলা টি, তুলসি পাতার চা, জেসমিন টি, এগুলো চলে। শুধু চা পাতা বাল্কে বিক্রি না করে, ভ্যালু অ্যাড করেন। তাহলে ভালো দাম পাবেন। পাট পাতা থেকেও চা তৈরি হয়। এ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। খামারিরা বলছেন, এটি নাকি ডায়াবেটিকসের জন্য ভালো।

শেখ হাসিনা বলেন, চা অর্থকরি ফসল হচ্ছে। দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। গবেষণার ওপর বিশেষ গুরত্ব দিতে হবে।

মালিকদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হলে তাদের থেকে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ নানান বিষয় দেখবেন। চা শ্রমিকদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই, আপন ভূমি নেই। আমরা তাদের সেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দেবো। কেউ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। আমাদের পরিষ্কার কথা।

তিনি বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামের চা দোকানে আড্ডা বসে। চায়ের কাপে ঝড় তোলে। রাজা উজির মারে ওখানে। দেশি বিদেশি নানান খবর রাখে সেখানকার মানুষ। আর চা পান করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেয়। এ কারণে আমাদের চায়ের চাহিদাও বেড়ে গেছে। নিজস্ব উৎপাদনে যেন চাহিদা পূরণ করতে পারি, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্য চায়েরও উৎপাদন বেড়েছে। উভয়ের সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের চলতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, চা আমার খুব প্রিয়। আমি চা পান করি। কারণ, জাতির পিতা চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর বিশেষ করে, চা শ্রমিকরা নৌকায় ভোট দেয়। অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের অন্য দিকে নিতে পারে নাই। তাদের (শ্রমিক) ভালোবাসা, আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চা শ্রমিক, মালিক, রফতানিকারকদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিটিএবি) সভাপতি শাহ মঈনুদ্দীন হাসান, বাংলাদেশের চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ এবং বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি. রহমান ও পুরস্কার প্রাপ্ত চা শ্রমিক উপলব্ধি ত্রিপুরা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।
এ সময় বাংলাদেশের চা শিল্প নিয়ে একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সরকার চা শ্রমিকদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:১৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার চা শ্রমিকদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চা বাগানের শ্রমিকরা ভাসমান অবস্থায় থাকবে না। তাদের ভালো রাখার সব ব্যবস্থা নেবে সরকার। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটা আলাদা ফান্ড আছে, যেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে যারা অনগ্রসর জনগোষ্ঠী আমরা তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা দিয়ে থাকি। চা শ্রমিকদের জন্যও আমরা একটি বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করি।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল চায়ের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেটাকে সম্প্রসারণ করা, যত্ন করা, কীভাবে আরো চা উৎপাদন বাড়ান যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ছাড়া চা বোর্ড, ক্ষুদ্র চাষিদের প্রযুক্তি সহায়তা, প্রণোদনা, সবদিক থেকে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি লালমনিরহাটেও চা বোর্ডের স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পঞ্চগড়ে আঙ্গিনায়ও চা হচ্ছে, তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। চা আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

চা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের চা চাষ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে। যেখানে আমাদের সামান্য চা উৎপাদন হতো, সেখানে চা উৎপাদন এবং গ্রহণও বেড়েছে। পঞ্চগড়ে আঙ্গিনায়ও চা হচ্ছে, তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। চা আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ফ্লেভারের চা বাজারজাত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের রুচি বদলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভারের চায়ের চাহিদা বেড়েছে। বাজারে হার্বাল টি, মশলা টি, তুলসি পাতার চা, জেসমিন টি, এগুলো চলে। শুধু চা পাতা বাল্কে বিক্রি না করে, ভ্যালু অ্যাড করেন। তাহলে ভালো দাম পাবেন। পাট পাতা থেকেও চা তৈরি হয়। এ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। খামারিরা বলছেন, এটি নাকি ডায়াবেটিকসের জন্য ভালো।

শেখ হাসিনা বলেন, চা অর্থকরি ফসল হচ্ছে। দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। গবেষণার ওপর বিশেষ গুরত্ব দিতে হবে।

মালিকদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হলে তাদের থেকে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ নানান বিষয় দেখবেন। চা শ্রমিকদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই, আপন ভূমি নেই। আমরা তাদের সেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দেবো। কেউ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। আমাদের পরিষ্কার কথা।

তিনি বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামের চা দোকানে আড্ডা বসে। চায়ের কাপে ঝড় তোলে। রাজা উজির মারে ওখানে। দেশি বিদেশি নানান খবর রাখে সেখানকার মানুষ। আর চা পান করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেয়। এ কারণে আমাদের চায়ের চাহিদাও বেড়ে গেছে। নিজস্ব উৎপাদনে যেন চাহিদা পূরণ করতে পারি, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্য চায়েরও উৎপাদন বেড়েছে। উভয়ের সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের চলতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, চা আমার খুব প্রিয়। আমি চা পান করি। কারণ, জাতির পিতা চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর বিশেষ করে, চা শ্রমিকরা নৌকায় ভোট দেয়। অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের অন্য দিকে নিতে পারে নাই। তাদের (শ্রমিক) ভালোবাসা, আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চা শ্রমিক, মালিক, রফতানিকারকদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিটিএবি) সভাপতি শাহ মঈনুদ্দীন হাসান, বাংলাদেশের চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ এবং বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি. রহমান ও পুরস্কার প্রাপ্ত চা শ্রমিক উপলব্ধি ত্রিপুরা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।
এ সময় বাংলাদেশের চা শিল্প নিয়ে একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।