Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার চায় কৃষক তার ফসলের ভালো দাম পাক : খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সরকার চায় কৃষক তার ফসলের ভালো দাম পাক। কৃষক ভালো দাম পেলেই আমরা খুশি। আর সেটা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।

রোববার (৭ মে) সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষে বোরো সংগ্রহ অভিযান-২০২৩ এর ভার্চুয়াল উদ্বোধন শেষে সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সরকার এবার বেশি দামে ধান কিনছে। কৃষকদের স্বার্থ বিবেচনা করেই এটা করা হয়েছে। কৃষকরা ধান দিতে এসে যেন কষ্ট না পায়। কৃষক ধান দিতে এসে যেন ফেরত না যায়, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে ধানের আর্দ্রতার পরিমাণ ১৪ ভাগের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যাবে না। আর্দ্রতা ঠিক থাকলে ধান ফেরত দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে কৃষকের সব ধান কেটে ফেলা উচিত। কেননা, এরইমধ্যে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন কৃষকদের এ বিষয়ে সচতেন করতে ভূমিকা রাখত পারে।’

মন্ত্রী বলেন, গত মৌসুমে যেসব মিল মালিক চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেনি, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ফিট লিস্টে নাম না পাঠানোর জন্য খাদ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা চুক্তি করে সরকারকে সহায়তা করেছে, তারা সরকারের সুনজরে আছে। যারা আংশিক শর্ত পূরণ করেছ তারাও এ বছর চুক্তি করতে পারবে। একইসঙ্গে কেউ যেন অবৈধ মজুত করতে না পারে— এ বিষয়েও কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে মনে করেছিল, দেশে দুর্ভিক্ষ হবে, অনেক কামাই করবে। এজন্য আমন মৌসুমে তারা মজুদ করেছিল। কিন্তু তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। গত মৌসুমে যে সকল মিল মালিক চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ফিট লিস্টে নাম না পাঠানোর জন্য খাদ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যারা চুক্তি করে সরকারকে সহায়তা করেছে তারা সরকারের সুনজরে আছে। যারা আংশিক শর্ত পূরণ করেছ তারাও এ বছর চুক্তি করতে পারবে। একই সঙ্গে কেউ যেন অবৈধ মজুত করতে না পারে— এ বিষয়েও কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে সারা বাংলাদেশে ধান ও চাল কেনা শুরু হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও জানাতে হবে যে আমরা ক্রয় শুরু করেছি। প্রান্তিক কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়ে কোনো ব্যবসায়ীর ধান যাতে কেনা না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

মিল মালিকদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, কোনো খারাপ চাল যাতে কেনা না হয়। পুরান চাল ছাঁটাই করে নিয়ে এসে নতুন বলে বিক্রি করতে চাইলে তা যাতে কেনা না হয়। কোনোক্রমেই এ ধরনের চাল কেনা যাবে না। নীতিমালা অনুসারে ভালো চাল কিনতে হবে। যখন আমরা খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি বা ওএমএসে যখন চাল দেওয়া হবে, তখন যাতে তা ভালো থাকে। মানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা ধান দিতে এসে যাতে কোনো কষ্ট না পান। কৃষকরা পেটের যোগান দেন, তারা সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি, তাদের মর্যাদা দিতে হবে। তারা ধান নিয়ে এসে যেন ফেরত যেতে না হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের উচিত হবে, কৃষকরা ধান দেবে, তাদের বাড়িতে গিয়ে ময়েশ্চার মেশিন দিয়ে আর্দ্রতা দেখে নেওয়া। তারপর ভালো ধান গুদামে নিয়ে গেলে, তা যদি ফেরত দেওয়া হয়, তাহলে আমার পরিষ্কার কথা, তাদের (কর্মকর্তাদের) জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় বোরো ধান,চাল ও গমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

সভায় আসন্ন বোরো সংগ্রহ ২০২৩ মৌসুমে ৪ লাখ টন ধান, সাড়ে ১২ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ১ লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ আজ ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত চলবে।

প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা এবং গম ৩৫ টাকা। ২০২২ সালে ধান-চালের দাম ছিল যথাক্রমে ধান ২৭ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪০ টাকা এবং গম ২৮ টাকা।

আবহাওয়া

সরকার চায় কৃষক তার ফসলের ভালো দাম পাক : খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সরকার চায় কৃষক তার ফসলের ভালো দাম পাক। কৃষক ভালো দাম পেলেই আমরা খুশি। আর সেটা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।

রোববার (৭ মে) সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষে বোরো সংগ্রহ অভিযান-২০২৩ এর ভার্চুয়াল উদ্বোধন শেষে সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সরকার এবার বেশি দামে ধান কিনছে। কৃষকদের স্বার্থ বিবেচনা করেই এটা করা হয়েছে। কৃষকরা ধান দিতে এসে যেন কষ্ট না পায়। কৃষক ধান দিতে এসে যেন ফেরত না যায়, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে ধানের আর্দ্রতার পরিমাণ ১৪ ভাগের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যাবে না। আর্দ্রতা ঠিক থাকলে ধান ফেরত দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে কৃষকের সব ধান কেটে ফেলা উচিত। কেননা, এরইমধ্যে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন কৃষকদের এ বিষয়ে সচতেন করতে ভূমিকা রাখত পারে।’

মন্ত্রী বলেন, গত মৌসুমে যেসব মিল মালিক চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেনি, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ফিট লিস্টে নাম না পাঠানোর জন্য খাদ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা চুক্তি করে সরকারকে সহায়তা করেছে, তারা সরকারের সুনজরে আছে। যারা আংশিক শর্ত পূরণ করেছ তারাও এ বছর চুক্তি করতে পারবে। একইসঙ্গে কেউ যেন অবৈধ মজুত করতে না পারে— এ বিষয়েও কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে মনে করেছিল, দেশে দুর্ভিক্ষ হবে, অনেক কামাই করবে। এজন্য আমন মৌসুমে তারা মজুদ করেছিল। কিন্তু তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। গত মৌসুমে যে সকল মিল মালিক চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ফিট লিস্টে নাম না পাঠানোর জন্য খাদ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যারা চুক্তি করে সরকারকে সহায়তা করেছে তারা সরকারের সুনজরে আছে। যারা আংশিক শর্ত পূরণ করেছ তারাও এ বছর চুক্তি করতে পারবে। একই সঙ্গে কেউ যেন অবৈধ মজুত করতে না পারে— এ বিষয়েও কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে সারা বাংলাদেশে ধান ও চাল কেনা শুরু হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও জানাতে হবে যে আমরা ক্রয় শুরু করেছি। প্রান্তিক কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়ে কোনো ব্যবসায়ীর ধান যাতে কেনা না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

মিল মালিকদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, কোনো খারাপ চাল যাতে কেনা না হয়। পুরান চাল ছাঁটাই করে নিয়ে এসে নতুন বলে বিক্রি করতে চাইলে তা যাতে কেনা না হয়। কোনোক্রমেই এ ধরনের চাল কেনা যাবে না। নীতিমালা অনুসারে ভালো চাল কিনতে হবে। যখন আমরা খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি বা ওএমএসে যখন চাল দেওয়া হবে, তখন যাতে তা ভালো থাকে। মানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা ধান দিতে এসে যাতে কোনো কষ্ট না পান। কৃষকরা পেটের যোগান দেন, তারা সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি, তাদের মর্যাদা দিতে হবে। তারা ধান নিয়ে এসে যেন ফেরত যেতে না হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের উচিত হবে, কৃষকরা ধান দেবে, তাদের বাড়িতে গিয়ে ময়েশ্চার মেশিন দিয়ে আর্দ্রতা দেখে নেওয়া। তারপর ভালো ধান গুদামে নিয়ে গেলে, তা যদি ফেরত দেওয়া হয়, তাহলে আমার পরিষ্কার কথা, তাদের (কর্মকর্তাদের) জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় বোরো ধান,চাল ও গমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

সভায় আসন্ন বোরো সংগ্রহ ২০২৩ মৌসুমে ৪ লাখ টন ধান, সাড়ে ১২ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ১ লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ আজ ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত চলবে।

প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা এবং গম ৩৫ টাকা। ২০২২ সালে ধান-চালের দাম ছিল যথাক্রমে ধান ২৭ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪০ টাকা এবং গম ২৮ টাকা।