নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের সমালোচনা অবশ্যই হবে। তবে তা যদি দেশ বিধ্বংসী সমালোচনা হয়, সেটি কাম্য নয়।
রোববার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে দেশের ইতিবাচক দিক বহির্বিশ্বে তুলে ধরতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের সমালোচনা অবশ্যই হবে। তবে তা যদি দেশ বিধ্বংসী সমালোচনা হয়, সেটি কাম্য নয়। আর দেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কোনো নেতিবাচক খবর বাইরের দেশের গণমাধ্যম যত বড় করে প্রকাশ করে তার চেয়ে কয়েকগুণ বড় করে প্রকাশ করে দেশের গণমাধ্যম। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। আন্তর্জাতিক কোনো ভুঁইফোড় সংগঠন বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক খবর করলে দেশীয় গণমাধ্যম সেটি ফলাও করে প্রচার করে।
তিনি বলেন, সংবাদ অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেটি যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরতে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। তারেক রহমান তার এজেন্টদেরকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অপপ্রচার চালায়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নাই। দেশকে পজিটিভলি তুলে ধরুন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাবো, দেশকে পজিটিভলি তুলে ধরুন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা দেখবেন, কাশ্মীরে যখন পাকিস্তানের সৈন্যরা আক্রমণ করায় ভারতীয় সৈন্যরা হতাহত হলো, তখন সরকারি দল-বিরোধী দল সবাই একত্রিত হয় এবং তারা সরকারের পাশে থাকে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যখন পাশের দেশের সীমান্ত রক্ষীরা পালিয়ে আসে তখন বিএনপি নেতারা বলে- নতজানু সরকারের পররাষ্ট্রনীতির কারণে ওরা পালিয়ে এসেছে। ওদের দেশে গোলাগুলিতে মিয়ানমারের সৈন্যরা প্রাণ ভয়ে এদেশে পালিয়ে আসলো। এখানে পররাষ্ট্রনীতির সাথে কি সম্পর্ক? এই হচ্ছে বিএনপির বক্তব্য। দেশকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা বা দেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরাতে বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী সারাদিন ব্যস্ত।
তিনি বলেন, তাদের দলের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে বসে বসে তাদের পেইড এজেন্ট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এবং কিছু ফেইক পেজ, ভুঁইফোঁড় অনলাইন দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এগুলো দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তাই এগুলোর বিরুদ্ধে দেশের মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনার টিকা দেওয়া যখন শুরু করলাম। ১৩৫টা দেশের মধ্যে ১৩০টা দেশ যখন করোনার টিকা দেয়া শুরুই করতে পারেনি তখন বাংলাদেশের মানুষ টিকা পেয়েছে। আর তখন ‘এই টিকা কোনো কাজে আসবে না, এই টিকা দেয়া যাবে না বলে বিএনপি অপপ্রচার চালিয়েছে। তারা বললো, আগে মন্ত্রীরা টিকা নেক। তাই আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আগে টিকা নিলাম।
হাছান মাহমুদ বলেন, এখন আবার তারা বলে- ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা। কিন্তু ঠিকই তারা সন্ধ্যা বেলায় ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পিঁয়াজু খায়। তাদের বউরা ভারতীয় শাড়ি পরে। এই হচ্ছে তাদের অবস্থা।
আইআরএফ এর সভাপতি হাসান মাহামুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক সুজনের সঞ্চালনায় এসময় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম, সাংবাদিক নেতা ওমর ফারুক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।